41503

08/26/2025 ৮২ শতাংশ ব্যবসায়ীর মতে বর্তমান করহার ‘অন্যায্য’

৮২ শতাংশ ব্যবসায়ীর মতে বর্তমান করহার ‘অন্যায্য’

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

২৬ আগস্ট ২০২৫ ১৪:০৫

৮২ শতাংশ ব্যবসায়ী বর্তমান কর হারকে ‘অন্যায্য’ ও ব্যবসার উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় বাধা বলে মনে করেন। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) পরিচালিত এক সমীক্ষায় এমন চিত্র উঠে এসেছে।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে আয়োজিত এক সংলাপে সিপিডি এ তথ্য প্রকাশ করে। করপোরেট কর ও ভ্যাট সংস্কার শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে সিনিয়র গবেষক মো. তামিম আহমেদ।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে ৭৯ শতাংশ কর কর্মকর্তাদের জবাবদিহির অভাবকে বড় সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ৭২ শতাংশ বলেছেন, কর প্রশাসনে দুর্নীতি তাদের জন্য প্রধান প্রতিবন্ধকতা। এছাড়া সম্পূর্ণ ডিজিটাল কর জমা দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকাও ব্যবসায়ীদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উঠে এসেছে।

ঢাকা ও চট্টগ্রামে অবস্থিত ১২৩টি প্রতিষ্ঠানের ওপর পরিচালিত এ সমীক্ষায় আরও দেখা যায়, ৬৫ শতাংশ ব্যবসায়ী নিয়মিত কর দাবিকে কেন্দ্র করে কর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। অনেক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন, যথাযথ ব্যাখ্যা বা পূর্বাভাস ছাড়াই কর কর্মকর্তারা অনেক সময় ইচ্ছেমতো কর আরোপ করেন। তাদের মতে, এসব অনুশীলন করের অঙ্কের বাইরে গিয়ে অদৃশ্য চাপ তৈরি করে, যা ব্যবসার জন্য আরও বেশি ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়।

ভ্যাট সংক্রান্ত আরেকটি সমীক্ষায় ব্যবসায়ীরা বহুমাত্রিক ভ্যাট হারের জটিলতাকে প্রধান বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। অংশগ্রহণকারী ৭৩ দশমিক ৫ শতাংশ ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, জটিল ভ্যাট আইন তাদের জন্য বড় প্রতিবন্ধকতা। এ ছাড়া অস্পষ্ট ভ্যাট নীতিমালা, কর কর্মকর্তাদের সীমিত সহযোগিতা, প্রশিক্ষণ ও সচেতনতার ঘাটতি, পণ্য ও সেবার শ্রেণিবিন্যাসে জটিলতা এবং উচ্চ অনুবর্তন ব্যয় ব্যবসায়ীদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এন্টারপ্রাইজ সার্ভের কাঠামো অনুসরণ করে পরিচালিত এ ভ্যাট সমীক্ষায় ঢাকা ও আশপাশের জেলাসহ মোট ৩৮৯টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।

অনুষ্ঠানে সাবেক অর্থ সচিব সিদ্দিকুর রহমান বলেন, প্রবন্ধে ৬১টি সুপারিশ করা হয়েছে। ব্যক্তির অনলাইন রিটার্ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কর্পোরেটের ক্ষেত্রে দ্রুত বাস্তবায়ন করা দরকার। শিক্ষা ও শিক্ষার ব্যবসা আলাদা করে করের চিন্তাভাবনা করা যেতে পারে। সুপারিশে বলা হয়েছে, করপোরেট ট্যাক্স কাঠামো এমনভাবে সংস্কার করতে হবে যাতে রপ্তানিমুখী ও অরপ্তানি উভয় খাতের জন্য আইনগত করহার ১৫ শতাংশের নিচে না থাকে। এটা বাস্তবায়নযোগ্য বলে মনে করি।

আলোচনায় ট্যাক্স বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ এইচ মাহবুব সালেকিন বলেন, কর অফিসে দুর্নীতি একটু বেশি। যদি আমাদের মামলাগুলো দ্রুত ও স্বচ্ছতার সঙ্গে সমাধান করা যেতো তাহলে রাজস্ব আহরণ বেশি হতো। তাহলে বিদেশি সাহায্যের ওপর নির্ভর করা লাগতো না। এনবিআর চেয়ারম্যানের এ বিষয়ে আন্তরিকতা দেখা গেছে।

অন্যদিকে ভ্যাট বিভাগের প্রথম সচিব মশিউর রহমান বলেন, আগামী ১০ বছরের রাজস্ব কৌশলপত্র ঘোষণা করা হয়েছে। ভ্যাটের আওতায় বাড়ানো ফোকাস করতে পারলে দীর্ঘমেয়াদে ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব। তখন ভ্যাট রেট নিয়ে যে অভিযোগগুলো কমে যেতো। এই মুহূর্তে ভ্যাট রেট কমালে রাজস্ব আহরণের সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]