ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, জুলাইয়ের ত্যাগের প্রধান ও মূল লক্ষ্য ছিল দেশে যেন আর কোনো খুনি, ফ্যাসিস্ট ও অর্থ পাচারকারী তৈরি না হয়। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় দেশে চাঁদাবাজি, খুনি ও তাঁবেদার এখনো বিদ্যমান। আমি ঘৃণা জানাই সেইসব চাঁদাবাজ, খুনি ও তাবেদারদের প্রতি। বাংলার জমিন থেকে এই চাঁদাবাজ, খুনি ও তাবেদারদের উৎখাত করতেই হবে।
স্বৈরাচার পতনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে আয়োজিত গণসমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, জুলাইয়ের করুণ চিত্র ধারণ করে মানুষের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার প্রত্যয়ে আজকের দিন পালিত হচ্ছে। গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট, খুনি, গুমকারী ও পাচারকারী নির্লজ্জভাবে পালিয়েছে; আজ তার এক বছর পূর্ণ হচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ। নির্মম স্বৈরাচার উৎখাতে যে ছাত্র জনতা জীবনের মায়া ত্যাগ করে রাজপথে লড়াই করেছেন, আহত হয়েছেন, শাহাদত বরণ করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।
তিনি বলেন, আবু সাঈদ, মুগ্ধের স্মৃতি ও ইতিহাস এখনো অম্লান। তারাসহ সব শহীদের জন্য জান্নাতে উচ্চ মর্যাদা কামনা করি। যারা চোখ হারিয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, আহত হয়ে কাতরাচ্ছেন তাদের সুস্থতার জন্য দোয়া করি।
পীর সাহেব চরমোনাই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা চাঁদাবাজি করছেন, যারা বিদেশের ইচ্ছাপূরণে কাজ করছেন সেই ঘৃণ্য শত্রুদের সতর্ক করছি। দেশে অনেক মেধাবীরা জীবন দিয়েছেন, অনেক মা-বোন সংগ্রাম করেছে। দেশে কোনো চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী ও তাঁবেদারি সহ্য করা হবে না।
ইসলামী আন্দোলন আমির বলেন, যে উদ্দেশ্য ও চেতনাকে ধারণ করে জুলাইয়ে রক্ত ও জীবন উৎসর্গ করা হয়েছে তা পূরণ হয় নাই। যে অপশাসন ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনতা লড়াই করেছে তা দেশের ক্ষমতাবানদের মধ্যে এখনও বিদ্যমান। তাই আমাদের যুদ্ধ শেষ হয় নাই। আমরা রাজপথও ছাড়ি নাই। দেশ কারো কাছে ইজারা দেওয়া হয় নাই। দেশ কোনো মগের মুল্লুক না। ফলে কাউকেই যা ইচ্ছা তার করতে দেওয়া হবে না।
পীর সাহেব চরমোনাই প্রত্যয় নিয়ে বলেন, এই দেশ আমাদের। এই দেশ গড়ার দায়িত্বও আমাদের। তাই গত জুলাইয়ের প্রত্যয়ে নতুন করে কোনো চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস ও তাঁবেদারকে মাথা উঁচু করতে দেওয়া হবে না। সবাই মিলে দেশ থেকে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসকে চিরতরে উৎখাতে কাজ করে যেতে হবে। গত ৫ আগস্ট নতুন সম্ভবনা তৈরি করেছে। এটা নষ্ট করা যাবে না। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমরা পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনায় দেশের সব নাগরিকের মতামতকে মূল্যায়ন করে জাতীয় সরকার গঠন করে দেশকে সুন্দর করতে চাই।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা ইমতেয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্মমহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।
বিশেষ বক্তা হিসেবে ছিলেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আরিফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক কেএম শরীয়াতুল্লাহ, ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আবুল কাশেম, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতী রেজাউল করীম আবরার, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুনতাসির আহমাদ।