মিয়ানমারে মঠে জান্তার বিমান হামলায় নিহত ২০
প্রকাশিত:
১২ জুলাই ২০২৫ ১৬:২৭
আপডেট:
১২ জুলাই ২০২৫ ২৩:০২

মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় স্যাগাইংয়ের একটি মঠে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় ২০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে বলে শনিবার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন সামরিক জান্তা-বিরোধী এক যোদ্ধা ও স্থানীয় একজন বাসিন্দা।
২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী উৎখাত করার পর থেকেই দেশটি গৃহযুদ্ধে জর্জরিত। দীর্ঘ এই সংঘাতে দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় স্যাগাইং অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। সেখানকার সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে লক্ষ্য করে প্রায়ই বিমান হামলা পরিচালনা করছে জান্তা বাহিনী।
স্যাগাইংয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জান্তা-বিরোধী যোদ্ধা বলেছেন, শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ১টার দিকে স্যাগাইংয়ের লিন তা লু গ্রামের একটি বৌদ্ধ মঠে অবস্থান করা বাস্তুচ্যুত লোকজনকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে সামরিক জান্তা।
এএফপিকে তিনি বলেন, হামলায় তিন শিশুসহ কমপক্ষে ২২ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া দুজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
জান্তা-বিরোধী ওই যোদ্ধা বলেন, লোকজন বৌদ্ধ মঠকে নিরাপদ ভেবে সেখানে অবস্থান করছিলেন। কিন্তু তাদের ওপর বোমা হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলার বিষয়ে মন্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলেও জান্তা বাহিনীর মুখপাত্র জ্য মিন তুন তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে এএফপি।
সামরিক বাহিনীর হামলায় মঠের একটি হল পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে বলে স্থানীয় এক বাসিন্দা নিশ্চিত করেছেন। তিনি ভোরের দিকে কয়েকজনের মরদেহ গাড়িতে তুলে নিয়ে যেতে দেখেছেন বলেও জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, হামলায় নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করার কাজে সহায়তা করার জন্য তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে ছবি তুলছিলেন। এ সময় তিনি সেখানে ২২ জনের মরদেহ গণনা করেন বলে জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বাসিন্দা বলেছেন, ‘‘অনেকের মাথায় আঘাতের ক্ষত রয়েছে। এছাড়া অনেকের মরদেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। এই দৃশ্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক।
চলতি বছরের মার্চে স্যাগাইং অঞ্চলে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী এক ভূমিকম্প আঘাত হানে। ওই ভূমিকম্পে সেখানে প্রায় ৩ হাজার ৮০০ মানুষ নিহত হন। এছাড়া গৃহহীন হয়ে পড়েন আরও কয়েক হাজার মানুষ।
ভূমিকম্পের পর জান্তা ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি অঘোষিত যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হয়েছিল। কিন্তু পর্যবেক্ষকরা বলছেন, যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর পরও ওই অঞ্চলে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলা ও সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। গত মে মাসে স্যাগাইং অঞ্চলের ওয়ে থেইন কুইন গ্রামের একটি স্কুলে বিমান হামলায় দুই শিক্ষকসহ অন্তত ২০ শিক্ষার্থী নিহত হন।
সূত্র: এএফপি।
এসএন /সীমা
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: