বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১


করোনা পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে : মির্জা ফখরুল


প্রকাশিত:
১৮ জুলাই ২০২১ ২২:৫৭

আপডেট:
২ মে ২০২৪ ২১:৪৪

ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসের টিকা সংগ্রহ নিয়ে সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সভা মনে করে যে বর্তমান করোনা পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে।

রবিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এসব অভিযোগ করেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'স্থায়ী কমিটির সভা মনে করে যে বর্তমান বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে। করোনা টিকা নিয়ে সরকার যে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে গোটা পরিস্থিতিকে লেজেগোবরে করে ফেলেছে। এখন পর্যন্ত ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট, চীনের সিনোফার্ম ও কোভ্যাক্স প্ল্যাটফর্ম থেকে মোট ১ কোটি ১৬ লাখ ৬২০ ডোজ টিকা সংগ্রহ করেছে।'

তিনি বলেন, 'কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘আকুল আহ্বান’ বিজ্ঞাপনে দেড় কোটি ডোজ টিকা সংগ্রহের কথা বলায় প্রমাণিত হয়েছে সরকার করোনার শুরুর প্রথম থেকেই জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে, টিকা মূল্য নিয়েও মিথ্যাচার করছে। অবিলম্বে টিকা সংগ্রহ ও বিতরণের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ জনগণের সামনে প্রকাশ করতে হবে।'

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'দেশের জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে হলে ২৬ কোটি ডোজ টিকা প্রয়োজন। গড়ে প্রতি মাসে এক কোটি টিকা দিলেও দুই বছর দুই মাস লাগবে। অথচ এখন পর্যন্ত টিকাপ্রাপ্তির কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য সরকার দিতে পারছে না অথবা টিকাপ্রাপ্তির উৎস সম্পর্কে কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছে না।'

তিনি বলেন, 'সরকারের নিজস্ব দুর্নীতিপরায়ণ মহলকে সহায়তা করার জন্যই টিকা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিতরণের ক্ষেত্রে সরকার সুনির্দিষ্ট কোনো রোডম্যাপ প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে। উপরন্তু মিথ্যাচারের মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। প্রবাসী শ্রমিকদের ক্ষেত্রেও একইভাবে প্রতারণা করা হচ্ছে। অযোগ্যতা ও দুর্নীতিপরায়ণতা এই ব্যর্থতার জন্য দায়ী। এসব দায় সরকারকেই বহন করতে হবে। শুধু মিথ্যাচার করে জনগণের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার সরকারের নেই।'

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারের লকডাউন লকডাউন খেলা আরও মর্মান্তিক তামাশা। প্রথমে লকডাউন, তারপরে কঠোর লকডাউন, পরে শিথিল লকডাউন ঈদের ১ দিন পর থেকে আরো কঠোর লকডাউন, শিল্প কলকারখানা বন্ধ ঘোষণা থেকে মনে হয়, সরকারি সিদ্ধান্তগুলো সবই পাবনার হেমায়েতপুর থেকে আসছে।”

তিনি বলেন, “এইসব পরিকল্পিত পদক্ষেপের কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের দিন আনে দিন খায়, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত মানুষ, হকার, ছোট ব্যবসায়ী, রিকশাশ্রমিক, ভ্যান শ্রমিক, মাঝি, বাইকের চালকরা, পরিবহন শ্রমিকরা। বিএনপির বারবার এসব মানুষের জন্য এককালীন ১৫ হাজার টাকা অনুদান প্রদানের আহ্বান জানিয়েছিল, কিন্তু সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি। বিএনপি আবারও দাবি জানাচ্ছে- এসব মানুষের জন্য ১৫ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হোক, ছোট ব্যবসায়ীদের পুঁজির ব্যবস্থা করা এবং দিন আনে দিন খায় মানুষের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হোক।”

দেশের জেলা হাসপাতালগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় করোনা বেড, অক্সিজেন, আইসিইউ বেড বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, 'আক্রান্ত রোগী ও স্বজনদের আহজারিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। গাছের তলায়, অ্যাম্বুল্যান্সে অথবা ভ্যানের ওপর রোগীর চিকিৎসার দৃশ্য কি মধ্য আয়ের বাংলাদেশ বা উন্নয়নের মডেল বাংলাদেশের ছবি দেখায়।'

করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য আবারও স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বন কর্মকর্তাদের অপসারণ করা উচিত বলে স্থায়ী কমিটির সভা মনে করে বলে জানান মহাসচিব।

এদিকে গত ১৩ জুলাই লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার বারঘড়ি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যুর ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বিএনপি মহাসচিব।


সম্পর্কিত বিষয়:

বিএনপি

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top