ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন টকশোতে সম্প্রতি অংশ নিয়েছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করিম। অনুষ্ঠানে খালেদ মুহিউদ্দীন তার কাছে জানতে চান আপনারা দল কি চাঁদা নেয়, সেখান থেকে ভাগ নেন? জবাবে ফয়জুল করিম বলেন, তারা চাঁদা নেন না, দেন।
আপনার পেশা কী, রাজনীতি নাকি অন্য কিছু– এমন প্রশ্নের জবাবে ফয়জুল করিম বলেন, আমার মূল পরিচয় আমি একজন মুসলমান। মুসলমানের কাজ হলো দাওয়াত। গোটা মানবজাতির কাছে দাওয়াত দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। এক কথায় যেহেতু আমি মুসলমান ইসলাম পালন করা আমার দায়িত্ব।
তিনি বলেন, ইসলামের ভেতরে যা কিছু আছে তা আমি পালন করি। যেমন- নামাজ আছে, রোজা আছে, হজ আছে, যাকাত আছে, কলেমা আছে ও ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করার ব্যবস্থা আছে। মানুষকে সেবা করা, অন্যায়কে মোকাবিলা করা ন্যায়কে প্রতিষ্ঠিত করা। অর্থাৎ ইসলামের মধ্যে যত কাজ তা প্রতিষ্ঠিত করা একজন মুসলমানের কাজে। সেই হিসাবে আপনি আমাকে একজন মুসলমান বলতে পারেন। মুসলমানের মধ্যে ব্যবসা আছে। যেমন আমি একজন ব্যবসায়ী। আমার একটি কোম্পানি রয়েছে। আমার ব্রিকস ফিল্ড আছে। আমি ব্যবসায় সময় দিই। আমি সময়কে ভাগ করে নিই। পরিবারকেই সময় দিই। অধিকাংশ সময় আমরা দাওয়াতি কাজে ব্যস্ত থাকি। প্রতি বছর আমাদের সময়সূচি বের হয়। আমরা কোন সময় কোথায় থাকব তা আমাদের সবাই জানে।
সঞ্চালক প্রশ্ন করেন, আপনারা যে রাজনৈতিক দল তৈরি করেছে সেটা কি কোনো চাঁদা নেয়। সেই চাঁদা থেকে আপনারা কোনো ভাগ পান?
এটি মারাত্মক প্রশ্ন উল্লেখ করে মুফতি ফয়জুল করিম বলেন, আমরা দিই, নেই না। এ বছর যে সম্মেলন হয়েছে (২৮ জুনের মহাসমাবেশ) আমাকে এক লাখ টাকা দিতে হয়েছে। আমাদের আমিরকেও এক লাখ টাকা দিতে হয়েছে। নিজের টাকায় গিয়েছি এবং নিজের টাকায় এসেছি। শুধু আমি না, সবাই।
অনেকেই প্রশ্ন করেছেন যে, আপনাদের সম্মেলনে ৫০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সঞ্চালকের এমন কথার জবাবে তিনি বলেন, সম্মেলনে ৫০ লাখ না, কয়েক কোটি টাকা খরচ হয়েছে। সবাই এ টাকা দিয়েছেন। প্রত্যেকে নিজের টাকায় এসেছেন, নিজের টাকা দিয়ে খেয়েছেন। আবার নিজের টাকায় চলে গেছেন।
ফয়জুল করিম বলেন, মসজিদে আমরা যারা নামাজে যাই, আমাদের সামনে একটা বাক্স আসে। এ ব্যাপারে কাউকে সমালোচনা করতে শুনেছেন? মন্দিরে টাকা দেওয়া হয় না, গির্জায় টাকা দেওয়া হয় না, প্যাগোডায় টাকা দেওয়া হয় না? সারা দুনিয়ায় চ্যারিটি এভাবেই চলে।
তিনি উপস্থাপককে বলেন, আপনি যদি আমাকে ১০ টাকা হাদিয়া দেন আর আমি যদি জোর করে নিই- এই দুটার মধ্যে নিশ্চয়ই পার্থক্য আছে।
ভক্তদের দান বা টাকা দেওয়ার প্রশ্নের জবাবে ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির বলেন, একটি হলো ব্যক্তিগত, অন্যটি দলকে দেয়। যদি কেউ ব্যক্তিগত হাদিয়া দেয় সেটা আমরা গ্রহণ করি। কিন্তু মাদ্রাসা, মসজিদ ও সংগঠনের জন্য যে চাঁদাগুলো দেওয়া হয় ওই টাকার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। ব্যক্তিগত হাদিয়া ও সংগঠনকে দেওয়া টাকার মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য।
ডিএম /সীমা