শুক্রবার, ৩রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১


অক্সফোর্ডকে ধরাশায়ী

বাংলাদেশি ৫ ছাত্রীর হংকং জয়


প্রকাশিত:
৩০ আগস্ট ২০২০ ১৯:৩০

আপডেট:
৩১ আগস্ট ২০২০ ০৪:০৪

ছবি-সংগৃহীত

কলেজ পর্যায়ে পড়ুয়া পাঁচ কিশোরী। করোনা মহামারির কারণে সময় কাটছে চার দেয়ালের মধ্যেই। এ অবস্থাতেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ের স্বীকৃতি এনেছে তারা। হংকংভিত্তিক টোয়েন্টিফোর আওয়ার রেস নামে একটি যুব উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠানের সিডিং ক্যাম্পেইন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছে এই কিশোরী দল।

চূড়ান্ত পর্বে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি,ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইক,ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার মতো বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হারিয়ে বিজয়ী তারা। পুরস্কার হিসেবে হিসেবে ২০ হাজার হংকং ডলার বা প্রায় দুই লাখ টাকা জিতে নিয়েছে তারা।

দলের সদস্য সেবস্তী খন্দকার ও সেজাল রহমান ঢাকার সানবীমস স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। দ্য আগা খান স্কুলের ওই বর্ষের ছাত্রী রাঈদা সিদ্দিকী। আর সানিডেইল স্কুল থেকে এ লেভেল সম্পন্ন করেছে রাইয়ান খান। রামিশা কাবির হংকংয়ের এলপিসি ইউনাইটেড ওয়ার্ল্ড কলেজে পড়াশোনাকরছে।

রামিশা এই প্রতিযোগিতার ব্যাপারে শুরুতে তার বন্ধুদের জানায়। যে কোনো দেশের ১৫ থেকে ২৩ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারে। সেজন্য তারা আলাপ-আলোচনা করে ‘রিলিফ’ নামে প্রকল্পটি জমা দেয়। এই প্রতিযোগিতায় বিচারকদের পাশাপাশি সাধারণের ভোটও আমলে নিয়ে রায় দেওয়া হয়। ভোটাভুটির ধাপে উতরে যায় বাংলাদেশি কিশোরী দল।

প্রতিযোগিতার প্রথম ধাপে তারা ‘রিলিফ’ নামে প্রকল্পের প্রস্তাব জমা দেয় তারা। এতে পুরো ঢাকা শহরের নার্সারিগুলোকে অনলাইন মাধ্যমে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করেছে তারা। ক্রেতারা ঘরে বসেই অর্ডার করতে পারবেন, গাছ পৌঁছে যাবে বাড়িতে। গাছ ছাড়াও টব, সার, মাটিসহ বিভিন্ন উপকরণ মিলবে। এছাড়া মালিরও খোঁজ পাওয়া যাবে।

আন্তর্জাতিক এই প্রতিযোগিতায় তাদের প্রতিপক্ষ বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা থাকলেও বাড়তি দুশ্চিন্তা করেনি তারা। প্রত্যেক সদস্য সেরাটা দেওয়ায় সাফল্য এসেছে বলে মনে করে রামিশা। আর সেজালের মতে,এই অর্জনের পেছনে তাদের পরিবারেরও বড় ভূমিকা রয়েছে।

তিনি বলেন,বিজনেস মডেল বা মার্কেটিং বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের তেমন অভিজ্ঞতা নেই। পরিবারের বড়দের কাছ থেকে এ বিষয়ে সহায়তা নিয়েছি। আর রাইয়ান জানাল, এই প্রকল্প নিয়ে গত মার্চে ‘প্রাইভেসি হ্যাকস ২০’ নামের একটি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল তারা। সে সময়ই মূলত কোডিং,ওয়েব ডিজাইন শেখা।

দেশীয় হ্যাকাথনে বেস্ট কমিউনিটি অ্যান্ড বেস্ট ভিজযুয়াল ডিজাইন অ্যাওয়ার্ড জিতেছিল দলটি। পরে হংকংয়ে গত জুনে আবেদন করার পর ১৮ আগস্ট বিজয়ীর খেতাব জেতেন তারা। এটি বাংলাদেশ থেকে উপস্থাপিত একমাত্র প্রকল্প ছিল।

আরেক সদস্য রাঈদা জানান,পুরস্কারের অর্থ দিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার কাজ করছেন। আগামী বছরের শুরুতে কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হবে। সবার সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতে এই কার্যক্রম সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব বলে মনে করেন তারা।

এ ধরনের প্রকল্প নিয়ে কাজ করার বিষয়ে সেবস্তী বলল, ‘নগরায়ণের প্রভাবে শহর থেকে সবুজের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। এমন বাস্তবতায় যদি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে ঘরে গাছ পৌঁছে দিতে পারি,তাহলে অনেকেই গাছ লাগাতে আগ্রহী হবেন।’

তাদের ভাবনাটা বিচারকদের পছন্দ হয়। প্রথম ধাপেই নির্বাচিত সেরা ১০ প্রকল্পে স্থান করে নেয় রিলিফ। পরে নিয়মানুষায়ী ১০টি দল প্রায় ছয় থেকে আট সপ্তাহব্যাপী ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে। এর মধ্যে ভাবনা আরও ঘযামাজা করতে আয়োজক সংস্থা প্রতিযোগীদের নানা পরামর্শ দেয়। এরমধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করেন রাঈদা দা, সেজাল, সেবস্তী ও রামিশা।

অন্যদিকে গ্রাফিক্স ও ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ করেন রাইয়ান। প্রকল্পের জন্য ডেমো ওয়েবসাইট বানায় তারা। পরে সব গুছিয়ে ভার্চুয়াল প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে বিচারকদের সামনে প্রকল্পটি তুলে ধরেন বাংলাদেশের মেয়েরা।


সম্পর্কিত বিষয়:

করোনা ভাইরাস

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top