মঙ্গলবার, ২রা সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭ই ভাদ্র ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


রবিউল আউয়াল: বেশি বেশি দরুদ পড়ার বিস্ময়কর প্রতিদান


প্রকাশিত:
১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:৩৬

আপডেট:
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০১:০৬

ছবি সংগৃহীত

ইসলামিক বর্ষপঞ্জির একটি বিশেষ মাস রবিউল আউয়াল। এই মাসেই মক্কার পবিত্র ভূমিতে বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (স.)-এর শুভ জন্ম হয়, যার মাধ্যমে মানবজাতি পেয়েছে রহমত ও হেদায়েতের আলো।

আবার, এই রবিউল আউয়ালেই প্রিয়নবীজি ইন্তেকাল করেন। তাই এই মাসটি শুধু আনন্দ কিংবা শোকের নয়, বরং নবীপ্রেমিক মুসলিমদের জন্য এটি ধর্মীয় দায়িত্ব ও আত্মশুদ্ধির এক বিরল সুযোগ। এই মাসে নবীজির (স.) প্রতি দরুদ পাঠ করা সবচেয়ে উত্তম আমলগুলোর অন্যতম।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি দরুদ পাঠ করেন। হে ঈমানদাররা! তোমরাও তাঁর প্রতি দরুদ ও সালাম পাঠ করো।’ (সুরা আহজাব: ৫৬)

এই আয়াতটি প্রমাণ করে- নবীজির প্রতি দরুদ পাঠ করা আল্লাহর পক্ষ থেকে সরাসরি নির্দেশ।

রবিউল আউয়ালে দরুদ পাঠের ৫টি বিশেষ ফজিলত
১. আল্লাহর রহমত লাভ: রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তার ওপর ১০টি রহমত নাজিল করেন।’ (সহিহ মুসলিম: ১/১৬৬)

২. গুনাহ মাফ ও মর্যাদা বৃদ্ধি: আরেক হাদিসে এসেছে, ‘দরুদ পাঠ করলে ১০টি গুনাহ মাফ হয়, ১০টি দরজা উন্মুক্ত হয় এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়।’ (নাসায়ি: ১/১৪৫)

৩. ফেরেশতারা করেন মাগফিরাতের দোয়া: রাসুল (স.) বলেছেন, ‘যতক্ষণ কোনো ব্যক্তি দরুদ পাঠ করে, ততক্ষণ ফেরেশতারা তার জন্য মাগফিরাত কামনা করেন।’ (ইবনে মাজাহ: ৯০৭)

৪. কেয়ামতে নবীজির সান্নিধ্য লাভ: ‘কেয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী সে-ই হবে, যে আমার ওপর সবচেয়ে বেশি দরুদ পাঠ করেছে।’ (তিরমিজি: ১/১১০)

৫. নবীজির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ: এই মাসে নবীজির আগমনের মাধ্যমেই আমরা ইসলাম, ঈমান ও হেদায়েতের আলো পেয়েছি। তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের শ্রেষ্ঠ উপায় হলো দরুদ পাঠ।

দরুদ পাঠ: শুধু আমল নয়, ভালোবাসার প্রকাশ
নবীজি (স.) আমাদের জন্য জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত উৎসর্গ করেছেন। তাঁর প্রতি দরুদ পাঠ করা শুধু একটি ইবাদত নয়, বরং তাঁর প্রতি আমাদের ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা ও দায়িত্ববোধের বহিঃপ্রকাশ। যারা অর্থ বা দান করার সামর্থ্য রাখেন না, তারা দরুদ পাঠের মাধ্যমে সাদকার সওয়াব অর্জন করতে পারেন।

এই মাসে দরুদের আমল কীভাবে করবেন?
প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যক দরুদ পাঠের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন (যেমন ১০০ বা ৫০০ বার)।
নবীজির সিরাত পাঠ করুন এবং তাঁর জীবন সম্পর্কে আলোচনা করুন।
নবীজির সুন্নাহ অনুসরণ করার জন্য নিজেকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করুন।
সাধ্যমতো দুঃস্থ ও অভাবী মানুষকে সাহায্য করুন।
পরিবার ও নতুন প্রজন্মকে নবীপ্রেম সম্পর্কে শিক্ষা দিন।

রবিউল আউয়াল মাস আমাদের জন্য আত্মশুদ্ধির এক সুবর্ণ সুযোগ। এই মাসে আমরা যত বেশি দরুদ পাঠ করব, ততই আল্লাহর রহমত ও নবীজির (স.) শাফায়াত আমাদের নিকটবর্তী হবে। আসুন, এই মহিমান্বিত মাসে দরুদকে আমাদের জীবনের নিয়মিত অংশ বানিয়ে নিই, যেন আমাদের হৃদয় আলোকিত হয়, গুনাহ মাফ হয়, এবং কেয়ামতের দিন প্রিয়নবীর (স.) সান্নিধ্য লাভের যোগ্য হই। আল্লাহ আমাদের সবাইকে বেশি বেশি দরুদ পাঠের তাওফিক দান করুন, আমিন।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top