কাশ্মিরে নিরাপত্তায় এবার সাবেক সেনা সদস্যদের নামাচ্ছে ভারত
প্রকাশিত:
১৮ মে ২০২৫ ১৫:০২
আপডেট:
১৮ মে ২০২৫ ২০:২৭

টানা বেশ কয়েকদিনের হামলা, পাল্টা হামলা ও উত্তেজনার পর সম্প্রতি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে ভারত ও পাকিস্তান। এরপর উভয় দেশের সামরিক কর্মকর্তারা নিয়মিত একে-অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং যুদ্ধবিরতির মেয়াদও বাড়াচ্ছেন।
এমন অবস্থায় নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মিরে নিরাপত্তা রক্ষায় এবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্যদের নিয়োজিত করতে চলেছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। শনিবার (১৭ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, কাশ্মিরে নিরাপত্তা জোরদারে এবার সাবেক সেনাদের মাঠে নামাচ্ছে ভারত সরকার। গত সপ্তাহে পাকিস্তানের সঙ্গে হওয়া যুদ্ধবিরতির পর শনিবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।
এর আগে গত মাসে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার জেরে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। ভারত এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করে। পরে উভয় দেশের সংঘর্ষে অন্তত ৭০ জনের প্রাণহানি ঘটে।
জম্মু ও কাশ্মির প্রশাসনের এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কেন্দ্রশাসিত এই অঞ্চলটির গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর নিরাপত্তায় সাবেক সেনা সদস্যদের কাজে লাগানোর প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সরকারি তথ্যমতে, প্রায় ৪ হাজার সাবেক সেনা সদস্যকে নন-কমব্যাট্যান্ট স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৩৫ জনের কাছে লাইসেন্সধারী ব্যক্তিগত অস্ত্র রয়েছে। সরকার বলছে, স্থানীয় পর্যায়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে দ্রুত ও কার্যকর প্রতিক্রিয়া জানাতে এই উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
এএফপি বলছে, ভারতশাসিত কাশ্মিরে সাবেক সেনা সদস্যরা মূলত “স্ট্যাটিক গার্ড” হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের উপস্থিতি প্রতিরোধমূলক ভূমিকা রাখবে এবং স্থানীয়ভাবে নিরাপত্তা সমন্বয়ও বাড়াবে বলেও মনে করছে প্রশাসন।
অবশ্য ভারতশাসিত কাশ্মিরে ইতোমধ্যে প্রায় ৫ লাখ ভারতীয় সেনা মোতায়েন রয়েছে। অঞ্চলটি দীর্ঘদিন ধরেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষের কেন্দ্রবিন্দু। ১৯৮৯ সাল থেকে ভারত-শাসিত কাশ্মিরে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো স্বাধীনতা অথবা পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার দাবিতে সশস্ত্র আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার কাশ্মিরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বাতিল করে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ জারি করলে সেখানে সংঘর্ষ অনেকটাই কমে আসে। তবে গত বছর কাশ্মিরের দক্ষিণাঞ্চলে কয়েকটি প্রাণঘাতী হামলার পর হাজার হাজার অতিরিক্ত সেনা এবং স্পেশাল ফোর্স মোতায়েন করে ভারত।
তিন বছরে এসব হামলায় অন্তত ৫০ সেনা নিহত হন। এর আগে করোনা মহামারির সময়ও ২৫০০ জন সাবেক সেনা সদস্যকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নিয়োজিত করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে সরকার।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: