পাবনার চাটমোহরে কৃষক দল নেতার কারখানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভেজাল দুধ, কেমিক্যাল, সয়াবিন তেলসহ ভেজাল দুধ তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী।
সোমবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের নটাবাড়িয়া প্রাইমারি স্কুলসংলগ্ন বিশিপাড়া এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।
এ সময় ভেজাল দুধ তৈরির কারবারি ইউনিয়ন কৃষক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মোমিন ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যান। গভীর রাত পর্যন্ত চলা এ অভিযানে থানা পুলিশ ও আনসার সদস্যরা অংশ নেন।
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে সবার অগোচরে নটাবাড়িয়া বিশিপাড়া এলাকায় বিলচলন ইউনিয়ন কৃষক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মোমিন তার বাড়ির উল্টোদিকে একটি টিনের ঘর ভাড়া নিয়ে সয়াবিন তেল, কেমিক্যালসহ নানা উপকরণ দিয়ে নকল দুধ তৈরি করে আসছিলেন।
প্রতিদিন অর্ধশতাধিক মণ ভেজাল দুধ তৈরি করে তিনি উপজেলার বিভিন্ন দুধ সংগ্রহ কেন্দ্রে বিক্রি করতেন। বিষয়টি এলাকার অনেকেই জানার পরেও প্রভাবশালী ও দলীয় পরিচয়ের কারণে কেউ মুখ খোলার সাহস পায়নি।
বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুসা নাসের চৌধুরী পুলিশ ও আনসার সদস্যের নিয়ে সোমবার রাত ১০টার দিকে আব্দুল মোমিনের সেই ভেজাল দুধের কারখানায় অভিযান চালান।
এ সময় প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান আব্দুল মোমিন ও তার সহযোগীরা।
অভিযানে ক্যানভর্তি প্রায় ২০ মণ নকল দুধ, সয়াবিন তেল, কেমিক্যাল, মিক্সার গ্রাইন্ডারসহ বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন ইউএনও মুসা নাসের চৌধুরী।
এদিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (মঙ্গলবার দুপুর ৩টা) থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।
বিষয়টি নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, কেন আমরা মুখ খুলি না, এবার বুঝতে পেরেছেন? এত বড় অপরাধ করার পরেও অভিযুক্ত এলাকায় ঘোরাফেরা করছে, অথচ পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা মুখ খুলে কি বিপদে পড়ব?
দলীয় পরিচয় নিশ্চিত করে অভিযুক্ত কৃষক দল নেতা আব্দুল মোমিন যুগান্তরকে বলেন, ভাই এগুলো সব ভুয়া। আমি আপনাদের ডাকব। সবাইকে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করব। সেখানে অনেকেই থাকবে। সামনাসামনি কথা হবে আপনাদের সঙ্গে। এটা যে সবকিছু বানোয়াট, ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে, এসব বিষয়ে আপনাদের বলব।
চাটমোহর থানার ওসি মনজুরুল আলম যুগান্তরকে বলেন, ইউএনও মহোদয় যেহেতু আটক করেছে, উনি যেহেতু নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সেহেতু পরবর্তী ব্যবস্থা উনিই নেবেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুসা নাসের চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, কারখানা থেকে ভেজাল দুধ ও দুধ তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এসএন/রুপা