41256

08/23/2025 অবৈধ মুরগির খামারের বর্জ্যে পুকুরের মাছ মরছে, চাষির মাথায় হাত

অবৈধ মুরগির খামারের বর্জ্যে পুকুরের মাছ মরছে, চাষির মাথায় হাত

জেলা সংবাদদাতা, সিরাজগঞ্জ

২৩ আগস্ট ২০২৫ ১৪:০৬

সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলাধীন বহুলী ইউনিয়নের আলমপুর বাজার এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রবিহীন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবৈধ মুরগির খামারের বর্জ্য সরাসরি পুকুরে ফেলায় মাছ মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন স্থানীয় মাছচাষি আব্দুল্লাহ খান।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সিরাজগঞ্জ সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আলমপুর বাজার সংলগ্ন পুকুরে দীর্ঘদিন ধরে মাছচাষ করে আসছিলেন তিনি। পুকুরের পাশেই মোহাম্মদ সরকার ও তার ছেলে শাকিল সরকারের একটি বড় মুরগির খামার রয়েছে। খামারের মুরগির বর্জ্য নিয়মিতভাবে পুকুরে ফেলায় মাছ মারা যাচ্ছে। স্থানীয়ভাবে বারবার নিষেধ করার পরও খামার মালিকরা তা বন্ধ করেননি বলে অভিযোগ করেন আব্দুল্লাহ খান।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মুরুব্বিদের কাছে বিচার চাওয়া হলেও খামার মালিকরা কাউকে তোয়াক্কা করেননি। পরে গত ৭ আগস্ট রাত ৮টার দিকে আলমপুর এলাকায় খোকনের ধানের চাতালের সামনে রাস্তার উপর ভুক্তভোগীকে মারধরের জন্য হামলার চেষ্টা করে অভিযুক্তরা। এসময় প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছেন ভুক্তভোগী। বর্তমানে তিনি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পুলিশের কাছে তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন।

ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহ খান বলেন, সরাসরি মুরগির বিষ্ঠা আমার পুকুরে ফেলা হচ্ছিল। আমি গ্রামবাসীকে জানিয়ে প্রতিকার না পেয়ে থানায় অভিযোগ করি। আমার প্রায় ৬ লাখ টাকার মাছ মরে পুকুরে ভেসে উঠেছে। আমি থানায় অভিযোগপত্রে কোনো টাকার পরিমাণ উল্লেখ করিনি। কেননা প্রতিদিন মাছ মরছে, আর আমার ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে।

পুকুরের মাছ মরে যাওয়ার পাশাপাশি ওই খামারটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হওয়ায় আশপাশের মানুষজন বিপাকে পড়েছেন। ওই খামারের পাশের বাড়ির গৃহিণী মনিজা খাতুন বলেন, মুরগির খামারের গন্ধে বাড়ির জানালা খুলতে পারি না। এতো মাছির যে খাবার খাওয়ায় সময় মাছি খাবারের ওপরে থাকে। বৃষ্টি হলে দুর্গন্ধ বেড়ে যায়।

অভিযুক্ত খামারের মালিক মোহাম্মাদ সরকার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি আমার জায়গাতেই মুরগির বিষ্ঠা ফেলাই। পুকুরের মাছ কিভাবে মারা গেছে, সেটি আমি শিওর না।

অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা সিরাজগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমি গিয়েছিলাম। ওই খামারের মালিককে আলাদাভাবে গর্ত করে বিষ্ঠা ফেলানোর কথা বলে এসেছি। যেন পুকুরের পানির সঙ্গে মিশে না যায়। সে ঘাস দিয়ে বিষ্ঠা আটকানো বন্ধ করেছে। এটি কখনোই সম্ভব না। খামার করার সময়ে তার পরিবেশ অধিদপ্তরে কথা বলা উচিত ছিল। পুকুরের মালিক ক্ষতিপূরণের দাবি করে থানায় জানালে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিরাজগঞ্জ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক তুহিন আলম বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না মেনে একটি মুরগির খামার করার বিষয়টি অবশ্যই আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে। কোনো অভিযোগ এসেছে কিনা, সেটি দেখতে হবে। তবে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। তাদের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসএন/রুপা

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]