রুহুল কবির রিজভী
ইনডেমনিটি আইনের মাধ্যমে জ্বালানি খাতে চৌর্যবৃত্তির বৈধতা দেওয়া হয়েছে
প্রকাশিত:
১ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:৫৪
আপডেট:
১ নভেম্বর ২০২৫ ২৩:৩৬
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ইনডেমনিটি আইন করা হয়েছে। এখান থেকে যে টাকা আসবে, সেটি কীভাবে পাচার করা হবে তার বৈধতা দিতে এই ইনডেমনিটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। মূলত এই আইনের মাধ্যমে চৌর্যবৃত্তির আইনি বৈধতা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (১ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মোজাফফর চৌধুরী অডিটোরিয়ামে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) আয়োজিত ‘ক্যাব যুব সংসদ-২০২৫’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, জ্বালানি খাতে করা এই ইনডেমনিটি আইনটি বাতিল করতে হবে। যে সরকারই আসুক না কেন, এই কালো আইনটি অবশ্যই বাতিল করতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে দায়িত্ব নিয়ে প্রথম কাজ হিসেবে এই আইনটি বাতিল করবে।
রিজভী বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর আমাদের টিকে থাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধান উপদেষ্টা ‘থ্রি জিরো’র কথা বলেছেন, যেখানে কার্বন শূন্যের লক্ষ্য রয়েছে। সরকার কিছু উদ্যোগ নিলেও প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপের ঘাটতি রয়ে গেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার ৩১ দফা কর্মসূচিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। এ ছাড়া পাঁচ বছরে অন্তত ২৫ কোটি গাছ লাগানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। নদীর নাব্যতা রক্ষার বিষয়েও তার সুস্পষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে সূর্যের তাপ ও বায়ুপ্রবাহের পাশাপাশি বিকল্প উৎস খুঁজে বের করতে হবে। যারা এসব বিষয়ে অভিজ্ঞ, তাদের অংশগ্রহণে কার্যকর সমাধান বের করতে হবে। আমরা যেই রাজনৈতিক দলে থাকি না কেন, সবাই শেষ পর্যন্ত বলব– আমরা সবাই বাংলাদেশকে ভালোবাসি।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি ও সাবেক ডাকসু ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের ধরন পরিবর্তিত হচ্ছে। আমাদের সময়ে সেমিনার ছিল না, রাজনৈতিক দলগুলো শুধু মিছিল-মিটিং করত। এখন যে বিষয়গুলো আলোচনা হচ্ছে, সেগুলো নিয়ে আরও গভীর আলোচনা দরকার, যাতে সবাই সচেতন হয়। যেমন সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে আট মাস আলোচনা হয়েছে, মিটিং হয়েছে, এমনকি চায়ের দোকানেও আলোচনা হয়েছে। তেমনি জ্বালানি খাত নিয়েও বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র যতক্ষণ পর্যন্ত এ বিষয়ে আন্তরিক কমিটমেন্ট না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো সমাধান আসবে না। জ্ঞানের ভিত্তিতে জ্বালানির বিষয়টি একটি আন্দোলন, এটি বুঝতে হবে। বিশ্বের অনেক দেশ পরিবর্তন হয়েছে, আমাদেরও বদলাতে হবে। কিন্তু সমস্যা হলো যারা ক্ষমতায় যায়, তারা বদলায় না। ভোটের সময় নানা প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে সেসব ভুলে যায়। পরিবর্তন আনতে হলে তরুণদেরই এগিয়ে আসতে হবে, যেমন ১৯৫২ সাল থেকে দেশের ইতিহাসে তরুণরাই পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিয়েছে।
ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এসএম ফরহাদ বলেন, হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটেছে কিন্তু জ্বালানি খাতে তার তৈরি করা সিস্টেম এখনো রয়ে গেছে। শুধু নাগরিক সচেতনতা দিয়ে এ খাতের সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। নীতিনির্ধারকদেরও সচেতন হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আগামীতে যারা ক্ষমতায় আসবে, তাদের অবশ্যই জ্বালানি খাতের সংস্কার নিয়ে কথা বলতে হবে। যদি না বলে, তবে তরুণরাই তাদের ‘চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স’-এ রাখবে।
সম্পর্কিত বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: