নিয়মিত ফজর আদায় করতে ৬টি কৌশল মেনে চলুন
প্রকাশিত:
১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:২৩
আপডেট:
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০১:০৮

ফজরের সময় এলার্ম বেজে ওঠার পরও বারবার ‘স্নুজ’ চাপছেন? ভেবেছেন, ‘আর পাঁচ মিনিট’—এরপর বুঝলেন, সূর্য ওঠে গেছে, ফজরের সময় শেষ! এমনটা হয় না, এমন কেউ নেই। অথচ ফজরের নামাজ ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফজর নামাজ আল্লাহর রহমত ও বরকতের দরজা খুলে দেয়। তাই ফজরের জন্য উঠতে নিজেকে উদ্বুদ্ধ করা জরুরি।
ফজর নামাজের জন্য জাগা কেন এত কঠিন?
ফজরের জন্য জাগা কঠিন হওয়ার কারণ নিয়ে এক হাদিসে নবী করিম (সা.) বলেছেন : তোমাদের প্রত্যেকের মাথার পেছনে ঘুমের সময় শয়তান তিনটি গিঁট দেয় এবং প্রতিটি গিঁটে ফুঁ দিয়ে বলে, ‘রাত দীর্ঘ, ঘুমিয়ে থাকো।’ যদি সে জেগে উঠে আল্লাহর প্রশংসা করে, একটি গিঁট খুলে যায়; যদি অজু করে, দ্বিতীয় গিঁট খুলে যায়; আর যদি নামাজ পড়ে, সব গিঁট খুলে যায়। তখন সে সকালে সতেজ ও উচ্ছ্বসিতভাবে জাগে; না হলে অলসতা ও মনমরা হয়ে জাগে। (সহিহ বুখারি)
নিয়মিত ফজরের নামাজের জন্য জাগতে ছয়টি কার্যকর টিপস মেনে চলুন—
১. নামাজ শুধু আল্লাহর জন্য— নিজেই নিজেকে বিষয়টি বুঝানোর চেষ্টা করুন।
ঘুমানোর আগে মনে করুন, কেন উঠবেন? শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। যদি কয়েক মিনিটের ঘুম ত্যাগ না করতে পারি, তবে আখেরাতে কিভাবে আল্লাহর রহমত আশা করি?
২. ফজর নামাজের সওয়াবের কথা স্মরণ করুন
ফজর নামাজের ফজিলত সম্পর্কে মহনবী (সা.) বলেছেন— যে ব্যক্তি ফজর ও আসরের নামাজ আদায় করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।(বুখারি)
অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করবে, সে আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকবে। (মুসলিম)
প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে এই ফজিলতগুলোর কথা স্মরণ করুন।
৩. দৃঢ় নিয়ত করুন
ঘুমানোর আগে দৃঢ়ভাবে নিয়ত করুন যে, আমি ফজরের জন্য উঠব। দৃঢ় মনোভাবের কারণে কাজটি আপনার জন্য সহজ হবে। এছাড়া অন্য সব চেষ্টা ব্যর্থ হতে পারে।
৪. আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করুন
ঘুমানোর আগে মন থেকে আল্লাহর কাছে দোয়া করুন, আল্লাহ যেন আপনাকে সময়মতো জাগিয়ে দেন। এভাবে আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে প্রার্থনার বিষয়টি এলার্মের চেয়েও বেশি কার্যকর।
৫. স্নুজ অপশন বন্ধ করুন
মোবাইল থেকে স্নুজ বাটনকে বিদায় জানান। এতে প্রথম এলার্মের পর উঠার প্রবণতা বাড়বে।
৬. রাত না জেগে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ুন
সময়মতো ফজর নামাজে উপস্থিত হওয়ার জন্য সবচেয়ে কার্যকরী এবং সহজ উপায় হলো, রাতের কাজগুলো দ্রুত শেষ করে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাওয়া। সম্ভব হলে এশার পর অযথাই না জেগে তাৎক্ষণিক ঘুমিয়ে যাওয়া। এতে করে সহজে ফজর নামাজে উপস্থিত হওয়া সম্ভব হবে।
ফ্লাইট ধরতে হলে বা গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারভিউ থাকলে আমরা রাতেই প্রস্তুতি নেই, দুশ্চিন্তায় থাকি। কিন্তু ফজরের জন্য কেন তা হয় না? কারণ আমরা দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জিনিসকে গুরুত্ব দেই, আখেরাতকে নয়।
তাই নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন— ‘আমার দুনিয়ার কাজ আল্লাহর হকের চেয়ে বড় কেন?’ এই প্রশ্নই আপনাকে সঠিক পথে রাখবে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: