বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে আগস্ট ২০২৫, ১৩ই ভাদ্র ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


গর্ভপাত পরবর্তী রক্তস্রাব: নিফাস, হায়েজ নাকি ইস্তেহাজা?


প্রকাশিত:
২৮ আগস্ট ২০২৫ ১৭:৫১

আপডেট:
২৮ আগস্ট ২০২৫ ২১:৫৯

ছবি সংগৃহীত

ইসলামি শরিয়তে গর্ভপাতের পর যে রক্তপাত হয়, তার বিধান নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে। এই রক্তস্রাবকে কখন নিফাস, কখন হায়েজ (ঋতুস্রাব), আর কখন ইস্তেহাজা (অসুস্থতাজনিত রক্ত) হিসেবে গণ্য করা হবে, তা জানা জরুরি। কারণ, এই তিন ধরনের রক্তপাতের জন্য নামাজ, রোজা ও অন্যান্য ইবাদতের বিধান ভিন্ন ভিন্ন হয়।

গর্ভপাত ও রক্তস্রাবের প্রকৃতি

গর্ভপাতের পর যে রক্তপাত হয়, তার বিধান নির্ভর করে গর্ভপাতকৃত ভ্রূণের আকৃতির ওপর। যদি ভ্রূণে কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ (যেমন হাত, পা, মাথা ইত্যাদি) স্পষ্টভাবে গঠিত হয়ে থাকে, তাহলে পরবর্তী রক্তস্রাবকে নিফাস হিসেবে গণ্য করা হয়। কিন্তু যদি শুধুমাত্র একটি ছোট গোশতের টুকরা বের হয় এবং তাতে কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দেখা না যায়, তাহলে এই রক্তকে নিফাস ধরা হবে না। কারণ এটি নিফাসের শর্ত পূরণ করে না।

তাহলে এই ধরনের রক্তপাতের ক্ষেত্রে বিধান কী হবে? এর হুকুম নির্ভর করে গর্ভপাতের আগে নারীর পবিত্রতার (রক্তমুক্ত অবস্থা) সময়ের ওপর।

রক্তস্রাবের হুকুম ও শ্রেণিবিভাগ

১. হায়েজ (ঋতুস্রাব): যদি গর্ভপাতের আগে আপনি কমপক্ষে ১৫ দিন রক্তমুক্ত বা পবিত্র অবস্থায় থাকেন, তাহলে গর্ভপাতের পরবর্তী রক্তস্রাবকে হায়েজ (মাসিক) হিসেবে ধরা হবে। এই অবস্থায় নামাজ ও রোজা থেকে বিরত থাকতে হবে। হারানো রোজাগুলো পরে কাজা করতে হবে, কিন্তু হারানো নামাজের জন্য কাজা করা লাগবে না।

২. ইস্তেহাজা (অসুস্থতার রক্ত): যদি গর্ভপাতের আগে আপনার পবিত্র থাকার সময় ১৫ দিনের কম হয়, তাহলে পরবর্তী রক্তস্রাবকে ইস্তেহাজা বা অসুস্থতাজনিত রক্তপাত হিসেবে গণ্য করা হবে। এই অবস্থায় আপনি সম্পূর্ণ পবিত্র হিসেবে গণ্য হবেন। নামাজ ও রোজা চালিয়ে যাওয়া আপনার জন্য ফরজ। যদি ভুলবশত নামাজ বা রোজা ছেড়ে দেন, তাহলে পরে তা কাজা করে নিতে হবে।

পরামর্শ
১. গর্ভপাতের পর রক্তপাত শুরু হলে, প্রথম কাজ হলো গর্ভপাতের আগে আপনার পবিত্রতার সময়কালটি মনে করার চেষ্টা করা। এর ওপরই আপনার পরবর্তী করণীয় নির্ভর করছে।

২. যদি আপনি নিশ্চিত হতে না পারেন যে, রক্ত হায়েজ নাকি ইস্তেহাজা—এরকম সন্দেহজনক অবস্থায় নামাজ বন্ধ না রেখে চালিয়ে যাওয়াই উত্তম। কারণ, ইস্তেহাজার অবস্থায় নামাজ ছেড়ে দেওয়া যায় না।

৩. জটিল কোনো পরিস্থিতি হলে স্থানীয় নির্ভরযোগ্য কোনো আলেম বা ফকিহের সাথে পরামর্শ করে সঠিক বিধান জেনে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক জ্ঞান অর্জন ও তা মেনে চলার তাওফিক দিন।

(বাদায়েউস সানায়ে: ১/১৬১; আলমুহিতুল বুরহানি: ১/৪৭০; ফাতহুল কাদির ১/১৬৫; আলমুজতাবা, জাহেদি: ১/১৪২; আদ্দুররুল মুখতার: ১/৩০২)


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top