42085

09/02/2025 ফ্যাটি লিভার দূর হবে বিশেষ খাদ্যাভ্যাসে, জানুন ‘ন্যাশ ডায়েট’ সম্পর্কে

ফ্যাটি লিভার দূর হবে বিশেষ খাদ্যাভ্যাসে, জানুন ‘ন্যাশ ডায়েট’ সম্পর্কে

লাইফস্টাইল ডেস্ক

১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:১৩

ঘরে ঘরে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ফ্যাটি লিভার। অসংখ্য মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন এই স্বাস্থ্য সমস্যায়। অবশ্য তার জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী। রোজকার খাদ্যাভ্যাস, জাঙ্ক ফুডের প্রতি আসক্তি, অতিরিক্ত কাজের চাপের মতো নানা কারণেই মেদ জমছে লিভারে।

লিভারে ফ্যাট বা চর্বি কিন্তু হুট করে হয় না। দীর্ঘদিন ধরে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন একটু একটু পরে লিভারের ক্ষতি করে। এই অসুখের প্রথম ধাপ নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার। সঠিক সিদ্ধান্ত না নিলে যা পরবর্তীতে লিভার সিরোসিসের মতো জটিল রোগের কারণ হতে পারে।

লিভারে সহজে মেদ জমলেও তা সহজে অপসারণ করা যায় না। এজন্য নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া, শরীরচর্চা করতে হয়। সাম্প্রতিক কিছু গবেষণার ফল বলছে, বিশেষ এক খাদ্যাভ্যাস মেনে চললে ফ্যাটি লিভার নির্মূল হতে পারে। একে ‘নন-অ্যালকোহলিক স্টিয়েটোহেপাটাইটিস’ বা ‘ন্যাশ’ ডায়েট বলে।

ন্যাশ ডায়েট কী?
ন্যাশ বলতে ফ্যাটি লিভারের সবচেয়ে বিপজ্জনক পর্যায়কে বোঝানো হয়। এটি হলে লিভারে ভয়ানক প্রদাহ শুরু হয়, লিভারের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। কমে যায় বিপাকক্রিয়ার হার। লিভারের এই অবস্থাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ‘মেটাবলিক অ্যাসোসিয়েটেড স্টিয়েটোহেপাটাইটিস’ (ম্যাশ)।

প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগ ধরা না পড়লে লিভার সিরোসিস, লিভার ক্যানসার, এমনকি লিভার বিকল হয়ে যাওয়ারও ঝুঁকি থাকে। নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলার অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম ডায়াবেটিস, স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল। এগুলোকে একসঙ্গে মেটাবলিক সিনড্রোমও বলা হয়।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যাদের মেটাবলিক সিনড্রোম রয়েছে, তাদের ফ্যাটি লিভারের রোগ হওয়ার ঝুঁকি ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ বেশি। এই কারণেই ডায়েটের দিকে নজর দেওয়া জরুরি।

ন্যাশ ডায়েট কতটা উপকারি?
‘আমেরিকান লিভার ফাউন্ডেশন’ এবং ভারতের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ’ থেকে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে লেখা হয়েছে, ‘ন্যাশ’ ডায়েট বলতে মূলত ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যাভ্যাসকে বোঝানো হয়। এই ডায়েটে ভাজাভুজি, মসলাদার খাবারের কোনো জায়গা নেই।

ন্যাশ ডায়েটে কী খাবেন, কী খাবেন না?
ন্যাশ ডায়েটে দানাশস্য, টাটকা ফল ও সবজি, নানা ধরনের বাদাম ও বীজ, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, বিভিন্ন রকম মাছ খেতে পারবেন। এই ডায়েটে মাংস কম খাওয়ার সুযোগ রয়েছে। বিশেষত রেড মিট একবারেই খাওয়া যাবে না। খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে প্রক্রিয়াজাত খাবার। রান্না করতে হবে অলিভ অয়েলে। তবে সাধারণ মধ্যবিত্ত বাঙালি বাড়িতে অলিভ অয়েলে রান্না করা সহজ নয়, সে ক্ষেত্রে অলিভ অয়েলের বিকল্পে সামান্য ঘি বা রাইস ব্র্যান অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।

দানাশস্য হিসেবে খেতে পারেন ডালিয়া, কিনোয়া, ওটস। ময়দার বদলে রাগি বা মিলেট, জোয়ার, বাজরার রুটি খেতে পারেন। মসলার মধ্যে জিরা, জোয়ান, জায়ফল ও জয়িত্রী উপকারী। এগুলো প্রদাহনাশক।

ভূমধ্যসাগরীয় এলাকায় মরসুমি সবজি ও ফল বেশি খাওয়া হয়। স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের জন্য খেতে পারেন বাদাম ও নানা ধরনের বীজ (যেমন সূর্যমুখী, তিসির বীজ)। এছাড়া বিভিন্ন রকম ডাল, ছোলা, রাজমা রাখতে পারেন রোজকার খাদ্য তালিকায়।

এই ধরনের ডায়েটে চর্বি জাতীয় খাবার, চিনি ও কোনোরকম প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া চলবে না। খাবারে তেলের পরিমাণ রাখতে হবে খুব সামান্য।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]