43005

09/13/2025 ওয়ার্ড বয়ের হাতে সেলাই!

ওয়ার্ড বয়ের হাতে সেলাই!

জেলা সংবাদদাতা, পঞ্চগড়

১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:৪৩

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জরুরি বিভাগে ডাক্তার না পেয়ে রোগীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন। এমনকি গুরুতর আহত রোগীর চিকিৎসাও দিতে হয়েছে ওয়ার্ড বয়কে দিয়ে!

আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের জুগিকাটা গ্রামের ফরহাদ হোসেন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের লতাপাড়া গ্রামে। এ সময় তার ছেলে মেহেদি হাসান খেলতে গিয়ে কার্তি দিয়ে হাত কেটে ফেলেন।

অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তাকে দ্রুত বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগে কোনো ডাক্তারই নেই! বাধ্য হয়ে কর্তব্যরত ওয়ার্ড বয় শহিদুল ইসলাম শিশুর আঙুলে দুইটি সেলাই দেন। প্রায় ২০ মিনিট পর স্বজনরা সিভিল সার্জনকে বিষয়টি জানালে তড়িঘড়ি করে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রোমেনা বেগম জনি হাসপাতালে আসেন।

এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। প্রায় প্রতিদিনই ডাক্তার না পেয়ে রোগীরা এভাবে ভোগান্তিতে পড়ছেন।

গলা ব্যথায় ভুগে উপজেলার কালিবাড়ি এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে আসেন রঞ্জন। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি প্রায় এক ঘণ্টা ধরে হাসপাতালে জরুরি বিভাগে বসে আছি। কিন্তু এখানে কোনো ডাক্তার নেই। জরুরি বিভাগে যদি ডাক্তারই না থাকে, তাহলে আমরা এখানে এসে কী লাভ করলাম? সাধারণ রোগীরা কি এভাবেই কষ্টে অপেক্ষা করবে?

অন্যদিকে সানজানা ইসলাম নামে এক রোগীর অভিভাবক বলেন, আমার ছেলে হঠাৎ করে বুকে ব্যথা অনুভব করায় দ্রুত জরুরি বিভাগে নিয়ে আসি। এখন প্রায় ৪০ মিনিট হয়ে গেল, কিন্তু কোনো ডাক্তার আসেননি। এমন পরিস্থিতিতে আমরা ভীষণ ভোগান্তিতে পড়েছি।

মমতা নামে আরেকজন রোগী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি প্রায় ২০ মিনিট ধরে অপেক্ষা করছি। কিন্তু জরুরি বিভাগে কোনো ডাক্তার নেই। রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে একের পর এক ফিরে যাচ্ছে। এটা কেমন স্বাস্থ্যসেবা?

অভিযোগের বিষয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রোমেনা বেগম জনি বলেন, আমরা মোটেও এমন নই যে রোগীদের সেবা দিচ্ছি না। আমার ছোট বাচ্চা আছে এজন্য আধা ঘণ্টা দেরি হতেই পারে। ইমারজেন্সি রোগী আসলে আমাকে জানানো হয়। আমি ভাবছিলাম যে ডাক্তার আছে। কিন্তু উনিতো আমাকে ইনফর্ম করে যায়নি।

এ বিষয়ে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুল কবীর বলেন, জরুরি বিভাগের ডাক্তার ছিল না এটা আমার জানা নেই। সেই সময় কোন ডাক্তার ডিউটিতে ছিল খোঁজখবর নিয়ে জানানো হবে। তবে ২৪ ঘণ্টা ডাক্তার থাকেন।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]