এই ৫ সবজি ফিতাকৃমির আঁতুড়ঘর, খাওয়ার আগে সাবধান!
প্রকাশিত:
২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৫৫
আপডেট:
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:০৪

সুস্থ থাকতে খাদ্যতালিকায় শাক-সবজি রাখার বিকল্প নেই। তবে তা ঠিকমতো পরিষ্কার করা হচ্ছে কিনা সেটিও খেয়াল রাখতে হবে। জানলে অবাক হবেন, আমাদের রোজকার খাদ্যতালিকায় থাকা কিছু সবজিই ফিতা কৃমির আবাস স্থল। ঠিকমতো পরিষ্কার করা না হলে এসব সবজির মাধ্যমে কৃমি শরীরে প্রবেশ করতে পারে। যা ভয়ানক ব্যাধির কারণ হতে পারে।
‘অনলি মাই হেলথ’-এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী কৃমির সমস্যায় ভয়ঙ্কর বিপদ ঘনিয়ে আসে। এটি অসহ্য মাথা যন্ত্রণা, বমির কারণ হতে পারে। কেউ কেউ আচমকা অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। এই কৃমি বা ডিম বৃহদান্ত্রে গেলে শুরু হয় প্রদাহ। যা পেটের সমস্যার কারণ হতে পারে। ফুলে যেতে পারে হাত-পা সহ পুরো শরীর।
কোন কোন সবজিতে ফিতা কৃমি থাকে? চলুন জেনে নিই-
বাঁধাকপি
বাঁধাকপির আনাচেকানাচে বাসা বেঁধে থাকে ফিতা কৃমি। এই সবজিতে বিপুল পরিমাণে বংশবিস্তার করে এই প্রাণী। বাঁধাকপি ভালোভাবে না ধুলে খাবারের সঙ্গে কৃমির ডিম পেটে চলে যাবে। এরপর তা মস্তিষ্কেও পৌঁছে যেতে পারে। তাই বাঁধাকপি ঠিকমতো ধুয়ে, পরিষ্কার করে, এরপর রান্না করুন।
কচু পাতা
কচু পাতায় ফিতাকৃমির ডিম লুকিয়ে থাকতে পারে। যা শরীরে প্রবেশ করলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। বিশেষত মান কচু ও কচুর লতি রান্নার আগে ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়া জরুরি। কারণ ঠিকমতো পরিষ্কার না করলে এই পরজীবী শরীরে প্রবেশ করে। যা থেকে পেটের সমস্যা, বমি এমনকি মস্তিষ্কের গুরুতর অসুখও দেখা দিতে পারে। কচু পাতার যেকোনো পদ খাওয়ার আগে সতর্ক থাকুন এবং রান্নার আগে পর্যাপ্ত পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
বেগুন
বেগুনের বীজে ফিতাকৃমির ডিম লুকিয়ে থাকতে পারে। এটি শরীরে প্রবেশ করলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। রান্নার আগে বেগুন ভালোভাবে ধুয়ে নিন। বিশেষ করে কাঁচা অবস্থায় বেগুন কাটা হলে বীজের ভেতর লুকিয়ে থাকা পরজীবী সহজেই ছড়িয়ে যেতে পারে। বেগুন ভালোভাবে ধোয়া ও রান্না না করলে এটি পেটে প্রবেশ করে মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বেগুন কাটার আগে এবং রান্নার সময় সতর্ক থাকুন।
ক্যাপসিকাম
ক্যাপসিকামের বীজ এবং এর অভ্যন্তরীণ অংশে ফিতাকৃমির ডিম থাকতে পারে। সঠিকভাবে না ধুলে শরীরে এটি প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটাতে পারে। রান্নার আগে ক্যাপসিকামের বীজ বের করে ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়া জরুরি। ক্যাপসিকাম কাঁচা না খেয়ে রান্না করে খাওয়াই নিরাপদ।
সতর্ক না হলে পরজীবী সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যায়, যা গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। তাই প্রতিটি সবজি ভালোভাবে পরিষ্কার করে রান্না করাই সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি।
পটল
পটলের বীজেও ফিতাকৃমির ডিম থাকতে পারে। বিশেষত কৃত্রিম সার বা রাসায়নিক ব্যবহার করে উৎপাদিত পটল এড়িয়ে চলুন। রান্নার আগে পটল ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এই সবজির বীজ না খাওয়াই নিরাপদ। সতর্ক না হলে এটি সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, যা পেটের অসুখ, মাথা ব্যথা এবং অন্যান্য জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই পটল খাওয়ার আগে সঠিকভাবে পরিষ্কার করে রান্না করুন।
ফিতাকৃমি মস্তিষ্কে পৌঁছে গেলে সিস্টিসারকোসিস নামক ভয়ংকর রোগ হতে পারে। এটি তীব্র মাথাব্যথা, পেশির ফোলা ভাব, খিঁচুনি, এমনকি ব্রেন ড্যামেজের কারণ হতে পারে। সংক্রমণ দীর্ঘস্থায়ী হলে স্নায়ুর ক্ষতি হতে পারে, যা মৃত্যুর কারণও হতে পারে। এজন্য কাঁচা বা অপরিষ্কার সবজি খাওয়ার আগে ভালোভাবে ধুয়ে ও রান্না করে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: