43609

09/22/2025 স্ত্রীকে হত্যার ১১ বছর পর স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

স্ত্রীকে হত্যার ১১ বছর পর স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

আদালত প্রতিবেদক

২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:৪২

ফরিদপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী দিলরুবা বেগমকে (২০) শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে স্বামী ইমরান ফকিরের (৩৩) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এ আদেশ দেন।

রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সাজাপ্রাপ্ত ইমরান ফকির জেলার মধুখালী উপজেলার মধুখালী পৌরসভার উলুখালী মহল্লার বাসিন্দা। হত্যাকাণ্ডের শিকার তার স্ত্রী দিলরুবা একই উপজেলার মথুরাপুর দেউল এলাকার বাসিন্দা মো. দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে।

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের মে মাসে ইমরান ও দিলরুবার বিয়ে হয় পারিবারিক সম্মতিতে। বিয়ের সময় ইমরানের কোনো জীবিকার উৎস ছিল না। ইমরান তখন লেখাপড়া করতো। বিয়ের পর মেয়েকে সাধ্যমত গহনা এবং ইমরানকে একটি স্বর্ণের চেইন, একটি আংটিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র দেওয়া হয় শশুরবাড়ি থেকে। কিন্তু বিয়ের পরেই ইমরান ও তার ভগ্নিপতি আলমগীর হোসেনসহ পরিবারের লোকজন ইমরানের লেখাপড়া বাবদ এক লাখ টাকা যৌতুকের জন্য দিলরুবা ও তার বাবাকে চাপ দেন। এ টাকা না দিতে পারায় তারা বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিকভাবে দিলরুবাকে নির্যাতন করত।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় দিলরুবাকে তাড়িয়ে ইমরান অন্য জায়গায় বিয়ের প্রস্তুতিও নেন। পরে ওই বছরের ৫ আগস্ট দুপুর দেড়টার দিকে ঘরের মধ্যে মারপিট ও শ্বাসরোধ করে দিলরুবাকে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় পরদিন ৬ আগস্ট দিলরুবার বাবা মো. দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে নিজের মেয়েকে হত্যার অভিযোগ এনে জামাতা ইমরান ফকির,অন্য দুই বড় ভাই সাইফুল ফকির ও রবিউল ফকির ও ইমরানের ভগ্নিপতি আলমগীর হোসেনকে আসামি করে মধুখালী থানায় একটা হত্যা মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করে ২০১৪ সালের ১ অক্টোবর ইমরান ফকিরকে একমাত্র অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন ওই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবুল কালাম আজাদ।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গোলাম রাব্বানী ভূঁইয়া জানান, আদালতে প্রমাণিত হয়েছে যে ইমরান ফকির তার স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। তবে মামলার অন্য তিন আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। একটু দেরিতে হলেও আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। অপরাধ করলে বিচারের কাঠগড়ায় একদিন দাঁড়াতে হবে— এই রায় সেটিই প্রমাণ করে।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]