দুদকের অভিযানে সত্যতা
নিম্নমানের কাগজে বই মুদ্রণে লুটপাট
প্রকাশিত:
৮ অক্টোবর ২০২৫ ১২:৪৭
আপডেট:
৯ অক্টোবর ২০২৫ ০৪:১৫

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর ক্ষেত্রে নিম্নমানের কাগজ ব্যবহার করে সরকারি অর্থ লুটপাট চলছে।
অভিযোগ উঠেছে যে, প্রেস মালিকদের একটি অসাধু চক্রের যোগসাজশে এই দুর্নীতি চলছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানে আবারও প্রায় একই ধরনের দুর্নীতির সত্যতা পাওয়া গেছে। এর আগেও বই ছাপার অনিয়ম নিয়ে দুদকের তদন্ত চলমান ছিল।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট অভিযান সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) আওতায় নিম্নমানের কাগজে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এনসিটিবি কার্যালয়ে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর পরিদর্শন করা হয় এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড থেকে প্রাসঙ্গিক রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের উপপরিচালক মো. আক্তারুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক পর্যালোচনায় টিম দেখতে পায়, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যবই মুদ্রণে নানা অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে। বিশেষ করে নিম্নমানের কাগজ ব্যবহার, মুদ্রণ মানের ঘাটতি, বাঁধাই ত্রুটি এবং কিছু মুদ্রণ প্রেসের মালিকদের সঙ্গে অসাধু যোগসাজশের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতের প্রাথমিক সত্যতা রয়েছে। সংগৃহীত রেকর্ডপত্রগুলো পর্যালোচনা করে এনফোর্সমেন্ট টিম শিগগিরই কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করবে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপাতে ব্যাপক দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে বেশির ভাগ মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান। দরপত্র না মেনে নিম্নমানের বই ছাপানোর কারণে এনসিটিবি প্রাথমিক স্তরে ৪৮ ও মাধ্যমিক স্তরের ২৯টি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানকে চিঠিও দিয়েছে। গত বছর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ১১৬টি প্রেস বই ছাপার কাজ পায়। এর মধ্যে মাধ্যমিক স্তরে ইন্সপেকশন এজেন্সির প্রতিবেদনে ২৯টি প্রেস নিম্নমানের বই দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এর বাইরে সৃষ্টি প্রিন্টার্স, কচুয়া প্রেস, অনন্যা প্রিন্টার্স, অটো প্রিন্টিং প্রেস, অগ্রণী প্রিন্টার্স, সরকার প্রিন্টার্স অ্যান্ড পাবলিকেশন এবং কর্ণফুলী প্রিন্টার্সসহ আরও কয়েকটি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিম্নমানের বই ছাপানোর অভিযোগ রয়েছে। মাধ্যমিকের স্তরে ২৯টি মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠান চলতি শিক্ষাবর্ষে মোট ১৫ লাখ ৬ হাজার ৯৪টি নিম্নমানের বই ছেপেছে বলে জানা গেছে।
এর আগে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সালের ‘কয়েকটি লটের’ পাঠ্যবই ছাপায় অনিয়মের অভিযোগে দুদক অভিযান পরিচালনা করেছিল। অভিযোগ ছিল ২০১৭ সালে কিছু লটের বই ছাপানোর ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন দরদাতা দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠানের দর প্রস্তাবকে বিধি-বহির্ভূতভাবে বাতিল করে উচ্চমূল্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতা ভারতীয় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ওই সময়ে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির বই মুদ্রণে ২৬টি লটের দরপত্রে অংশ নিয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়ার টারা টিপিএসের বাংলাদেশ প্রতিনিধি মেগাটেক জিএনবিডি ঢাকা।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: