শনিবার, ৪ঠা মে ২০২৪, ২১শে বৈশাখ ১৪৩১


মিয়ানমারে বিক্ষোভের সময় ৩৯ জনকে ‘হত্যা’


প্রকাশিত:
১৫ মার্চ ২০২১ ১৬:২১

আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২১ ২৩:২৪

ছবি- সংগৃহীত

দিন দিন সহিংসতা বেড়ে চলেছে মিয়ানমারে। সামরিক সরকারবিরোধী আন্দোলন যত বেড়ে চলেছে অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে দেশটি। বাড়ছে হত্যাকাণ্ড। গতকাল রোববারও দেশটিতে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। শুধু হ্লাইংথায়ায় ২২ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। সারা দেশের হিসেবে অন্তত ৩৯ জন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, রোববার দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে প্রাণহানি ঘটেছে। ইয়াঙ্গুনের হ্লাইং থারিয়ার এলাকায় রোববার বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। এ সময় ছুরি ও লাঠি হাতে নিজেদের রক্ষার চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। এরপর সংঘর্ষ শুরু হলে তাদের ওপর গুলি ছোড়ে নিরাপত্তাবাহিনী। এতে ২২ জনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া দেশটির অন্যান্য শহরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন ১৬ জন। আর বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন একজন পুলিশ সদস্য।

অ্যাডভোকেসি গ্রুপ অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারসকে (এএপিপি) দেশটির এক প্রত্যক্ষদর্শী একজন সাংবাদিক বলেন, ‘এটা ভয়ঙ্কর। আমি চোখের সামনে গুলি করে বিক্ষোভকারীদের হত্যা করতে দেখেছি। এমন নৃশংস দৃশ্য জীবনে ভুলতে পারব না।’

যদিও নিজের নাম প্রকাশ করতে বারণ করেছেন ওই সাংবাদিক, তার তিনি এএপিপিকে বলেছেন, ‘চোখের সামনে গুলি করে পাখির মতো মানুষ মেরে ফেলছে জান্তা সরকারের লোকজন (পুলিশ-সেনা)।’

রয়টার্স আরও জানিয়েছে, হ্লাইংথায়াসহ দুটি এলাকায় সামরিক আইন জারি করেছে জান্তা সরকার।

গত শনিবারও সামরিক সরকারের নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে আরও ১৩ জন নিহত হয় মিয়ানমারে। একই দিন দেশটির সরকারর প্রধান হিসেবে মান উইন খাইং থানের নাম ঘোষণা করেছে ‘কমিটি ফর রিপ্রেজেন্টিং পিডাংসু হাল্টাও’ (সিআরপিএইচ) নামে একটি দল। নিজেদের সরকার ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও দাবি করেছে স্বঘোষিত দলটি।

শনিবার অভ্যুত্থানের পর প্রথম প্রকাশ্য ভাষণে অভ্যুত্থান প্রতিহত করতে ‘বিপ্লবের’ ডাকও দিয়েছেন স্বঘোষিত বেসামরিক সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলেছে, অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) কয়েকজন পদ হারানো সংসদ সদস্য গোপনে একটি দল গঠন করেছেন। তাদের মধ্যে থেকে মান উইন খাইং থানকে দেশটির সরকার প্রধান ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটি ফর রিপ্রেজেন্টিং পিডাংসু হাল্টাও নামে দলটির পক্ষে বিপ্লব চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

মান উইন খাইং থান একজন সাবেক আইনপ্রণেতা। নতুন দল ঘোষণা ও বিপ্লবের ডাকের কারণে তিনিসহ দলের প্রত্যেক সদস্যের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে বিবিসি।

শনিবার আত্মগোপন করা স্থান থেকে ফেসবুকে নিজের প্রথম ভাষণ দেন মান উইন খাইং থান। বলেন, ‘এটি জাতির সবচেয়ে অন্ধকার মুহূর্ত এবং ভোর হতে খুব বেশি দেরি নেই। এখন আমাদের নাগরিকদের অন্ধকার সময়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের পরীক্ষা দেওয়ার সময়। একটি ফেডারেল গণতন্ত্র গঠনের জন্য যে সব জাতিগোষ্ঠী ভাইয়েরা বহু দশক ধরে একনায়কতন্ত্রের নিপীড়ন ভোগ করে চলেছেন... এই বিপ্লবই আমাদের জন্য সুযোগ, একসঙ্গে প্রচেষ্টা চালানোর। অতীতে আমাদের মতপার্থক্য সত্ত্বেও, এখন অবশ্যই স্বৈরশাসনের অবসান ঘটাতে আমাদের হাতে হাত রেখে কাজ করতে হবে।’

অরদিকে ক্ষমতাসীন সেনাবাহিনী সিআরপিএইচকে একটি অবৈধ গোষ্ঠী হিসেবে উল্লেখ করে সতর্কবার্তা দিয়েছে। তারা বলেছে, কেউ যদি তাদেরকে সহযোগিতা করে, তবে তা রাষ্ট্রদ্রোহিতা বলে গণ্য করা হবে।


সম্পর্কিত বিষয়:

মিয়ানমার

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top