সামনের কাতার পূর্ণ না করে পেছনে দাঁড়ালে নামাজ হবে?
প্রকাশিত:
১২ জুন ২০২৫ ১৮:২৫
আপডেট:
১৩ জুন ২০২৫ ২২:৪২

প্রশ্ন: মসজিদে কোনো কোনো মুসল্লিকে দেখা যায়, তারা জামাতে নামাজ পড়ার সময় সামনের কাতার পূর্ণ না করেই পেছনের কাতারে দাঁড়িয়ে যায়। তাদের এই কাজ কি সঠিক? এতে কি কোনো অসুবিধা আছে?
উত্তর: সামনের কাতার পূর্ণ না করে পেছনের কাতারে দাঁড়ানো নাজায়েজ। হাদিস শরীফে সামনের কাতার ফাঁকা না রেখে কাতারগুলো একেক করে পূর্ণ করে দাঁড়ানোর ব্যাপারে অনেক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে এবং এ নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের ওপর হুঁশিয়ারিও উচ্চারিত হয়েছে।
এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, জাবের ইবনে সামুরা রা. বলেন– রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে এলেন। অতঃপর বললেন, তোমরা কি সেইভাবে কাতারবদ্ধ হবে না, যেভাবে ফেরেশতারা তাদের রবের সামনে কাতারবদ্ধ হন?
আমরা বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ, ফেরেশতারা কীভাবে তাদের রবের সামনে কাতারবদ্ধ হন? তখন তিনি বললেন, তারা সামনের কাতারগুলো আগে পূর্ণ করেন এবং কাতারে মিলে মিলে দাঁড়ান। (সহিহ মুসলিম, হাদিস ৪৩০)
আরেক হাদিসে এসেছে, আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত– রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাহাবীদের মধ্যে কাউকে কাতারের পেছনে দেখতে পেলেন। তখন তিনি বললেন, তোমরা সামনে এগিয়ে আসো এবং আমার অনুসরণ করো। তোমাদের পেছনের (কাতারের) লোকেরা যেন তোমাদের অনুসরণ করে। এক শ্রেণির লোক থাকবে, যারা সবসময় নামাজে পেছনে থাকবে। আল্লাহ্ও তাদেরকে (তার রহমত ইত্যাদি থেকে) পেছনে রাখবেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস ৪৩৮)
আরেক হাদিসে এসেছে, আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন– তোমরা সামনের কাতার পূর্ণ কর। তারপর এর পরের কাতার। কাতারে অপূর্ণতা থাকলে তা শেষের কাতারে থাকবে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ৬৭১)
তাই সামনের কাতার ফাঁকা রেখে পেছনের কাতারে দাঁড়ানো যাবে না। সামনের কাতার পূর্ণ হলেই কেবল পেছনের কাতারে দাঁড়াবে।
তাছাড়া বিশেষভাবে প্রথম কাতারে নামাজ পড়ার সওয়াবও অনেক বেশি।
হাদিস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন– অর্থাৎ আজান দেওয়া ও প্রথম কাতারে নামাজ পড়ায় কী (ফযীলত) রয়েছে তা যদি মানুষ জানত এবং তা হাসিল করার জন্য লটারি ছাড়া কোনো গত্যন্তর না থাকত, তাহলে তারা লটারির মাধ্যমে হলেও তা হাসিল করত। (সহিহ বুখারী, হাদিস ৬১৫)
অতএব প্রথম কাতারে জায়গা থাকা সত্ত্বেও পেছনে দাঁড়ানো নাজায়েজ হওয়ার পাশাপাশি সওয়াব অর্জনের প্রতি বড় উদাসীনতার আলামতও বটে।
সূত্র: সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ৬৬৬; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১১৯; বাস্তুল কাফ্ ফী ইতমামিছ্ ছফ্ (আলহাবী লিল ফাতাবী), সুয়ূতী ১/৬৮; রদ্দুল মুহতার ১/৫৭০
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: