36038

05/12/2025 ‘থ্যালাসেমিয়া রোগীর সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে কর্মপরিকল্পনা জরুরি’

‘থ্যালাসেমিয়া রোগীর সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে কর্মপরিকল্পনা জরুরি’

স্বাস্থ্য ডেস্ক

৭ মে ২০২৫ ১৮:৩৬

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, ‘আগামী ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ জরুরি।

বুধবার (৭ মে) সকালে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের অডিটোরিয়ামে আন্তর্জাতিক থ্যালাসেমিয়া দিবস-২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতাকালে একথা বলেন তিনি।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসার জন্য ২০-৩০ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, এই রোগে আক্রান্তের ব্যয় উদ্বৃত্ত নেই। পরিসংখ্যান তথ্য মতে, দেশে ১০-১১ শতাংশ থ্যালাসেমিয়া বাহক। এর ১ শতাংশ যদি রোগী হয়, তার জন্য দুই থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা চিকিৎসা খরচ হবে। এই ব্যয়ের উদ্বৃত্ত তৈরি করা বড়ই জটিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনসচেতনতার মাধ্যমে এই ব্যয়কে আমরা কমিয়ে আনতে পারি।’

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা খুবই জরুরি। সচেতনতা ও পর্যাপ্ত স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া রোগ নির্ণয় করে। এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার কমিয়ে আনা যেতে পারে। বিটা থ্যালাসেমিয়া বাহক যদি না জেনে আরেকজন বাহককে বিয়ে করেন, তাহলে তাদের সন্তান গুরুতর থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মাতে পারে। এটি প্রতিরোধে তাই ব্যক্তি পর্যায়ের জনসচেতনতা প্রয়োজন।

ব্যয়বহুল এ রোগ সম্পর্কে বিবাহ নিবন্ধনকারী কাজীদের প্রশিক্ষিত করা, ধর্মীয় নেতা ও স্কুলের শিক্ষকদের মাধ্যমে সামাজিক সচেতনতা তৈরি এবং বিভিন্ন ফোরামে বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করার বিষয়ে জনমত তৈরিতে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, থ্যালাসেমিয়া বাহক হওয়াতে কোনো সমস্যা নেই। কেউ বাহক হলেও একদম স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবে। বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমে দুজন বাহক আবদ্ধ হলে সন্তানের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। যার ফলশ্রুতিতে প্রায় দুই হাজার থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার পারিবারিক বা রাষ্ট্রীয় খরচের দায় তৈরি হয়ে যায়। এই খরচের দায় থেকে পরিত্রাণ পেতে উপায় হিসেবে সবাইকে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিজের অবস্থা জানার আহবান জানান তিনি। এসময় তিনি নিজের রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া বিষয়ক সচেতনতা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউটের ম্যানেজমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. একেএম আজিজুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউটের পেডিয়াট্রিক মেডিসিন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান

প্রফেসর ডা. মো. সেলিমুজ্জামান, জেনফার বাংলাদেশের জেনারেল ম্যানেজার ডা. আরেফিন এবং বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কোঅর্ডিনেটর প্রফেসর ডা. মো. মনির হোসেন।

স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ডা. মো. মাহবুবুল হক।

১৯৯৪ সাল থেকে থ্যালাসেমিয়া রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে দিবসটি বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে। ১৯৯৮ সাল থেকে বাংলাদেশে এ রোগের চিকিৎসা শুরু হয় শিশু হাসপাতালে ( বর্তমান নাম বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট )।

এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘থ্যালাসেমিয়ার জন্য সামাজিক ঐক্য গড়ি, রোগীর অগ্রাধিকার নিশ্চিত করি’।

এর আগে আন্তর্জাতিক থ্যালাসেমিয়া দিবস-২০২৫ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউটের আয়োজনে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]