শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা উল্লেখ করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইসহাক আহমেদ অন্তরকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

গতকাল রোববার (১৭ আগস্ট) জেলা ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম খান পাঠান (প্রান্ত) স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তাকে সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ইসহাক আহমেদ অন্তরকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত জেলা ছাত্রদলের সভাপতি অনিক মাহবুব চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক শামছুল হুদা শামীম অনুমোদন করেছেন। এছাড়া, ছাত্রদলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তার সঙ্গে কোনো ধরনের সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার মোহনগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জামিউল ইসলাম রাকিব বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ আগস্ট ইসহাক আহমেদ নিজের ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট দেন, যেখানে তিনি লিখেন ‘জন্ম অথবা মৃত্যুর কোনো বিশেষত্ব নেই, মুখ্য হলো মানুষের হৃদয় জয় করা ‘শুভ জন্মদিন দেশমাতা, বিনম্র শ্রদ্ধা জাতির পিতা...।’ পোস্টটি নজরে এলে ১৭ আগস্ট জেলা ছাত্রদল তাকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।

তবে ইসহাক আহমেদ দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে বরং ফেসবুকে আরও একটি পোস্ট দিয়ে স্বেচ্ছায় দল থেকে অব্যাহতি নেওয়ার ঘোষণা দেন। এরপরই তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

বহিষ্কৃত ইসহাক আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তার ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন ‘আমার ব্যক্তিদর্শন, মুক্তচিন্তা, অহিংসা ও ভিন্নমত পোষণের মানসিকতা যদি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের দৃষ্টিতে শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দায়িত্বে অবহেলা হয় তবে আমি আমার সকল রাজনৈতিক পদ ও দায়িত্ব থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিলাম। যাদের আত্মত্যাগ, সুযোগ্য নেতৃত্ব ও পাহাড়সম নিরলস প্রচেষ্টায় আজকের বাংলাদেশ তারা যেকোনো দলের, ধর্মের, বর্ণের, জাতির, শ্রেণির বা অঞ্চলের হোক না কেন, তাদের সকলের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা বহমান। আমি আমার অবস্থান থেকে বাংলাদেশের, দলের ও নির্যাতিত মানুষের পাশে অতীতের মতো ভবিষ্যতেও থাকবো... ইনশাআল্লাহ।’

এ বিষয়ে মোহনগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জামিউল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে এ ধরনের পোস্ট দেওয়া সম্পূর্ণরূপে দলের আদর্শ ও শৃঙ্খলার পরিপন্থী। তাকে শোকজ করা হয়েছিল, কিন্তু বিনয়ের সঙ্গে জবাব না দিয়ে উল্টো ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছে। তাই তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলের সিদ্ধান্তই এখানে চূড়ান্ত বলে বিবেচিত।’