প্রধান উপদেষ্টা তার নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন: খেলাফত মজলিস
প্রকাশিত:
১৪ জুন ২০২৫ ১৮:০০
আপডেট:
১৫ জুন ২০২৫ ১৭:১৯

লন্ডনে বৈঠক শেষে তারেক রহমানের সঙ্গে যৌথ বিবৃতি দিয়ে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন বলে মন্তব্য বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের।
শনিবার (১৪ জুন) দলটির আমির মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক, সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ এবং মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ এক যৌথ বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন।
তাদের ভাষায়, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক ইতিবাচক হলেও যৌথ বিবৃতি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।’
খেলাফত মজলিসের নেতারা বলেন, ‘দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসন এবং একটি গ্রহণযোগ্য, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ তৈরিতে যেকোনো গঠনমূলক সংলাপ ও আলাপ-আলোচনাকে আমরা স্বাগত জানাই।’
তারা বলেন, ‘এ প্রেক্ষিতে গতকাল (শুক্রবার) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নির্বাচনকালীন প্রক্রিয়া, বিচারিক অগ্রগতি ও কাঙ্ক্ষিত সংস্কার নিয়ে যে আলোচনা হয়েছে, তা নীতিগতভাবে সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ।’
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ‘এর আগেও যখন প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি ঘোষণা করেন, তখন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস তা স্বাগত জানিয়েছিল। যদিও আমাদের প্রাথমিক অবস্থান ছিল— যদি প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার দৃশ্যমান অগ্রগতি নিশ্চিত করা যায়, তাহলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়াই অধিকতর বাস্তবসম্মত ও গ্রহণযোগ্য হবে।’
তারা বলেন, ‘গতকালের (১৩ জুন) আলোচনায় তারেক রহমানের পক্ষ থেকেও অনুরূপ প্রস্তাব আসা এবং প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে শর্তসাপেক্ষে ফেব্রুয়ারির সম্ভাবনা উন্মুক্ত রাখা— একটি ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত।’
গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নেতারা বলেন, ‘একটি নির্দলীয় অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দায়িত্ব হচ্ছে সব রাজনৈতিক দলের প্রতি সমান আচরণ নিশ্চিত করা। তাই কোনো একটি রাজনৈতিক দলের নেতার সঙ্গে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা তার নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের বার্তা পৌঁছে দেয়।‘
নেতারা আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি, অন্তর্র্বতী সরকারের নেতৃত্ব আগামী দিনগুলোতে আরও সতর্ক ও ভারসাম্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, যাতে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয় এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনি পরিবেশ নিশ্চিত হয়। আল্লাহ আমাদের রাষ্ট্র ও জাতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন।’
এর আগে শুক্রবার (১৩ জুন) স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক শুরু হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় (বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ৩টা) তা শেষ হয়।
এদিন বৈঠক শেষে বিকেল চারটার দিকে উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা যৌথ বিবৃতি দেন। এতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে রোজা শুরুর আগে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজনের প্রস্তাব দেন তারেক রহমান। প্রধান উপদেষ্টা তাতে সম্মত হয়ে বলেন, ‘সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে রোজার আগে (ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি) নির্বাচন দেওয়া সম্ভব।’
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: