42679

09/09/2025 চন্দ্রগ্রহণের সময় নারীদের শুয়ে থাকা বা কোনো কাজ করা কি নিষেধ

চন্দ্রগ্রহণের সময় নারীদের শুয়ে থাকা বা কোনো কাজ করা কি নিষেধ

ধর্ম ডেস্ক

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:৩২

চন্দ্র-সূর্য মহান আল্লাহর অনন্য এক সৃষ্টি। পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে তিনি সূর্যকে মাধ্যম বানিয়েছেন। চাঁদের মধ্যেও রেখেছেন মানুষের নানা উপকার। চাঁদের নিজস্ব কোনো আলো নেই, সূর্য থেকে আলো গ্রহণ করেই পৃথিবীতে সে স্নিগ্ধ আলো ছড়ায়।

সেদিকে ইঙ্গিত করেই আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তিনিই সত্তা, যিনি সূর্যকে কিরণোজ্জ্বল ও চাঁদকে স্নিগ্ধ আলোয় আলোকিত করেছেন।’ (সুরা ইউনুস : ৫)

সূর্যগ্রহণ কিংবা চন্দ্রগ্রহণ ঘিরে পৃথিবীর অনেক দেশেই নানারকম ভুল ধারণা প্রচলিত রয়েছে। তবে আলেমদের মতে, এই ভুল ধারণা কিংবা কুসংস্কারের কোনো ভিত্তি নেই। গ্রহণ সম্পর্কে এমন কিছু কুসংস্কার যা অনেক দেশেই বেশ গুরুত্ব সহকারে পালন করা হয়।

আমাদের সমাজে এ রকম ধারণা প্রচলিত আছে যে, চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণের সময় নারীদের ঘর থেকে বের হওয়া, খাওয়া-দাওয়া করা, ফল বা শাকসবজি কাটা ইত্যাদি কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।

কারণ চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণের সময় গর্ভবতী নারীরা এ সব কাজ করলে গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি হতে পারে, গর্ভস্থ শিশু বিকলাঙ্গ হতে পারে তার চামড়ায় কালো দাগ লাগতে পারে ইত্যাদি।

এসব ধারণা অমূলক ও কুসংস্কার বৈ কিছু নয়। ইসলামি শরিয়তে এমন বিশ্বাসের কোনো সুযোগ নেই। সুতরাং এ জাতীয় কুসংস্কারে বিশ্বাস রাখা হারাম। বরং এগুলো এক প্রকার শিরকি চিন্তা থেকে উৎসারিত।

ইসলামপূর্ব জাহেলি যুগের মানুষের বিশ্বাস ছিল, জগতের বৃহৎ কোনো পরিবর্তনের কারণে চাঁদ এবং সূর্যের গ্রহণ লাগে। যেমন বড় কারো জন্ম, মৃত্যু কিংবা দুর্ভিক্ষের আগমন ইত্যাদির কারণে প্রকৃতিতে এমন ঘটে।

রাসুল সা. তাদের এ ভুল বিশ্বাস খণ্ডন করে বলেন,

إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ لاَ يَخْسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ وَلَكِنَّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللهِ

সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণ কারো জন্ম-মৃত্যুর কারণে হয় না, এগুলো আল্লাহর নিদর্শনাবলির দুটি নিদর্শন মাত্র। ( সহিহ বুখারি- ১০৪২)

নবীজির ছেলে ইবরাহিমের মৃত্যুর দিন সুর্যগ্রহণ হলে সাহাবিরা বলাবলি করছিলেন যে, নবীজির (সা.) ছেলের মৃত্যুর কারণেই এমনটা ঘটেছে। নবীজি (সা.) সাহাবিদের এই ধারণা সমর্থন করেননি। তিনি সাহাবিদের নিয়ে সালাতুল কুসুফ বা সূর্যগ্রহণের নামাজ আদায় করেন এবং বলেন, এটা আল্লাহর নিদর্শন, কারো জন্ম বা মৃত্যুর কারণে চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ হয় না।

দুই. চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণের সময় কি করা উচিৎ, এ ব্যাপারে হাদিসে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। রাসুলুল্লাহ সা.-এর জীবদ্দশায় একবার সূর্যগ্রহণ হলো। তখন তিনি লম্বা কেরাত ও লম্বা রুকু-সিজদার মাধ্যমে নামাজ আদায় করলেন।

এরপর বললেন- সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শনাবলির দুটি নিদর্শন মাত্র। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। যখন তোমরা তা দেখবে তখন বেশি বেশি আল্লাহকে ডাকবে (দোয়া করবে), বেশি বেশি তাকবির (আল্লাহু আকবার) বলবে, নামাজ পড়বে এবং সদকা করবে। (সহিহ বুখারি ১০৪৪)

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]