শুক্রবার, ৩রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১


কিশোর খুনের ঘটনায় আ.লীগ নেতাসহ আটক ৫


প্রকাশিত:
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০১:৫৭

আপডেট:
৩ মে ২০২৪ ১৫:৩৪

ছবি সংগৃহিত

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপরে সংঘর্ষে রাসেল হোসেন (১৪) নামে এক কিশোর নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা বিএম শাহজালাল রাহুলসহ ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে মিয়ারহাট এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।

এর আগে সকালে উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া গ্রামের মিয়ারহাট মাছঘাট এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা বিএম শাহজালাল রাহুল ও ইউপি সদস্য (মেম্বার) নজরুল ইসলামের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে। প্রায় ২ ঘণ্টাব্যাপী এলাকায় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা অব্যাহত ছিল। এতে রুহুল আমিন ও ফারুক ক্বারীসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। রুহুল আমিন সদর হাসপাতালে ও ফারুক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

আটক রাহুল দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। আটক অন্যরা হলেন- রাহুলের অনুসারী রাকিব হোসেন, মিনহাজুল ও সুমন হোসেনসহ ৫ জন। অন্যজনের নাম জানা যায়নি।

নিহত রাসেল চরকাছিয়া গ্রামের মনির হোসেন ভূট্টুর ছেলে। তিনি দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য নজরুল ইসলামের ভাতিজা। আহত রুহুল আমিন একই এলাকার আলী সর্দারের ছেলে। অপর আহত ফারুক আওয়ামী লীগ নেতা রাহুলের অনুসারী বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানিয়েছে, সকালে রাসেল ও তার বাবা মনির চর থেকে মিয়ারহাট ঘাটে আসে। এ সময় ঘাটে রাহুলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ফারুক ক্বারী নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় রাহুলের অন্য অনুসারী রাকিব হোসেন, মিনহাজুল ও সুমন জড়ো হন। একপর্যায়ে উভয়পক্ষ উত্তেজিত হয়ে পড়ে। হঠাৎ করে রাকিব ছুরি দিয়ে রাসেলের পেটে আঘাত করেন। এতে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে রুহুল আমিনসহ আরও ৫ জন আহত হন। রাসেল ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

এদিকে এ ঘটনার পর পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থল থেকে রাহুলসহ ৫ জনকে আটক করে পুলিশ। পরে পুলিশের হাত থেকে রাহুলকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে তার অনুসারীরা। তারা মিয়ারহাট বাজারে রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে পুলিশকে আটকানোর চেষ্টা করে। পরে পুলিশ গাছের গুড়ি সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে আটকদের থানায় নিয়ে যায়।

স্থানীয় সূত্র জানা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা রাহুল ও ইউপি সদস্য নজরুলদের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। সম্প্রতি মিয়ার হাট মাছঘাট নিয়েও তাদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। ঘাটকে কেন্দ্র করেই সকালে কথাকাটাকাটি একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত রাসেল ইউপি সদস্য নজরুলের আপন ভাতিজা। রাহুল ও নজরুল এলাকায় বালু উত্তোলনের জন্য সম্প্রতি দুটি ড্রেজার মেশিন বসিয়েছে। ড্রেজার মেশিন বসানো নিয়েও তাদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে।

নিহত রাসেলের ফুফু রুনিয়া বেগম বলেন, রাহুলরা আমাদের জমি পূর্বক দখল করে রেখেছে। মার্চ-এপ্রিল নদীতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এতে মৎস্য বিভাগ ক্যাম্প করতে চেয়েছিল মিয়ারহাট ঘাটে। রাহুল এ ক্যাম্পের বিপক্ষে ছিল। আমার ভাই নজরুল ও মনির ক্যাম্পের পক্ষে থাকায় রাহুলের লোকজন বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। ঘটনার সময় রাহুলের লোকজন অতর্কিত হামলা চালিয়ে রাসেলকে হত্যা করেছে। আমি এ হত্যার বিচার চাই।

দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সালেহ মো. মিন্টু ফরায়েজী বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রাহুল ও নজরুলের লোকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজন মারা গেছে, কয়েকজন আহত হয়েছে। এছাড়া রাহুলসহ ৫ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।

রায়পুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হাসান আখন জাহাঙ্গীর বলেন, ঘটনাটি অনেক বড় ছিল। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সংঘর্ষে রাসেল নামে এক কিশোর নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় ৫ জন আটক রয়েছে। তদন্ত শেষে এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top