রবিবার, ২৭শে জুলাই ২০২৫, ১২ই শ্রাবণ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


যুদ্ধবিরতির আহ্বান সত্ত্বেও নিহত বাড়ছে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ায়


প্রকাশিত:
২৬ জুলাই ২০২৫ ১৬:৩০

আপডেট:
২৭ জুলাই ২০২৫ ১১:০২

ছবি সংগৃহীত

কম্বোডিয়া ইতোমধ্যে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে; থাইল্যান্ড সরাসরি আহ্বান না জানালেও দেশটির কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তারা দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের মধ্যস্থতা মেনে নেবেন।

কিন্তু তা সত্ত্বেও দুই দেশের মধ্যকার সংঘাত তো থামছেই না, উপরন্তু বাড়ছে নিহত ও আহতের সংখ্যা। বার্তাসংস্থা এএফপির তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় ভোরবেলায় সংঘাত শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ায় নিহত হয়েছেন মোট ৩৩ জন এবং আহত হয়েছেন ১৩০ জনেরও বেশি। নিহত-আহতদের মধ্যে সামরিক এবং বেসামরিক উভয়েই আছেন।

নিহত ৩৩ জনের মধ্যে ১৩ জন কম্বোডিয়ার নাগরিক বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এই ১৩ জনের মধ্যে ৮ জন বেসামরিক এবং ৫ জন সেনাবাহিনীর সদস্য। এছাড়া থাই সেনাবাহিনীর গুলি ও গোলার আঘাতে আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে ৭১ জন কম্বোডীয়।

নিহত বাকি ২০ জন থাইল্যান্ডের নাগরিক। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই ২০ জনের মধ্যে ১৪ জন বেসামরিক এবং ৬ জন সেনাবাহিনীর সদস্য।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সীমান্ত নিয়ে প্রায় শতবর্ষব্যাপী দ্বন্দ্বের জেরে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ বোমারু বিমান, গোলাবারুদ, যুদ্ধজাহাজ এবং ট্যাংক নিয়ে সংঘাতে রীতিমতো ঝাঁপিয়ে পড়েছে।

প্রসঙ্গত, এমারেল্ড ট্রায়াঙ্গল বা পান্না ত্রিভুজ নামের একটি ভূখণ্ড নিয়ে ১১৮ বছর ধরে দ্বন্দ্ব চলছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে। থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও লাওসের সীমানা মিলিত হয়েছে পান্না ত্রিভুজে। প্রাচীন মন্দির ও ধর্মীয় স্থাপনাসমৃদ্ধ পান্না ত্রিভুজকে থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া উভয়েই নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে।

এ সংকটের সূত্রপাত গত শতকের প্রথম দিকে। সে সময় ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে ছিল কম্বোডিয়া। ১৯০৭ সালে কম্বোডিয়ার একটি মানচিত্র প্রকাশ করে ফ্রান্স, সেখানে পান্না ত্রিভূজকে কম্বোডীয় ভূখণ্ড হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। থাইল্যান্ড সেই সময়েই এর প্রতিবাদ জানিয়েছিল।

পরে ১৯৫৩ সালের ৯ নভেম্বর ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে কম্বোডিয়া। কিন্তু স্বাধীনতার পরও কম্বোডিয়ার মানচিত্র অপরিবর্তিতই থেকে যায়। ফলে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ক আর স্বাভাবিক হয়নি দেশটির।

দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে সীমান্ত সংঘাতের পর ১৫ বছর আগে যুদ্ধবিরতিতে গিয়েছিল দুই দেশ। কিন্তু গত মে মাসে কম্বোডিয়ার এক সেনা থাই সীমান্তের কাছে নিহত হওয়ার পর ফের উসকে ওঠে উত্তেজনা।

গত সপ্তাহে বুধবার কম্বোডিয়া সীমান্তের কাছে ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে এক থাই সেনা গুরুতর আহত হন। তারপর বৃহস্পতিবার সকালে কম্বোডিয়ার দুই সেনা স্থাপনায় বিমান অভিযান চালায় থাইল্যান্ড।

সেই হামলার জবাবে কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী থাই প্রদেশ বান নাম ইয়েনে রকেট হামলা চালায় কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনী। তারপর থেকেই পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে দুই দেশের মধ্যে।

মালয়েশিয়ার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের চেয়ারম্যান আনোয়ার ইব্রাহিম থাইল্যান্ড ও কম্বোয়িাকে সংঘাত পরিহার করে সংলাপ ও কূটনীতির ভিত্তিতে নিজেদের বিরোধ মিটিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তার আহ্বানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে উভয় দেশ। কিন্তু তারপরও সংঘাত থামছে না।

সূত্র : এএফপি


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top