বুধবার, ১৩ই আগস্ট ২০২৫, ২৯শে শ্রাবণ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


গাজায় হামলা বন্ধের দাবিতে দেশে দেশে বিক্ষোভ


প্রকাশিত:
৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:১১

আপডেট:
১৩ আগস্ট ২০২৫ ১৯:৫৫

ছবি সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর নিষ্ঠুর সামরিক অভিযান বন্ধের দাবিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ-মিছিল শুরু হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ এবং সেখানে ত্রাণ ও মানবিক সহায়তার প্রবাহ স্বাভাবিক করার দাবি জানাচ্ছেন।

শনিবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ এবং ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণার দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। এই বিক্ষোভকারীদের মধ্যে মুসলিম, খ্রিস্টানদের পাশাপাশি অনেক ইহুদি শান্তিকামী সংস্থার প্রতিনিধিরাও ছিলেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ব বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, প্যালেস্টাইনিয়ান ইউথ মুভমেন্ট, দ্য পিপল’স ফোরাম, জিউয়িশ ভয়েস ফর পিস, আনসার কোয়ালিশনসহ ৩ শতাধিক সংস্থার উদ্যোগে হয়েছে এই মিছিল। মিছিলটি ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ সবগুলোর সড়ক প্রদক্ষিণ করেছে।

রোববার রাজধানী আঙ্কারাসহ তুরস্কের বিভিন্ন শহরে একই দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সামরিক ও রাজনৈতিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখায় আঙ্কারায় মার্কিন দূতাবাসের সামনেও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। এ সময় তারা ‘জর্ডান নদীর তীর থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত স্বাধীন ফিলিস্তিন চাই’ ‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক, ইসরায়েলের দখলদারী নিপাত যাক’ ইত্যাদি স্লোগানও দিয়েছেন।

একই দিন একই দাবিতে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। বাংলাদেশ প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স ছিল এই মিছিলের সংগঠক।

বিক্ষোভ মিছিলের অন্যতম সংগঠক এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফ্রান্সিস ফরিদ আনাদোলু নিউজ এজেন্সিকে বলেন, “গাজায় যা হচ্ছে তা সরাসরি যুদ্ধাপরাধ। ইসরায়েল গাজা দখল করার জন্য এই নিষ্ঠুর ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে।”

ফ্রান্সিস ফরিদ আরও জানান, গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধে বিক্ষোভের আহ্বান জানিয়ে তাদের জোটের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং উৎসাহব্যাঞ্জক সাড়াও পাওয়া গেছে।

সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে মরক্কোতে। উত্তর আফ্রিকার এই দেশটির রাজধানী রাবাতে গতকাল রোববার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন লক্ষাধিক মানুষ। এ সময় তারা ইসরায়েলের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের বিরুদ্ধেও স্লোগান দিয়েছেন।

বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার জন্য কাসাব্লাঙ্কা শহর থেকে রাবাতে এসেছিলেন মোহাম্মদ তৌসি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে তিনি বলেন, “এখন আর এটা যুদ্ধের পর্যায়ে নেই। ইসরায়েল গাজাকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করছে; আর তাদেরকে প্রশ্রয় দিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। জো বাইডেনের সময়ে গাজার ধ্বংসযজ্ঞ সম্পর্কে রাখঢাক করা হচ্ছে কিন্তু এখন ট্রাম্পের সময়ে সবকিছুই খোলামেলা।”

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। ওই বছর ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।

জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল। কিন্তু বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ। দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে গত ১৫ দিনে গাজায় নিহত হয়েছেন ১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।

যে ২৫১ জন জিম্মিকে হামাসের যোদ্ধারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে এখনও অন্তত ৩৫ জন জীবিত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইডিএফ ঘোষণা দিয়েছে যে সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করা হবে।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করা এই অভিযানের লক্ষ্য এবং লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top