বাংলাদেশের সীমান্তঘেঁসে বসবাসকারী আদিবাসীদের অস্ত্রের লাইসেন্স দেবে ভারত
প্রকাশিত:
৭ আগস্ট ২০২৫ ১৭:৪৪
আপডেট:
৭ আগস্ট ২০২৫ ২০:৪৫

বাংলাদেশের সীমান্তঘেঁসে বসবাসকারী আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিজেপি শাসিত ভারতের আসাম সরকার। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার এই ঘোষণায় ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে রাজ্যের মুসলিমদের মাঝে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
ভারতে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন অত্যন্ত কঠোর হলেও মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বুধবার (৬ আগস্ট) একটি ওয়েবসাইট চালুর ঘোষণা দিয়েছেন। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে রাজ্যের যেসব আদিবাসী জনগোষ্ঠী নিজেদের জীবনের জন্য হুমকি অনুভব করেন এবং যারা সংবেদনশীল এলাকায় বসবাস করেন, তারা অস্ত্রের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
তবে হঠাৎ করে সবার জন্য অস্ত্রের লাইসেন্স উন্মুক্ত করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধীদলীয় নেতারা।
এক্স-পোস্টে রাজ্যের বিরোধী দল কংগ্রেসের আইনপ্রণেতা গৌরব গগৈ বলেছেন, রাজ্য সরকারের অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার এই উদ্যোগের কারণে গ্যাং সহিংসতা ও ব্যক্তিগত প্রতিশোধমূলক অপরাধ বৃদ্ধি পাবে। এটি সুশাসন নয়, বরং আইনহীনতার দিকে এক বিপজ্জনক পশ্চাৎগামী পদক্ষেপ।
এই ঘোষণা দেওয়ার আগে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছিলেন, অসমীয়া ভাষাভাষী জনগণ বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে, এমনকি নিজেদের গ্রামেও হামলার হুমকির মুখোমুখি হয়েছেন।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রায় ৩ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার রাজ্য আসাম জাতিগত, ভাষাগত ও ধর্মীয় দিক থেকে বিভাজিত এবং বিগত কয়েক দশকে বহু রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সাক্ষী হয়েছে।
২০১১ সালের সর্বশেষ জাতীয় আদমশুমারি অনুযায়ী, এই রাজ্যের প্রায় ৩৫ শতাংশ মানুষ মুসলিম; যাদের বেশিরভাগই বাংলাভাষী, বাকিরা হিন্দু ধর্মাবলম্বী।
ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বিজেপি'র নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মার পৃথক অভিযানের মধ্যে রয়েছে ব্যাপক উচ্ছেদ - যাদের তিনি ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী কিংবা সন্দেহভাজন নাগরিক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এই পদক্ষেপকে ব্যাপকভাবে বাংলা ভাষাভাষী মুসলমানদের নিশানা করেই নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের মতো যাদের মাতৃভাষা বাংলা। তবে অনেক জাতিগত বাঙালিই আসামের বহু পুরোনো বাসিন্দা ও তারা ভারতীয় নাগরিক। এমনকি ১৯৪৭ সালে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পতনের সময় বাংলাদেশ আলাদা হয়ে যাওয়ার অনেক আগে থেকেই তাদের শিকড় আসামে রয়ে গেছে।
এর আগে ২০১৯ সালে ভারতের বিতর্কিত জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) আইন চালু করা প্রথম রাজ্য আসাম। নাগরিকত্ব যাচাইয়ের এই প্রক্রিয়া রাজ্যে চালু করার পর প্রায় ২০ লাখ মানুষ নাগরিকত্বের তালিকা থেকে বাদ পড়েন, যাদের অনেকেই মুসলমান।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: