চাঁদাবাজি জমিদখল মামলা-হামলায় অতিষ্ঠ মানুষ
বাবা-ছেলে মূর্তিমান আতঙ্ক
 প্রকাশিত: 
                                                ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:৪৫
 আপডেট:
 ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:৫৪
                                                
গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলাধীন বোয়ালী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম সরকার ও তার ছেলে রাহাত সরকারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ চাবাগান অঞ্চলের মানুষ। বাবা-ছেলে দু’জনেই এলাকায় মূর্তিমান আতঙ্ক। চাঁদাবাজি, জমি দখল কারনে-অকারনে মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন, মামলা-হামলা তাদের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা থেকে শুরু করে শিক্ষক, ব্যবসায়ী এমনকি মসজিদের ইমামসহ এলাকার বহু মানুষ তাদের মারধর ও হুমকির শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, সম্প্রতি কাশেম সরকারের ছেলে রাহাত সরকার মুক্তিযোদ্ধা নাজির হোসেনের উপর চড়াও হয় এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। তাদের কাছে পাওনা টাকা চেয়ে মারধরের শিকার হয়েছে ঝিংগাহাটী গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী ফরমান আলী। তাকে চাবাগান বাজারের একটি দোকানে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে। মারধরের এক পর্যায়ে দোকানের টেবিলে রাখা একটি কাঁচি দিয়ে ফরমানকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। চাবাগান সা’দ বিন মুয়াজ জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা ফজলুল হকের কাছে মাসিক ভিত্তিতে চাঁদা দাবি করে রাহাত সরকার অন্যথায় তাকে এলাকা থেকে বিতাড়িত করার হুমকি দেয়। চাঁদার দাবিতে লাঠি নিয়ে ইমাম সাহেবের বাসার সামনে গেলে মসজিদের মুসুল্লীগণ ইমামকে রাহাত সরকারের হাত থেকে রক্ষা করে। উল্লেখিত সবগুলো ঘটনায় কালিয়াকৈর থানায় জিডি হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে।

এছাড়াও একই মসজিদের বাতি জ্বালানো-নিভানোকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসা শিক্ষক ও মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুল মালেককে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। এ ঘটনায় কালিয়াকৈর থানায় মামলা হলে বাবা-ছেলেকে আসামী করে আদালতে প্রসিকিউশন রিপোর্ট দাখিল করে পুলিশ।
জানা যায়, এক সময়ের কুখ্যাত ডাকাত কাশেম সরকার ওরফে ‘ডাকু কাশেম’ ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ প্রাপ্তির পর রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে সাধারণ মানুষের ওপর চরমমাত্রার অত্যাচার, নির্যাতন করতে থাকে। করোনাকালীন সময়ে দরিদ্রদের জন্য সরকার প্রদত্ত খাদ্যসহায়তা আত্মসাতের পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে চোরাই মোটরসাইকেল ও সংরক্ষিত বনের কাঠের বে-আইনি ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগও রয়েছে কাশেম সরকারের বিরুদ্ধে। বর্তমান নাজুক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সুযোগে পুনরায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে এই বাবা-ছেলে চক্র।
এ বিষয়ে কাশেম সরকারের মুঠোফোনে কল দিয়ে জানতে চাইলে এ প্রতিবেদককে তিনি বলেন, “আমি ও আমার ছেলের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে- এখানে বিন্দুমাত্র সত্যতা নাই। বরং অভিযোগকারীরাই প্রকৃত অপরাধী। মসজিদের ইমামকে সুদখোর উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইমাম হয়েও সুদের ব্যবসা করেন ফজলুল হক। এছাড়াও ওই ইমাম ঘোড়ার মাংস রান্না করে খেয়েছেন। মসজিদের টয়লেট প্রস্রাবখানা বাড়ানোসহ বিভিন্ন বিষয়ে স্পষ্ট কথা বলার কারনে ইমামসহ একটি চক্র আমার ছেলে এবং আমার বিরদ্ধে মিথ্যা অপবাদ রটাচ্ছে-যা আদৌ সত্য নয়।” কাসেম সরকার নিজেকে বিএনপির লোক বলেও দাবি করেন।



 
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                            
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: