রাসুল (সা.) উম্মতের কল্যাণকামী ছিলেন। তাকে উম্মতের জন্য রহমত ও কল্যাণ হিসেবে প্রেরণ করেছেন আল্লাহ তায়ালা। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে— আর আমি তো আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত হিসেবেই প্রেরণ করেছি। (সুরা আম্বিয়া, আয়াত : ১০৭)
এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমি তো আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত রহমত। (মুস্তাদরাক হাকিম, ১/৯১)
আরেক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমাকে অভিশাপকারী করে পাঠানো হয়নি, আমাকে রহমত হিসেবে পাঠানো হয়েছে। (মুসলিম, হাদিস : ২৫৯৯)
রাসুল (সা.) আল্লাহর কাছে উম্মতের জন্য নিরাপত্তা, রহমত ও কল্যাণ কামনা করেছেন সব সময়। উম্মতের নিরাপত্তার জন্য তিনি আল্লাহর কাছে তিনটি দোয়া করেছিলেন, এরম্যধ্যে দুইটি কবুল হয়েছে, অপরটি হয়নি। হাদিসে রাসুল (সা.)-এর এই দোয়া সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে—
হজরত সাদ ইবনে আবী ওয়াক্কাস (রা.) বর্ণনা করেছেন, আমি রাসুল (সা.)-এর সফরসঙ্গী ছিলাম। বনী মুআবিয়ার মসজিদের পাশ দিয়ে গমন করছিলাম আমরা। রাসুল (সা.) থামলেন। মসজিদে প্রবেশ করে দু’রাকাত নামাজ আদায় করলেন। আমিও দু’রাকাত নামাজ আদায় করলাম। নামাজের পর রাসুল (সা.) দীর্ঘক্ষণ ধরে দোয়া করলেন। তারপর বললেন—
আমি আমার প্রভু প্রতিপালকের কাছে তিনটি বিষয়ে প্রার্থনা জানালাম। প্রথমটি হচ্ছে, আমার উম্মতকে যেনো হজরত নূহের উম্মতের মতো পানিতে ডুবিয়ে মারা না হয়। আল্লাহ তায়ালা আমার এই দোয়া কবুল করেছেন। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, আমার উম্মত যেনো দুর্ভিক্ষগ্রস্ত না হয়। আল্লাহ তায়ালা আমার এই দোয়াটিও কবুল করেছেন। তৃতীয়টি হচ্ছে আমার উম্মতেরা যেন নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ বিগ্রহে লিপ্ত না হয়, আল্লাহ আমার এই দোয়াটি কবুল করেননি। (বাগবী)
আরেক বর্ণনায় হজরত আব্দুল্লাহ বিন আবদুর রহমান আনসারী বর্ণনা করেছেন, হজরত আবদুল্লাহ বিন ওমর আমাদের কাছে আসলেন এবং বললেন, রাসুল (সা.) এক মসজিদে বসে তিনটি বিষয়ে দোয়া করেছেন, যার দুটি কবুল হয়েছে, একটি হয়নি। প্রথম দোয়াটি ছিলো—
ইসলামের কোনো শত্রুকে যেনো আমার উম্মতের ওপরে বিজয়ী করা না হয়। দ্বিতীয় দোয়াটি ছিল— আমার উম্মত যেনো কখনো ব্যাপকভাবে দুর্ভিক্ষ কবলিত না হয়। এই দোয়া দুটি কবুল হয়েছে। তৃতীয়টি কবুল হয়নি। তৃতীয়টি ছিল— আমার উম্মত যেনো গৃহযুদ্ধে লিপ্ত না হয়। (বুখারি)