সুব্রত বাইন-মোল্লা মাসুদসহ গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা
প্রকাশিত:
২৮ মে ২০২৫ ১৪:৪১
আপডেট:
৩০ মে ২০২৫ ০২:৪১

সেনাবাহিনীর দীর্ঘদিনের গোয়েন্দা তৎপরতা এবং পরিকল্পনায় গ্রেপ্তার হওয়া দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী, আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদসহ শ্যুটার আরাফাত ও শরীফের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে নতুন মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ মে) ভোর ৫টা থেকে শুরু হওয়া কুষ্টিয়া ও ঢাকার হাতিরঝিলে পরিচালিত সাঁড়াশি অভিযানে ৪৬ স্বতন্ত্র ইনফেন্ট্রি ব্রিগেডের একটি ইউনিট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সফলভাবে দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং তাদের দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে। পরে মঙ্গলবার রাতেই তাদের রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় সোপর্দ করা হয়। সেখান থেকে তাদের নিরাপত্তাজনিত কারণে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
রাতেই অস্ত্র আইনে হাতিরঝিল থানায় পুলিশ বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার চারজনকে রিমান্ড চেয়ে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল জোনের সরকারি কমিশনার (এসি) রব্বানী হোসেন।
তিনি বলেন, এব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। বিকেলে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চাওয়া হবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট পরবর্তী রাজধানীতে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ।
এর আগে মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলে সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিআর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সামি-উদ-দৌলা চৌধুরী বলেন, মঙ্গলবার ভোর ৫টা থেকে শুরু হওয়া কুষ্টিয়া ও ঢাকার হাতিরঝিলে পরিচালিত সাঁড়াশি অভিযানে দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং তাদের দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৫টি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩ রাউন্ড গুলি এবং ১ টি স্যাটেলাইট ফোন।
কুষ্টিয়া সদরের সোনার বাংলা রোডে ভোর সোয়া ৫টায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী ও আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদকে। পরে তাদের দেওয়া তথ্য মতে ঢাকার হাতিরঝিল এলাকায় সকাল ৭টায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় শ্যুটার আরাফাত ও গাড়িচালক শরীফ। আরাফাত ও গাড়িচালক শরীফ সুব্রত বাইনের সহযোগী।
কর্নেল সামি-উদ-দৌলা চৌধুরী বলেন, এই চক্রটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হত্যা, চাঁদাবাজি এবং নাশকতা চালিয়ে আসছিল। সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ হলো তালিকাভুক্ত ২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসী দলের অন্যতম নেতা এবং সেভেন স্টার চক্রের মূল পরিকল্পনাকারী। এ অভিযান ছিল দীর্ঘদিনের গোয়েন্দা তৎপরতা এবং পরিকল্পনার ফসল। অপারেশনটি অত্যন্ত সুনিপুণভাবে ক্ষয়ক্ষতি বা সংঘর্ষ ছাড়াই পরিচালিত হয় যা আমাদের বাহিনীর পেশাদারিত্ব এবং রাষ্ট্রের প্রতি দায়বদ্ধতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ সমন্বয় ও সহায়তা দিয়েছে সেনা সদরের সামরিক অপারেশন পরিদপ্তর, ৫৫ পদাতিক ডিভিশন, ১৪ স্বতন্ত্র ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেড, ৭১ মেকানাইজ ব্রিগেড ও এনএসআই।
আইএসপিআর পরিচালক জনগণের উদ্দেশে বলেন, যেকোনো ধরনের সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড কিংবা সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত তথ্য অনুগ্রহ করে নিকটস্থ সেনাক্যাম্প অথবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করুন। আমরা আবারও দৃঢ়ভাবে জানাতে চাই—সেনাবাহিনী প্রধানের সুস্পষ্ট নির্দেশনার আলোকে, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং জনগণের জানমালের সুরক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুত ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: