প্রাণঘাতী রূপ নিচ্ছে হারিকেন বেরিল, ধ্বংসযজ্ঞের শঙ্কা
 প্রকাশিত: 
                                                ৩০ জুন ২০২৪ ২০:০৪
 আপডেট:
 ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:২০
                                                
 
                                        পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট চলতি মৌসুমের প্রথম হারিকেন বেরিল আরও শক্তি সঞ্চয় করে বেশ কয়েকটি ক্যারিবীয় দ্বীপে আঘাত হানতে যাচ্ছে। সোমবার এই হারিকেন ক্যারিবীয় দ্বীপে ভয়াবহ তাণ্ডব চালাতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে ইউএস ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি)।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলেছে, আটলান্টিক মহাসাগর পেরিয়ে বার্বাডোস, ডোমিনিকা, গ্রানাডা এবং মার্টিনিকের ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দিকে অগ্রসর হচ্ছে হারিকেন বেরিল। এগিয়ে চলার সাথে প্রবল শক্তি সঞ্চয় করছে এই ঝড়।
ইউএস ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) বলেছে, বেরিল বর্তমানে বারবাডোসে থেকে প্রায় ৮৫০ কিলোমিটার পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থান করছে। সোমবার সকালের দিকে উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানতে পারে এটি। সেই সময় ভয়াবহ বিপজ্জনক ঝড়ে পরিণত হতে পারে বেরিল।
এদিকে, ঝড়ের আশঙ্কায় ওই অঞ্চলের লোকজন তাদের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছেন। অনেক লোকজনকে গ্যাস স্টেশনে জ্বালানির সারিতে দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া ঝড়ের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে লোকজন খাদ্যসামগ্রী ও পানি মজুত করছে।
শনিবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী হারিকেন বেরিলের আঘাত করার সময় নাগরিকদের বন্ধুবান্ধব, পরিবার এবং প্রতিবেশীদের দিকে নজর রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসবিদরা বলছেন, শুক্রবার রাতে পূর্ব আটলান্টিক সাগরে হারিকেন বেরিল গঠিত হয়েছে। আগামী কয়েক দিন ক্যারিবীয় অঞ্চল থেকে মেক্সিকো উপসাগরের দিকে ধেয়ে যাওয়ার সময় এটি ক্যাটাগরি-৩ ঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তারা বলেছেন, পূর্ব আটলান্টিক মহাসাগর লাগোয়া উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জে সবার আগে আঘাত হানতে পারে ঝড়টি। এরপর ডমিনিকা, মার্টিনিক, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রানাডাইনস ও গ্রেনাডার দিকে ধেয়ে যেতে পারে। এ সময় ওই অঞ্চলে প্রবল শক্তিতে আঘাত হানতে যাওয়া এই ঝড় প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় উচ্চ ঢেউয়ের পাশাপাশি ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় আলবার্তোর পর আটলান্টিক মহাসাগরে বেরিলই চলতি মৌসুমের দ্বিতীয় ঝড়। এর আগে, গত ২০ জুন উত্তর-পূর্ব মেক্সিকোতে আঘাত হানে গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় আলবার্তো। সেই ঝড়ের প্রবল তাণ্ডবে দেশটিতে চারজনের প্রাণহানি ঘটে।
বার্বাডোসের আবহাওয়াবিষয়ক সংস্থা হারিকেন বেরিলের তাণ্ডবে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও আকস্মিক বন্যা হতে পারে বলে সতর্কতা জারি করেছে। হারিকেনটি দ্বীপের দক্ষিণে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার এলাকার ওপর দিয়ে অতিক্রম করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই ঝড়ের প্রভাবে বার্বাডোসসহ ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে ১৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, আটলান্টিক মহাসাগর লাগোয়া অঞ্চলে হারিকেনের মৌসুম ১ জুন থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলে। চলতি বছরে ওই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি হারিকেন আঘাত হানতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তারা।
ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনওএএ) চলতি মৌসুম সম্পর্কে সবচেয়ে ভয়াবহ সতর্কতা জারি করেছে। পূর্বাভাসবিদরা বলেছেন, ২০২৪ সালে অন্তত ২৫টি ঝড় আঘাত হানতে পারে। এসব ঝড়ের মধ্যে আট থেকে ১৩টি হারিকেনে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া এসব ঝড়ের মধ্যে চার থেকে সাতটি যেকোনও জায়গায় শক্তিশালী হয়ে ক্যাটাগরি-৩ বা আরও তীব্র হারিকেনে রূপ নিতে পারে। যা স্বাভাবিক সংখ্যার দ্বিগুণেরও বেশি।



 
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                            
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: