শুক্রবার, ৩রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১


ধর্ষণের অভিযোগকারী ঢাবির শিক্ষার্থী অনশনে অসুস্থ


প্রকাশিত:
১০ অক্টোবর ২০২০ ১৯:৪৮

আপডেট:
১০ অক্টোবর ২০২০ ২০:৪৩

ছবি-সংগৃহীত

সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা হাসান আল মামুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষার্থী অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

টানা ২৭ ঘণ্টা অনশনের পর শুক্রবার রাতে ওই শিক্ষার্থী শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনকারী এই শিক্ষার্থী হাসানের মতোই ইসলামি স্টাডিজ বিভাগে পড়ছেন।

মামলায় হাসানের পাশাপাশি পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগের বিরুদ্ধেও ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে।

ধর্ষণে সহযোগিতা করায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরসহ বাকি তিনজনকে আসামি করেছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ডা. শেখ মো. আল আমিনের নেতৃত্বে একটি চিকিৎসক টিম রাতে ওই ছাত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয় বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের সাবেক এজিএস ফাল্গুনী দাস তন্বী।

তিনি বলেন, “আমরা তাকে খাবার গ্রহণের জন্য অনেক অনুরোধ করেছি। কিন্তু তিনি আসামিদের না ধরা পর্যন্ত আমরণ অনশনে করতে সংকল্পবদ্ধ।

“টানা ২৭ ঘণ্টা না খেয়ে থাকার ফলে রাতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে চিকিৎসক টিম এসে তাকে স্যালাইন দিয়েছে।”

শনিবার সকালে ওই ছাত্রীর পাশে সংহতি জানিয়ে অবস্থানরত সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক জেসমিন আক্তার রিপা বলেন, “একটানা না খাওয়ার কারণে রাতে তিনি দুর্বল হয়ে পড়েছেন।

“তার অবস্থার খারাপের দিকে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত তিনি ১১ বার বমি করেছেন। আমরা আপাতত স্যালাইন চালিয়ে নিচ্ছি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, “আমাদের প্রক্টরিয়াল টিম ওই ছাত্রীর সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে কাজ করছেন। রাতে আমাদের সহকারী প্রক্টর তাকে দেখে এসেছেন।

“ওই শিক্ষার্থীর পাশে আমরা আছি। তার জন্য বিশ্ববিদ্যালযের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার, তা করা হচ্ছে।”

গত ২১ ও ২৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর লালবাগ ও কোতোয়ালি থানায় ধর্ষণ, অপহরণ ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে চরিত্রহননের অভিযোগে হাসান, নুর এবং তাদের চার সহযোগীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটি মামলা করেন এই ছাত্রী।

প্রথম মামলায় প্রধান আসামি করা হয় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হাসানকে।

এই অভিযোগ ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করলেও মামলার পর ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় হাসানকে।

মামলার অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে। নূর ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগ, যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি নাজমুল হুদা ও কর্মী আবদুল্লাহ হিল বাকি।

ধর্ষণের মামলা দায়েরের দুই সপ্তাহ পরেও আসামিদের কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে অনশনে বসেন ওই ছাত্রী।

অনশনে বসে তিনি বলেছিলেন, “ধর্ষকরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। মামলা তদন্তের স্বার্থে আমি একাধিকবার থানায় যোগাযোগ করেছি। তারা বলেছেন, আসামি ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু কোনো এক অদৃশ্য শক্তির বলে আসামিরা গ্রেপ্তার হচ্ছে না।”

মামলার এজহারে ওই ছাত্রীর ভাষ্য, একই বিভাগে পড়া এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের কাজে থাকার কারণে হাসান আল মামুনের সঙ্গে তার ‘প্রেমের সম্পর্ক’ গড়ে ওঠে। এর সুযোগ নিয়ে মামুন চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি তার লালবাগের বাসায় নিয়ে তাকে ‘ধর্ষণ’ করেন।

পরে সোহাগও তাকে ‘ধর্ষণ করেন’ বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।

এজাহারে বলা হয়, এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ওই তরুণী নূরের সঙ্গে দেখা করেন। নূর তাকে প্রথমে ‘মীমাংসা’ করে দেওয়ার আশ্বাস দিলেও পরে ‘বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করে অপপ্রচার চালিয়ে সম্মানহানি করার’ হুমকি দেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top