মঙ্গলবার, ৩০শে এপ্রিল ২০২৪, ১৭ই বৈশাখ ১৪৩১

Rupali Bank


ফের বিস্ফোরণের শব্দে কাঁপছে টেকনাফ সীমান্ত


প্রকাশিত:
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:২৪

আপডেট:
৩০ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৪৭

ফাইল ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার পূর্ব ও দক্ষিণাংশের নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমার সীমান্তে সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। যার প্রভাব এসেছে নাফ নদীর এপারেও।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত টানা ২ ঘণ্টা বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপেছে সীমান্তের এপার। এর কিছুক্ষণ পর থেকে থেমে থেমে শোনা যাচ্ছে বিস্ফোরণের শব্দ।

টেকনাফের শাহ পরীর দ্বীপের পূর্বে মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে আসছে এমন বিস্ফোরণের শব্দ। শাহ পরীর দ্বীপের একাধিক বাসিন্দার সাথে আলাপ করে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুস সালাম জানান, নাফ নদীর পূর্ব ও দক্ষিণাংশে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। যেসব স্থান থেকে গোলাগুলির আওয়াজ আসছে, সেখানে রাখাইন রাজ্যের মংডুর শহরের আশপাশের মেগিচং, কাদিরবিল, নুরুল্লাহপাড়া, মাংগালা, নল বন্ন্যা, ফাদংচা ও হাসুরাতা এলাকা অবস্থিত। এসব এলাকায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকি রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে ওই চৌকি ঘিরেই চলছে এই সংঘর্ষ।

এই ইউপি সদস্য বলেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মিয়ানমারের মংডু শহরের আশপাশের প্রচুর গোলাগুলি শব্দ শোনা যায়। তবে রাতভর কোনো ধরনের শব্দ শোনা যায়নি। শনিবার সকাল থেকে কিছুক্ষণ পরপর বিকট শব্দে মাটি কেঁপে ওঠে এপারে। সেই সঙ্গে গোলাগুলির শব্দ কানে ভেসে আসে।

সেন্টমার্টিন ও শাহ পরীর দ্বীপ এলাকার বাসিন্দারা বলেন, গতকাল দিবাগত রাত ১টা থেকে শনিবার সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তে থেমে থেমে গোলাগুলির আওয়াজ শুনতে পান তারা। মাঝেমধ্যে মাটি কাঁপানো শব্দও শুনেছেন। তবে সকালবেলা প্রায় এক ঘণ্টা ব্যাপক গোলাগুলিতে সীমান্তের এপারের মানুষের ঘুম ভেঙ্গেছে। শাহ পরীর দ্বীপের ওপারে মিয়ানমারের মংডুতে সকালে হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেছে। এর কিছুক্ষণ পর বিকট দুটি শব্দে কেঁপে উঠেছে সীমান্ত এলাকা।

শাহ পরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা রহমত উল্লাহ বলেন, মিয়ানমারে রাতভর থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। তবে সকালে দু’টি বিকট শব্দে এপারের মাটি কেঁপে উঠেছে।

শাহ পরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা নবী হোসেন বলেন, শুক্রবার রাতে মিয়ানমার সীমান্ত শান্ত ছিল। কিন্তু শনিবার সকালে বিকট শব্দে এপারের মাটি কেঁপে উঠেছে। এতে তাঁরা ভীত হয়ে পড়েছেন।

সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ বলেন, মিয়ানমারের সাথে সেন্টমার্টিনের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। দূর থেকে গুলির আওয়াজ ভেসে আসছে। সকালে দুটি বিকট শব্দ পাওয়া গেলেও ৮টার পর থেকে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। এমন অবস্থায় আতঙ্কে রয়েছেন টেকনাফ সীমান্তে বসবাসরত বাংলাদেশীরা। কারণ, সম্প্রতি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকার বিভিন্ন জায়গায় মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যায় দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

এর আগে, গতকাল ভোর ৪টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত টেকনাফের দক্ষিণাংশের ওপারে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে থেমে থেমে গুলির আওয়াজ শোনা যায়। গুলির আওয়াজের সাথে কয়েকটি স্থানে ধোঁয়া উড়তেও দেখা যায়।

বিজিবির টেকনাফস্থ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, হঠাৎ টেকনাফ সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় বিকট শব্দ ও গোলাগুলি খবর পাওয়া যায়। সীমান্ত এলাকায় বিজিবির সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্কের পাশাপাশি বিজিবির টহল আরও বেশি জোরদার করা হয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, এটি মিয়ানমারের সমস্যা। মিয়ানমারের সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল বাড়ানো হয়েছে। সীমান্তে বসবাসরত মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে চুক্তির মাধ্যমে মিয়ানমারে ফিরে গেছেন আশ্রয় নেওয়া ৩৩০ জন বিজিপি সদস্য, সেনা সদস্য, কাস্টমস কর্মকর্তা এবং ইমেগ্রেশন অফিসার। তারা অনেকটা প্রাণভয়ে সশস্ত্র অবস্থায় বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিল।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top