দীর্ঘ ১০ বছর পর একমঞ্চেই হাজির হয়েছিলেন টলিউডের জনপ্রিয় জুটি দেব-শুভশ্রী। তাদের নতুন ছবি 'ধুমকেতু'-এর ট্রেলার লঞ্চ অনুষ্ঠানে এই দুই তারকা একসঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত হন।
সেখানেই ঘটে এক বিশেষ ঘটনা, যা দেখে মুগ্ধ হন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই। দীর্ঘদিন ধরেই দেব ও শুভশ্রীর মধ্যে কোনো ব্যক্তিগত যোগাযোগ ছিল না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তারা একে অপরকে অনুসরণ করতেন না। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় ভক্তদের মধ্যে হতাশা দেখা যায়।
তবে ট্রেলার লঞ্চের মঞ্চে এই দূরত্বের অবসান ঘটে। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক রোহন দেব ও শুভশ্রীকে প্রশ্ন করেন—‘তারা কবে একে অপরকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফলো করবেন?’ প্রশ্নটি শুনেই শুভশ্রী বলেন, “আগে ব্লক করেছিল কে?” এরপর দেব কিছু না বলেই চুপ করে যান।
তখনই নিজের ফোন বের করে দেবকে ফলো করেন শুভশ্রী। শুভশ্রী দেবকে ফলো করতেই দেবও তার ফোন বের করে শুভশ্রীকে ফলো করেন ইনস্টাগ্রামে।
শুভশ্রীকে ‘আনব্লক’ করলেন দেব, ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করলেন ছবি
এদিন মঞ্চে সঞ্চালক শুভশ্রীকে প্রশ্ন করেন, তিনি দেবকে কিছু বলতে চান কী না! উত্তরে 'চ্যালেঞ্জ' সিনেমার সেই ভাইরাল সংলাপ দিয়ে শুরু করেন অভিনেত্রী। বলেন, ‘আমার সঙ্গে বন্ধুত্ব করবে?’ হেসে ওঠেন সকলে। পাল্টা জবাবে দেব বলেন, 'কেন?' এরপরই শুভশ্রীর মুখে শোনা যায়, 'এমনি'। এরপরই একে অপরের দিকে 'বন্ধুত্বের হাত' বাড়িয়ে দেন দুজনে।
প্রায় এক যুগ পরে নজরুল মঞ্চে দুই তারকার এমন খুনসুটি দর্শকরা বেশ উপভোগ করলেও এই সবটাই নাকি ছিল ‘স্ক্রিপ্টেড’ মানে সাজানো!
'ধুমকেতু' মুক্তির পর এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন অভিনেতা দেব নিজেই। এমনকি মঞ্চে উপস্থাপক রোহন দেব ও শুভশ্রীকে যেই প্রশ্নগুলো করেছিলেন সেগুলোও ছিল দুজনেরই তৈরি করে দেওয়া।
এ বিষয়ে দেব বলেন, ‘প্রশ্নগুলো আমি ও শুভশ্রীই তৈরি করেছি। কিসের জন্য করেছি জানেন? সিনেমার জন্য। আমাদের দর্শকের জন্য। যারা দেব-শুভশ্রীকে পর্দায় আবার দেখবেন বলে এতগুলো বছর অপেক্ষা করে থাকলেন। তারাই কিন্তু আমাদের জুটি বানিয়েছেন। যার ফলাফল আপনারাও দেখতে পাচ্ছেন। শ্রীকান্তদা পর্যন্ত বলেছেন, ‘তোরা তো নৈহাটিতে গিয়েও ভাইরাল হয়ে যাচ্ছিস!’
নায়ক বললেন, ‘অনেকটা সময় পেরিয়ে এসেছি। একটা সময় আমি আর শুভশ্রী একসঙ্গে ছিলাম। তারপর অনেকটা পথ আমরা আলাদা হেঁটেছি। গত ১২ বছর ধরে তো রুক্মিণীর সঙ্গেই আছি। শুভশ্রীর সঙ্গে হয়তো তিন-চার বছর ছিলাম। ওরও জীবন বদলে গেছে।’
দেবের কথায়, আমাদের নিয়ে অনেকটা ‘নেগেটিভিটি’ ছিল। কখনও ও বলেছে, কখনও আমিও বলেছি। সেই নেতিবাচকতা মুছতে হবে— এই ভাবনা নিয়ে সেদিন আমরা মঞ্চে উঠেছিলাম। অনেক ভালো স্মৃতি রয়েছে একসঙ্গে। সেই বার্তা দেওয়া উদ্দেশ্য ছিল। সেসবই ভাগ করে নিতে চেয়েছি। যেন আমাদের অনুরাগীরাও সেই ভালো মুহূর্তগুলো, স্মৃতিগুলো উদ্যাপন করেন। এর বাইরে আর কিচ্ছু না। সেজন্যই তো প্রশ্নোত্তর পর্বের আয়োজন। এসব শুভশ্রীকেও জানানো হয়েছিল।’
দেব আরও বলেন, ওই যে ‘খাদান-সন্তান’ কিংবা পরস্পরকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনুসরণ না করা— এগুলোই তো ‘পাবলিক’ জানতে চেয়ে এসেছে এত বছর ধরে! তাই সব বলেছি প্রকৃত সত্য সামনে আনতে। যেন যাবতীয় ভুল বোঝাবুঝি মিটে যায় ওই দিন। সঙ্গে সাক্ষী থাকতে পারে অগনিত দর্শক। সকলে যেন বুঝতে পারেন, এভাবেও ফিরে আসা যায়।