জামায়াত সেক্রেটারির হুঁশিয়ারি
পাঁচ দফা মেনে নিন, না হলে ১১ নভেম্বর ঢাকার চিত্র ভিন্ন হবে
প্রকাশিত:
৬ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:৪৭
আপডেট:
৬ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:৫০
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নভেম্বরে গণভোট ও জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারিসহ পাঁচ দফা দাবি মেনে নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। এর অন্যথা হলে আগামী ১১ নভেম্বর রাজধানী ঢাকার চিত্র ভিন্ন হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আপনারা আমাদের পাঁচ দফা দাবি মেনে নিয়ে জুলাই সনদের এই গণআকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন। তা না হলে ১১ নভেম্বর রাজধানী ঢাকার চিত্র ভিন্ন হবে ইনশাআল্লাহ। খুব দ্রুতই উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আমরা আশা করি।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মৎস্য ভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
এর আগে পাঁচ দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেন জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি রাজনৈতিক দলের নেতারা। স্মারকলিপি জমা দেওয়ার পর মৎস্য ভবনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে কথা বলেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
এ সময় মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আগামী ১১ নভেম্বর এই আটটি রাজনৈতিক দলের উদ্যোগে রাজধানীতে ডাকা মহাসমাবেশের খবর আপনারা পেয়েছেন। এর আগে আমরা আজ সরকারকে বলতে চাই, এই মহাসমাবেশে লক্ষ লক্ষ জনতার পদভারে ঢাকা মুখরিত হওয়ার আগে আপনারা আমাদের দাবি মেনে নিন।
প্রত্যেক রাজনৈতিক দলকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ১১ তারিখের সমাবেশ সফল করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা লিয়াজোঁ কমিটির পক্ষ থেকে যাবে।
এর আগে স্মারকলিপি প্রদান উপলক্ষ্যে রাজধানীর পল্টন মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের ১১ তারিখ ঢাকায় গণজমায়েতের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, আজকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে স্মারকলিপি দেওয়ার পরও যদি দাবি মানা না হয়, অবস্থার যদি উন্নতি না হয়, তাহলে আগামী ১১ তারিখ ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ কর্মসূচি। আগামী ১১ তারিখ ঢাকা মহানগরী হবে জনতার নগরী, দাবি আদায়ের ১১ তারিখ। লড়াই হবে। ‘লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’ বলে বক্তব্য শেষ করেন তিনি।
এদিকে, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ সকাল থেকে মতিঝিলের শাপলা চত্বর ও পল্টন মোড়ে জড়ো হতে থাকেন জামায়াতসহ অন্যান্য দলের কর্মী-সমর্থকরা। বেলা ১১টার পর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে পুরানা পল্টনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হন তারা। এখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য শেষে দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা নিয়ে রওনা হয় আট দল।
জামায়াত ছাড়া অন্য দলগুলো হলো- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।
আট দলের যেসব নেতা উপস্থিত ছিলেন তারা হলেন- জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আযাদ ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্মমহাসচিব ও ঢাকা উত্তরের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, খেলাফত মজসিলের নায়েবে আমির সাখাওয়াত হোসেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজি, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুসা বিন ইহজার, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদিক হাক্কানী, জাগপার মুখপাত্র প্রকৌশলী রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল হক।
তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে বা উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
সম্পর্কিত বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: