খাবার তালিকায় রাখুন ৫ সুপারফুড
 প্রকাশিত: 
                                                ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২১:০৭
 আপডেট:
 ১ নভেম্বর ২০২৫ ০৫:৫৫
                                                
 
                                        আধুনিক যুগে সকলেই খুব ব্যস্ত। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে সঠিক এবং পুষ্টিকর খাদ্যও গ্রহণ করা হয়ে ওঠে না সিংহভাগ মানুষের। এছাড়া স্ট্রেস বা উদ্বেগজনিত সমস্যায় এখন সকলেই ভোগেন। এই সকল কারণে খুব কমবয়স থেকেই বহু মানুষ থাইরয়েডের অসুখে ভুগছেন। অথচ পুষ্টিকর খাদ্য নির্বাচনের মাধ্যমে প্রত্যেক রোগীই থাইরয়েডের বাড়বাড়ন্ত রোধ করতে পারেন। প্রশ্ন হল থাইরয়েড কী?
থাইরয়েড একটি অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি। গ্রন্থিটি দেখতে অনেকটা প্রজাপতির মতো। থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের অবস্থান মানুষের গলার মাঝামাঝি জায়গায়। শরীরের বিপাকক্রিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে গ্ল্যান্ডটি থেকে নিঃসৃত হর্মোনের। অসংযমী জীবন ও নিম্নমানের খাদ্যাভ্যাসের কারণে গ্ল্যান্ডটির কাজে বিস্তর গোলযোগ তৈরি হয়। বর্তমানে তাই তরুণ-তরুণীরাও থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন।
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, থাইরয়েডের অসুখ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বিশেষ কিছু খাদ্য। নিয়মিত খাদ্যগুলি সেবন করলে হাইপার হোক বা হাইপো- দুই ধরনের থাইরয়েডের সমস্যাতেই মেলে আশ্চর্য সমাধান। দেখা যাক সেগুলি কী কী?
১। আমলকী
একটি কমলালেবুর তুলনায় ৮ গুণ এবং একটি ডালিমের তুলনায় ১৭ গুণ বেশি ভিটামিন সি থাকে একটি আমলকীতে। অতি নিরীহদর্শন আমলকী কিন্তু 'সুপারফুড' উপাধি পাওয়ার যোগ্য। চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল রাখতে, চুলে গোড়া শক্ত করতে, খুসকি প্রতিরোধে, চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন অব্যাহত রাখতে আমলকীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। মনে রাখতে হবে থাইরয়েডের সমস্যায় কিন্তু মারাত্মকভাবে চুল ঝরে যায়। চুলের এই ধরনের সমস্যার সমাধান করতে পারে আমলকী। এছাড়া থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের সমস্যাও প্রাকৃতিকভাবে দূর করে আমলকীর নানা ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
২। নারকেল
থাইরয়েডের রোগীর জন্য নারকেল অতিপ্রয়োজনীয় ফল। এমনটাই জানাচ্ছেন আয়ুর্বেদ গবেষকরা। এমনকি ফলের শাঁস হোক বা তেল- নারকেল সবরকমভাবে ব্যবহারেই সুফল মেলে। মন্থর বিপাকক্রিয়ায় গতি আনে নারকেল। নারকেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মিডিয়াম চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড (এমসিএফএ) এবং মিডিয়াম চেইন ট্রাইগ্লিসারাইডস (এমটিসিএস) যা থাইরয়েড গ্ল্যান্ড এর নানা গণ্ডগোল স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে।
৩। কুমড়ার বীজ
গ্রামাঞ্চলে কুমড়ার বীজ আলাদা করে সংগ্রহ করে তা শুকিয়ে তরকারিতে ব্যবহারের রীতি আছে। কোনও কোনও বাড়িয়ে বীজ বেটে বড়া করেও খাওয়া হয়। তবে শহরে কুমড়ার বীজ ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়। অথচ ডায়েটিশিয়ান ও এবং আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জিঙ্ক নামে অতিপ্রয়োজনীয় খনিজটির অতুলনীয় উৎস কুমড়া বীজ। এতে রয়েছে অন্যান্য ভিটামিন এবং খনিজও। জিঙ্ক থাইরয়েড নিঃসৃত হর্মোনের সংশ্লেষে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত কুমড়া বীজ সেবনে শরীরে প্রয়োজনীয় জিঙ্কের জোগান বজায় থাকে। ফলে থাইরয়েড গ্রন্থি দ্বারা ক্ষরিত হর্মোনের মাত্রায় ভারসাম্য আসে।
৪। ব্রাজিল নাট
থাইরয়েড হরমোনের বিপাকের জন্য দরকার হয় সেলেনিয়াম নামে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট এর। টি-৩ এবং টি-৪ হরমোনের রূপান্তরের হওয়ার জন্য দরকার পড়ে সেলেনিয়াম এর। এই অতিপ্রয়োজনীয় খনিজ যথেষ্ট মাত্রায় পাওয়া যায় ব্রাজিল নাট এ। বস্তুত প্রতিদিন তিনটি করে ব্রাজিল নাট খেলেই শরীরের প্রতিদিনের সেলেনিয়ামের চাহিদার অনেকখানিই পূরণ হয়। এমনটাই জানাচ্ছেন আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা।
৫। মুগ
মুগে থাকে উপযুক্ত মাত্রায় প্রোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যৌগিক শর্করা, ভিটামিন এবং খনিজ। থাকে যথেষ্ট ফাইবার। থাইরয়েডের সমস্যার অন্যতম উপসর্গ হল কোষ্ঠকাঠিন্য। খোসাশুদ্ধ মুগে প্রচুর ফাইবার থাকায় তা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে পারে। এছাড়া মুগে থাকে প্রচুর পরিমাণে আয়োডিন যা থাইরয়েড হর্মোনের ভারসাম্যের গণ্ডগোল দূর করে। মুগ হজম করাও সহজ। এছাড়া মেটবলিক রেট কমে গেলে তা বাড়াতে সাহায্য করে খাদ্যটি। সুতরাং নানাভাবে খাদ্যে মুগ যোগ করা যায়। তবে সবচাইতে ভালো হয় প্রতিদিন অঙ্কুরিত মুগ খেতে পারলে।



 
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                            
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: