মেহেরপুরে দুই সীমান্ত দিয়ে ৬০ জনকে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ
প্রকাশিত:
২৫ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:১৮
আপডেট:
২৫ অক্টোবর ২০২৫ ২৩:০০
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাথুলী ও কাজিপুর সীমান্ত দিয়ে তৃতীয় লিঙ্গ, নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ৬০ জনকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরের দিকে পৃথক স্থানে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কাথুলী সীমান্তে পতাকা বৈঠকের সময় কুষ্টিয়া ৪৭ ব্যাটালিয়নের কাথুলী বিওপির কোম্পানি কমান্ডার মিজানুর রহমানসহ বিজিবির একটি টিম ও ভারতের নদীয়া জেলার তেহট্ট থানার ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের তেইনপুর কোম্পানি সদর দপ্তরের কমান্ডার এসি আনচ কুমারসহ বিএসএফের একটি টিম উপস্থিত ছিল।
এদিকে কাজিপুর সীমান্তে পতাকা বৈঠকের সময় বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন ৪৭ বিজিবির কাজিপুর বিওপির সুবেদার মো. শাহাবুদ্দিনসহ বিজিবি একটি টিম এবং ভারতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রতিপক্ষ ১১ ব্যাটালিয়ন বিএসএফের ইন্সপেক্টর এবিসন ফ্রাঙ্কসহ বিএসএফের একটি টিম।
কাথুলী বিজিবির কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার মিজানুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কাথুলী বিওপির সীমান্ত এলাকার মেইন পিলার ১৩২/২ এস হতে বাংলাদেশের ৫ গজ ভারতের অভ্যন্তরে তেইনপুর নামক স্থানে বিজিবি এবং বিএসএফের পতাকা বৈঠক হয়। সেখানে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ৩০ জন বাংলাদেশিকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে বিএসএফ। এদের মধ্যে ১৫ জন নারী, ১০জন পুরুষ ও ৫ জন শিশু রয়েছে।
কাথুলী সীমান্ত দিয়ে হস্তান্তরকৃতরা হলেন- যশোর জেলার ঝিকরগাছা থানার আব্দুল লতিফ শেখের মেয়ে রাবেয়া বেগম (৫৭), একই জেলার সদর থানার সেকেন্দার শেখের ছেলে শানু শিকদার (৫৭), বাঘারপাড়া থানার বাবু শেখের ছেলে সুমন (২৭), বাঘারপাড়া থানার ইউসুফ শেখের ছেলে ঈমান (২১), সদর থানার আলাউদ্দিনের স্ত্রী আরিফা সুলতানা (৩৫), কালিগঞ্জ থানার আক্তার মন্ডলের ছেলে আমিরুল (২০), মেয়ে আয়েশা (২৫), নড়াইল জেলার কালিয়া থানার সাদ্দাম হুসাইন শেখের স্ত্রী সুমি (৩২), তার শিশু ছেলে ইব্রাহিম (৯), হামজা (৬), মেয়ে আয়েশা (৬) ও আমেনা (২), একই থানার মাজাহার শেখের স্ত্রী মরিয়াম (৬৫), লোহাগড়া থানার লায়েক শেখের স্ত্রী ইতি খানম (২৭), তার মেয়ে আশারা মেহের জাবিন (৪), কালিয়া থানার ইদ্রিস মোল্লার ছেলে রাজু (২৮), সদর থানার মৃত উলার স্ত্রী পারভিন বেগম (৪৬), খুলনা জেলার দিঘলিয়া থানার এতিম মোল্লার ছেলে আলি আতিয়ার শেখ (৩৫), একই এলাকার আলী শেখের ছেলে আতিয়ার শেখ (৬), নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লার শাহ আলমের স্ত্রী শাবনুর (৩২), তার শিশুসন্তান মেজবা খান (৬মাস), পাবনায় ঈশ্বরদী থানার আব্দুল মালিক মানিকের ছেলে সাগর (২৮), একই এলাকার আসাদুল ইসলামের মোছা. শাপলা খাতুন (২৬), জামালপুরের মিলান্দাহ থানার আব্দুল সাদ্দাম শেখের স্ত্রী রহিমা বেগম (৬৫), সাতক্ষীরার কালোরোয়া থানার ইসমাইল গাজীর স্ত্রী সুফিয়া (৪২), গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার রাশেদ ফকিরের মেয়ে সীমা (৩০) ও রুমা (২৮), একই এলাকার জুয়েল মোল্লার মেয়ে হাফিজা আক্তার (২২),পাবনা সদর থানার মোস্তফা মোল্লার ছেলে মো. ইসনাল (৪৫), এবং ঢাকা তেজগাঁও থানার নজির আহমেদের মেয়ে রুমি (৩৬)।
এদিকে কাজিপুর বিজিবির কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, সীমান্ত পিলার ১৪৭ এমপি আর কবর নামক স্থানে জি আর-৭১৫৫০১ ম্যাপশিট-৭৯এ/৯, ১৪ পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ৮ জন পুরুষ, ১৫ জন মহিলা এবং ৭ জন তৃতীয় লিঙ্গের বাংলাদেশি নাগরিকদের আমাদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। হস্তান্তরকৃত সকলে বাংলাদেশের নাগরিক। তারা জীবিকার তাগিতে বিভিন্ন সময় ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে। হস্তান্তরকৃত ব্যক্তিদের নাম ও ঠিকানা নিশ্চিত করে গাংনী থানায় পাঠানো হয়েছে।
কাজিপুর সীমান্ত দিয়ে হস্তান্তরকৃতরা হলেন- নড়াইল জেলার কালিয়া থানার ইখলাস মিনার ছেলের মো. সবুর (৪০), একই এলাকার মাহমুদ মোল্লার স্ত্রী রাখি বেগম (৫০), মোশারফ শেখের ছেলে ইয়াদুন (৩৮), নজামাল মোল্লার স্ত্রী লক্ষ্মী বেগম (৪২), মোহাম্মদ মোস্তফা ছেলে মোহাম্মদ নুর ইসলাম (২৪), মামুন মোল্লার ছেলে সুখরণ (২৫), আবু বকর শেখের মেয়ে রিনি (৩৬), যশোর সদর উপজেলার রাজ্জাক শেখের ছেলে মারজিদ (৪৫), একই জেলার ইসলামপুর শার্শা গ্রামের রফিক শেখের ছেলে মোহাম্মদ আলাউদ্দিন (২৭), ঝিকরগাছার ফজলুর রহমানের ছেলে সুমন হোসাইন (৩০), সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আনসার গাজীর স্ত্রী হানুফা (২৭), শামসুর মোল্লার মেয়ে কোহিনুর (৩০), একই জেলার কোলোরোয়া গ্রামের আনিস থেকে মেয়ে তাসলিমা (৪৫), আশাশুনি গ্রামের আজিজার গাজীর মেয়ে মারুফা খাতুন (২৯), একই এলাকার মো. মুকুলের মেয়ে মুন্নি সুলতানা, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নাসিমা খাতুন (৩৫), ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের দিল মোহাম্মদের ছেলে মো. আল আমিন (৩১), সুনামগঞ্জ জেলার বুড়িগঞ্জ গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার মেয়ে জবা আক্তার (২৩), ভোলা সদর উপজেলার আব্দুল হাকিমের মেয়ে ইয়াসমিন বেগম (২১), কিশোরগঞ্জের ভৈরবের রেনু মিয়ার ছেলে শাহাদত হোসেন (২৭), মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার আব্দুল বারেকের মেয়ে কোহিনুর ডাক্তার (৩৩), নোয়াখালীর সর্দারবাদী এলাকার মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে মোহাম্মদ মনির (৩৫), খুলনার ডুমুরিয়া এলাকার আরশাদ শেখের স্ত্রী কুলসুম (৫৯), ফেনীর দাগনভুঁইয়া এলাকার মোহাম্মদ মোস্তফা শেখের ছেলে নজরুল ইসলাম (৪৮), একই জেলার সেনাহাট দীঘলিয়া গ্রামের নুর আলম হাওলাদার ছেলে মো. সাইম (১৯), খুলনা সদর উপজেলার রূপসা গ্রামের হাসমত আলীর মেয়ে জরিনা খাতুন (৩৬), বগুড়া নন্দীগ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মোঃ আব্দুল (৩৫), হবিগঞ্জ মধুপুরের রহিম খান (২০),যশোর জেলার গোগা কল্যাণী শার্শা এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম (২৭) এবং পাবনারর সুজানগর এলাকার মোহাম্মদ ইসমাইল শেখের মেয়ে নুসরাত (১৯)।
গাংনী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানি ইসরাইল জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে হস্তান্তরকৃত ব্যক্তিদের সঠিক পরিচয় পাওয়ার পর তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
সম্পর্কিত বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: