বুধবার, ৬ই আগস্ট ২০২৫, ২২শে শ্রাবণ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


তিন আসামির খালাসের রায়ে শঙ্কায় শিশুটির মা


প্রকাশিত:
১৮ মে ২০২৫ ১১:৫৪

আপডেট:
৬ আগস্ট ২০২৫ ০৮:২৯

ছবি সংগৃহীত

মাগুরায় আলোচিত শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় তিন আসামি খালাস পাওয়ায় শঙ্কায় আছে শিশুটির পরিবার। যদিও প্রধান আসামি হিটু শেখের ফাঁসির আদেশে সন্তুষ্ট হয়েছেন বলে শনিবার (১৭ মে) বিকেলে জানান শিশুটির মা আয়েশা বেগম।

এছাড়া মামলায় অন্যান্য আসামি শিশুটির বোনের শাশুড়ি জাহেদা বেগম, বোন জামাই সজিব শেখ এবং সজিবের বড় ভাই রাতুল শেখকে খালাস দেওয়া হয়েছে। শনিবার (১৭ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান এ রায় ঘোষণা করেন।

রায় ঘোষণার পর শিশুটির মা আয়েশা বেগম বলেন, প্রধান আসামি হিটু শেখকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন এতে আমি সন্তুষ্ট হয়েছি। শুধু আমি কেন পুরো দেশবাসী সন্তুষ্ট হয়েছে। আর ৩ জন যে আসামি ছিল তাদের খালাস দিয়েছে। এরাতো বাঘ হয়ে বের হবে নে। আমরা তো এখন ভয়ে আছি। তারা কারাগার থেকে বের হয়ে আমি এবং আমার পরিবারকে হুমকি-ধামকি দিতে পারে। আমাদের ক্ষতি করতে পারে। তারা তো ভালো না। আমি আতঙ্কে আছি।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা মাগুরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলাউদ্দিন গত ১৩ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট জমা দিলে ২০ এপ্রিল মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান মামলাটি আমলে নিয়ে চার্জগঠনের জন্য ২৩ এপ্রিল তারিখ নির্ধারণ করেন। চার্জ গঠনের পর ২৭ এপ্রিল থেকে শুরু হয় মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ এবং ৭ মে ঢাকা মেডিকেলের দুই ডাক্তারের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। অভিযোগ গঠন বা বিচার শুরুর ২১ দিনের মাথায় আলোচিত এই মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হলো।

রায়ের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মকুল বলেন, মাগুরার চাঞ্চল্যকর আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। এ মামলায় প্রধান আসামি হিটু শেখের মৃত্যুদণ্ড এবং বাকি তিন আসামি খালাস পেয়েছেন। তিনজনকে কেন খালাস দেওয়া হয়েছে, সেটা পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর আমরা জানতে পারব। সেটা পর্যালোচনা করে উচ্চ আদালতে আপিলের বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। তবে এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় সংক্ষিপ্ত সময়ে রায়ের অন্যতম নজির।

মাগুরা লিগ্যাল এইড নিযুক্ত আসামিপক্ষের আইনজীবী সোহেল আহম্মেদ বলেন, চাঞ্চল্যকর আছিয়া হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে।রায়ে তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে, তাতে আমরা খুশি। তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আদালতে প্রমাণ হয়নি। প্রধান আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে পরিবার যদি উচ্চ আদালতে যেতে চায় আমি সহযোগিতা করব।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির মেয়ে একপেশে বিচার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, লিগ্যাল এইড থেকে নিযুক্ত উকিল আমাদের কথা আদালতে ভালোভাবে তুলে ধরেনি। আমরা কয়েকজন সাক্ষী দিতে চাইছিলাম। উকিল বলে, সাক্ষী দেওয়া যাবে না। আমার আব্বার ফাঁসি দিয়ে যদি দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়, হোক। কিন্তু যা হলো, তা একপেশে বিচার।

প্রসঙ্গত, মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রাম থেকে শহরের নিজনান্দুয়ালী এলাকায় বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় আট বছর বয়সী শিশুটি। ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টাও করা হয়। ৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ ঘটনার পর মাগুরাসহ সারাদেশের মানুষ প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরে ১৩ মার্চ দুপুরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়। সেদিন সন্ধ্যায় শিশুটির মরদেহ হেলিকপ্টারে করে মাগুরায় নেওয়া হয়। মাগুরা শহরের নোমানী ময়দানে প্রথম জানাজা ও পরে শ্রীপুর উপজেলার সব্দালপুর ইউনিয়নের সোনাইকুন্ডী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে স্থানীয় সোনাইকুন্ডী গোরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top