৮ বিভাগে ১৩ হাজার কোটি টাকার ‘স্পোর্টস হাব’, কী কী থাকছে
প্রকাশিত:
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:২৯
আপডেট:
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:৫৩

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। দেশের আটটি বিভাগে ‘স্পোর্টস হাব’ বা স্পোর্টস ভিলেজ স্থাপনের জন্য বিশদ রূপরেখা প্রকাশ করেছে মন্ত্রণালয়। গত এপ্রিলেই এই মহাপরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছিলেন যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশের খেলাধুলার পরিকাঠামো এক নতুন যুগে প্রবেশ করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রতিটি স্পোর্টস হাব নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১,৬৬৪ কোটি টাকা। সেই অনুযায়ী দেশের আটটি বিভাগে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মোট ব্যয় হবে ১৩,৩১২ কোটি টাকা।
প্রকল্প বাস্তবায়নের অর্থায়নে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) সঙ্গে ইতোমধ্যেই আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে আসিফ মাহমুদ বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই একটি কেন্দ্রীয় স্পোর্টস ভিলেজের পরিকল্পনা করছিলাম, যেটা বিশ্বের উন্নত ক্রীড়া দেশগুলোতে আছে। চীনের উদাহরণ আমাদের সামনে ছিল। পরে ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যারের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের সঙ্গে আলোচনা হয়। তারা আমাদের আর্থিক সহায়তা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।”
এদিকে রোবববার (১৪ সেপ্টেম্বর) যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় স্পোর্টস হাবের নকশায় দেখায়, অত্যাধুনিক সব সুবিধা রেখে ইনডোর ও আউটডোর গেমের জন্য মাঠের পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। যেখানে থাকবে খেলোয়াড়দের জন্য আবাসন ব্যবস্থাও।
কী থাকছে প্রতিটি স্পোর্টস হাবে?
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের খসড়া নকশায় প্রতিটি হাবে থাকবে আধুনিক সব সুবিধা। ইনডোর ও আউটডোর উভয় খেলার জন্য অবকাঠামো, প্রশিক্ষণ সুবিধা, খেলোয়াড়দের জন্য আবাসন ব্যবস্থা, প্রশাসনিক ভবন এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা।
১. হাবের রোড, সীমানা প্রাচীর, গেট, ড্রেন এবং ইলেক্ট্রিক পোলের জন্য ৫০ একক জায়গা ধরা হয়েছে। যেখানে খরচ ধরা হয়েছে ১০০ কোটি টাকা।
২. স্পোর্টস হাবে আলাদা করে থাকবে হকি স্টেডিয়াম। যেটার জন্য ২৫৭২৫ স্কোয়ার মিটার জায়গা ও ১৫০ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে।
৩. হাবের সবচেয়ে বড় অংশ জুড়ে থাকবে অলিম্পিক স্টেডিয়াম। যা অনেকটা জাতীয় স্টেডিয়ামের মতোই। যেখানে ফুটবল মাঠ ও অ্যাথলিটের সকল সুযোগ সুবিধা থাকবে। যেমন: স্ট্যান্ডার্ড ট্র্যাক, লং এন্ড ত্রিপল জাম্প, ওয়াটার জাম্প, জ্যাভেলিন থ্রো, হ্যামার থ্রো, হাই জাম্প, প্র্যাকটিস ট্র্যাকসহ ইত্যাদি সুবিধা থাকবে। অলিম্পিক স্টেডিয়ামের জন্য সবচেয়ে বেশি ৪৪ হাজার ৫৫৪ স্কয়ার মিটার জায়গা এবং ৪০০ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে।
৪. হাবে থাকবে ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। যেখানে ইনডোর প্র্যাকটিসের সুবিধাও থাকবে। যার জন্য ২৪ হাজার ১৪৪ স্কয়ার মিটার ও ৭৫ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে।
৫. হাবে থাকবে ১২ তলা বিশিষ্ট আবাসন ব্যবস্থা। যার জন্য ৪৫০০ স্কয়ার মিটার জায়গা ও ১৫০ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে।
৬. ১৪৬৭০ স্কয়ার মিটার জায়গা জুড়ে থাকবে সুইমিং পুল কমপ্লেক্স। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫০ কোটি টাকা।
৭. ৩০০০ স্কয়ার জায়গা জুড়ে থাকবে শুটিংয়ের ইনডোর ও আউটডোর গ্রাউন্ড। যার খরচ ধরা হয়েছে ২০ কোটি টাকা।
৮. লন বল ও লন টেনিস কোর্টের জন্য ৩০ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। আর জায়গা ধরা হয়েছে ১০ হাজার স্কয়ার মিটার।
৯. অলিম্পিক স্টেডিয়ামের সমান খরচ ধরা হয়েছে মাল্টিস্টোরিড স্পোর্টস কমপ্লেক্সের। ৬ তলা বিশিষ্ট ১১ হাজার স্কয়ার মিটারের এ বিল্ডিংয়ে থাকবে বক্সিং, রেস্টলিং, তায়কোয়ান্দো, জুডো, কারাতে, ওয়েট লিফটিং, জিমন্যাস্টিক, ব্যাডমিন্টন, টেবল টেনিস, ভলিবল, আর্চারি, হ্যান্ডবল, কাবাডিসহ আরও অনেকগুলো ইনডোর স্টেডিয়ামের সুবিধা।
১০. ৪৪০০ স্কয়ার মিটার জুড়ে থাকবে ৪ তলা বিশিষ্ট প্রসাশনিক ভবন। যার খরচ ধরা হয়েছে ১৫ কোটি টাকা।
১১. ৮৭০ স্কয়ার মিটারের বাস্কেটবল স্টেডিয়ামের খরচ ধরা হয়েছে ১০ কোটি টাকা।
১২. ১২ স্কয়ার জুড়ে থাকবে পার্কিং ও অন্যান্য সুবিধা। যেখানে খরচ হতে পারে ৫০ কোটি টাকা।
এর বাইরে বিদ্যুত ব্যবস্থা ও হাবের পরামর্শ সুবিধা নেয়ার পেছনে খরচ ধরা হয়েছে ১১৪ কোটি টাকা।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: