শনিবার, ২রা আগস্ট ২০২৫, ১৮ই শ্রাবণ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


কুরআন হাদীসের আলোকে হাঁচি-কাশিতে সংযম রক্ষা করার নিয়ম


প্রকাশিত:
৩০ মার্চ ২০২০ ২৩:১৫

আপডেট:
২ আগস্ট ২০২৫ ০৮:১২

ফাইল ছবি

হাঁচি-কাশি মানুষের স্বাভাবিক প্রকৃতি। নানান কারণে হাঁচি-কাশির প্রয়োজন পড়তে পারে মানুষের। হাঁচি আটকানোর কোনো উপায় নেই; অবশ্য এটার দরকারও নেই। কারণ হাঁচি দেওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কিছু নয়, বরং উপকারী। হাঁচির মাধ্যমে মানুষের ফুসফুসে জমে থাকা রোগজীবাণু বের হয়ে যায়। মাথার ভেতরে জমে থাকা অপ্রয়োজনীয় শ্লেষা বের হয়ে যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানিরা বলছেন, মানুষ একবার হাঁচি দিলে শরীর থেকে এক লক্ষ জীবাণু বেরিয়ে যায়। ক্ষতিকর রোগজীবানু ও সংক্রামক ব্যাধি হাঁচির সাথে বাষ্পাকারে বেরিয়ে যায়। ফলে মাথায় আরামবোধ হয়।

মানুষের শরীরের অনেক ক্ষতিকর উপাদান শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে নাকে এসে জমা হয়। যার মাধ্যমে মানুষের ফুসফুস আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। হাঁচির সাথে মানুষের নাকে জমে থাকা জীবাণুগুলো বের হয়ে যায়। শরীর হয়ে যায় হালকা ও স্বাভাবিক।

এব্যাপারে হাদিসের ভাষ্য হচ্ছে- হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন- ‘হাঁচিদাতাকে আল্লাহ পছন্দ করেন আর হাই-তোলোকে অপছন্দ করেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৫০৫)
তবে হাঁচি দিতে হবে নিয়ম-নির্দেশনা মেনে, সুন্নাহসম্মত পদ্ধতিতে। কেননা সুন্নাহ বা রাসূল (সা.)-এর অভ্যাস ও কর্ম সর্বকালের সব মানুষের জন্য সমান উপকারী ও স্বাস্থ্যসম্মত। হাঁচি দেওয়ার ক্ষেত্রে সুন্নাহসম্মত পদ্ধতির বর্ণনা এই হাদিসে পাওয়া যায়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন- ‘হাঁচি-কাশির সময় রাসূল (সা.) হাত বা বস্ত্রখণ্ড দ্বারা মুখ ঢেকে নিতেন। যাতে করে হাঁচি ও আওয়াজ দমন করা যায়।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৫০২৯; তিরমিজি, হাদিস : ২৭৪৫)
হাঁচি-কাশির সময় হাত বা কাপড় দ্বারা মুখ ঢেকে রাখার উপকার হলো- যাতে মুখ থেকে নির্গত থুতু-কাশি ছিঁটে অন্যের অস্বস্তি ও ক্ষতির কারণ না হয়!

কারণ হিসাবে কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ এর বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ বলেন- ‘হাঁচি দেওয়ার সময় ঘণ্টায় প্রায় ১৬০ কিলোমিটার বেগে ফুসফুস থেকে বাতাস বের হয়ে আসে। সেই সঙ্গে শ্বাসনালি ও নাকে জমে থাকা শ্লেষ্মা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণার আকারে বা স্প্রের মতো বের হয়। হাঁচি দিলে গতির কারণেই এসব কণা সামনের প্রায় ২ মিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে। হাঁচি দেওয়া ব্যক্তির যদি কোনো রোগ থাকে; যেমন- সর্দি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাম, মাম্পস, যক্ষ্মা, জলবসন্ত, সার্স, বার্ড ফ্লু, সোয়াইন ফ্লু, ডিফথেরিয়া, করোনা ভাইরাস ইত্যাদি, তাহলে হাঁচির সঙ্গে এসব রোগের অসংখ্য জীবাণু বাতাসে বেরিয়ে আসে। মুহূর্তেই এসব জীবাণু কাছের মানুষগুলোর শরীরে ঢুকে পড়তে পারে। এ ছাড়া এসব জীবাণু বাতাসে ভেসে দূরের মানুষেও ছড়াতে পারে। তাই হাঁচি দিতে হবে সাবধানে।’

হাঁচি এলে যথাসম্ভব নাক-মুখ ঢেকে নিতে হবে। অনেকে হাত দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে হাঁচি দেন। এরূপ করলে অবশ্যই হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে। নচেৎ হাত থেকে এসব জীবাণু দরজা, জানালা, জগ, গ্লাসসহ নিত্যব্যবহার্য সব জিনিসে ছড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকে তা অন্যদের শরীরে সংক্রমিত হয়। কারও সঙ্গে হাত মেলালে হাত থেকে হাতে ছড়ায় জীবাণু। তাই সবচেয়ে ভালো হলো হাঁচির সময় রুমাল বা টিস্যু পেপার দিয়ে নাক-মুখ চেপে ধরা। সব সময় হাতের কাছে টিস্যু বা রুমাল থাকে না। সে ক্ষেত্রে হাতের কনুই বাঁকা করে তা দিয়ে নাক-মুখ ঢাকতে হবে। ফুলহাতা জামা পরা থাকলে ভালো। জামার আস্তিন টেনে হাঁচি দেওয়া যেতে পারে।

সুতরাং হাঁচি দেওয়ার ক্ষেত্রে রাসূল (সা.)-এর পদ্ধতি অনুসরণ করলে সুন্নাত অনুসরণের সওয়াবও হবে, আবার অন্যরাও ক্ষতি থেকে বেঁচে থাকতে পারবে। আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।


সম্পর্কিত বিষয়:

হাঁচি

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top