নানান আনুষ্ঠানিকতায় রাঙামাটিতে বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন
প্রকাশিত:
১১ মে ২০২৫ ১৩:২৬
আপডেট:
১২ মে ২০২৫ ১০:১৬

নানান অনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে রাঙামাটির বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে পালন করা হচ্ছে বুদ্ধ পূর্ণিমা। হিংসা-বিদ্বেষ ত্যাগ করে বুদ্ধের বাণীকে ধারণ করে সম্প্রীতিময় সহবস্থানের প্রত্যাশা পুণ্যার্থীদের। দেশ ও জাতি তথা জগতের সব প্রাণীর মঙ্গল প্রার্থনা করছেন এই পুণ্যময় দিনে।
বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে রোববার (১১ মে) ভোর হতেই বিভিন্ন পাড়া মহল্লা থেকে পুণ্যার্থীরা জড়ো হন রাঙামাটির বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারগুলোতে। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন শেষে নিজেকে সমর্পণ করেন বুদ্ধের চরণে। মনের সব নিবেদন নিয়ে বুদ্ধের কাছে করেন প্রার্থনা। এছাড়াও বুদ্ধ স্নান, বুদ্ধ পূজা, পঞ্চশীল, অষ্টশীল প্রার্থনা, বুদ্ধমূর্তি দানের পর সবাই যোগ দেন সমবেত প্রার্থনায়।
বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৗতম বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্বলাভ ও মহা পরিনির্বাণ লাভ করায় ত্রি-স্মৃতি বিজড়িত দিনটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে খুবই গুরত্বপূর্ণ ও পুণ্যময়। তাই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে এ দিনটি খুবই পূণ্যময় একটি দিন। এ দিন তারা নানা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করেন। নিজের পাশাপাশি জগতের সব প্রাণীর মঙ্গল কামনা করেন। এমন পূণ্যময় অনুষ্ঠানে ভক্তকূলের প্রার্থনা সব সম্প্রদায়ের মৈত্রীময় সহবস্থান।
শহরের আসামবস্তিস্থ বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহারেও ধর্মীয় সূত্রপাঠ প্রতিযোগিতা, কুইজ ও সংগীত প্রতিযোগিতাসহ নানা আয়োজনে বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপিত হচ্ছে। সকালে শহরের তবলছড়ি থেকে বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহার পর্যন্ত বৌদ্ধ ধর্মীয় মাঙ্গলিক শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মহামতি ভগবান বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ ও মহা পরিনির্বাণ নিয়ে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ, ভিক্ষু সংঘের পিণ্ডদান অনুষ্ঠিত হয়।
শহরের আনন্দ বিহারে আসা পুণ্যার্থী জেসিকা চাকমা বলেন, আজকের দিনটি আমাদের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন। এদিন ভগবান বুদ্ধ পৃথিবীতে জন্ম নেন, বুদ্ধত্ব লাভ করেন এবং এ দিনই মহা পরিনির্বাণ লাভ করেন। আজকের দিনে আমরা ভগবান বুদ্ধের কাছে আরাধনা করি, যাতে পৃথিবী থেকে সব দুঃখ, কষ্ট, অনাচার, হিংসা-বিদ্বেষ দূর হয়ে যায় এবং পৃথিবী শান্তিময় হয়ে ওঠে।
বিহারে আসা পূণ্যার্থী সোনালী বড়ুয়া বলেন, ভগবান বুদ্ধের কাছে আমাদের প্রার্থনা হলো মৈত্রীময় সহবস্থান। আমরা আমাদের পরিবার পরিজনের পাশাপাশি, দেশ ও জাতির মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করছি।
দেশ ও সকল প্রাণীর সুখ-শান্তি কামনা এবং মৈত্রীময় সহবস্থানের প্রত্যাশা করে বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ করুণাপাল থেরো বলেন, আজকের মহা পুণ্যময় দিনে ভগবান বুদ্ধের কাছে আমাদের প্রার্থনা, পৃথিবীতে যে অসহিষ্ণুতা ছড়িয়ে পড়েছে, এ সংঘাতময় পরিস্থিতি দ্রুত শেষ হোক। সবার মধ্যে মৈত্রীভাব ছড়িয়ে পড়ুক। জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক।
বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে ভোরে শুরু হওয়া নানা অনুষ্ঠানিকতা বিকেলে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে ধর্মগ্রন্থ পাঠ করে দলগত ধ্যানের মাধ্যমে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: