ব্রাজিলে শুরু হয়েছে COP30: জলবায়ু ন্যায়বিচারের দাবিতে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকা
প্রকাশিত:
১৩ নভেম্বর ২০২৫ ১০:৩০
আপডেট:
১৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৩:৩৮
ব্রাজিলের আমাজন অঞ্চলের শহর বেলেমে শুরু হয়েছে জাতিসংঘের ৩০তম জলবায়ু সম্মেলন, সংক্ষেপে COP30। এবারের সম্মেলনে বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণ, ন্যায্য জলবায়ু অর্থায়ন ও কার্বন নিরপেক্ষ ভবিষ্যৎ নিয়ে চলছে তীব্র আলোচনা। বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলো এই আলোচনায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, বিশেষ করে জলবায়ু ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে।
বাংলাদেশের পক্ষে সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সায়েদা রিজওয়ানা হাসান। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ব্রাজিলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে অভিযোজন ও কার্বন বাজার ব্যবস্থায়। তবে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, “কার্বন বাজার কখনোই ক্লাইমেট ফাইন্যান্সের বিকল্প হতে পারে না।” বাংলাদেশের মূল দাবি—জলবায়ু ক্ষতির ন্যায্য ক্ষতিপূরণ, উন্নয়নশীল দেশের জন্য অভিযোজন সহায়তা বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির সীমা ১.৫ ডিগ্রিতে ধরে রাখা।
বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপাল একত্র হয়ে এই সম্মেলনে একটি যৌথ অবস্থান তুলে ধরেছে, যেখানে “ক্লাইমেট জাস্টিস” বা জলবায়ু ন্যায়বিচারকে কেন্দ্রে রেখে ন্যায্য জ্বালানি পরিবর্তনের দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে সাতক্ষীরার দুই তরুণ প্রতিনিধি—নওশিন ইসলাম ও নূর আহমদ জিদান—উপকূলীয় অঞ্চলের বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরে আন্তর্জাতিক মহলে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
তবে সম্মেলনের আয়োজক দেশ ব্রাজিল নিজেই নানা সমস্যায় পড়েছে। বেলেমে হোটেল সংকট এতটাই তীব্র যে ব্রাজিল সরকার দরিদ্র দেশগুলোর প্রতিনিধিদের থাকার জন্য বিনামূল্যে ক্রুজ কেবিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি, আয়োজকদের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে অ্যামাজনে নতুন তেল অনুসন্ধান অনুমোদনের কারণে, যা জলবায়ু পরিবর্তন রোধের লক্ষ্যবিরোধী বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের জন্য এই COP30 অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দেশটি বিশ্বের অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল, যেখানে উপকূলীয় জনগোষ্ঠী প্রতিনিয়ত লবণাক্ততা ও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে এই সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ যদি উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঐক্যবদ্ধ অবস্থানকে শক্তিশালী করতে পারে, তবে ভবিষ্যতে জলবায়ু অর্থায়ন ও অভিযোজন ফান্ডে আরও বড় ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।
বিশ্বজুড়ে নজর এখন ব্রাজিলের বেলেমে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনের দিকে। উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন আর উন্নয়নশীল দেশগুলোর সহায়তার প্রশ্নে এবারও COP সম্মেলন কতটা কার্যকর হবে—তা সময়ই বলে দেবে।
সম্পর্কিত বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: