তিন বন্ধুর সবাই সৌদিপ্রবাসী। কয়েক মাস আগে ছুটিতে দেশে এসেছিলেন তারা। আবার একসঙ্গেই সৌদি ফেরার পরিকল্পনা ছিল। তবে আর সৌদি ফেরা হবে না তাদের।
রোববার (৩ আগস্ট) বিকেলে তারা একই মোটরসাইকেলে বেড়াতে বের হন। তবে যাত্রাপথে এক সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনজনই। তাদের আর ফেরা হল না প্রবাসে। হৃদয় বিদারক এ ঘটনার পর ওই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এই তিন বন্ধু হলেন- লোকমান হোসেন (২৯), তুহিন হাসান (২৮) ও সুমন হোসেন (২৮)। তাদের দুজনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর এবং একজনের সরাইল উপজেলায় গ্রামের বাড়ি।
তাদের মধ্যে লোকমান ও তুহিন সদর উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের মৈন্দ গ্রামের বাসিন্দা। সুমনের বাড়ি সরাইলের নোয়াগাঁও ইউনিয়নের বাড়িউড়া গ্রামে। নিহত এই তিন বন্ধুর মধ্যে লোকমান এবার ছুটিতে এসে বিয়ে করেছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, রোববার বিকেলে বিজয়নগর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রামপুর এলাকায় দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে ৩ জনই সৌদি আরব প্রবাসী।
জানা যায়, রোববার একটি মোটরসাইকেলে করে তিন বন্ধু— সুমন, লোকমান ও তুহিন বেড়াতে যাচ্ছিলেন চান্দুরা এলাকায়। অন্যদিকে, বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন বিজয়নগরের আকরাম হোসেন ও রংপুরের মনিরুজ্জামান। হঠাৎ দুই মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এমন সময় পেছন থেকে দ্রুতগতির সিএনজিচালিত অটোরিকশা দুই মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিন বন্ধুসহ ৪ জন এবং হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে মারা যায় আরেকজন। তিন বন্ধু একসঙ্গে কাজ করতেন সৌদি আরবে। ছুটি কাটিয়ে ১০-১৫ দিনের মধ্যেই ফেরার কথা ছিল তাদের। লোকমান মাত্র ১৭ দিন আগে বিয়ে করেছেন। ওই তিন প্রবাসীর পরিবারের সদস্যরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
সরাইলের বাড়িউড়া গ্রামের স্থানীয়রা বলেন, ওরা সব সময় একসঙ্গেই চলাফেরা করত। বিদেশেও একসঙ্গে থাকত, দেশে এসেও একসঙ্গে ঘোরাঘুরি করত। আজ একসঙ্গে না ফেরার দেশে চলে গেল। এটা মেনে নিতে পারছে না কেউ।
দুর্ঘটনার দিন খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চারজনের মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়। আহত কয়েকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এর মধ্যে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেওয়ার সময় একজন নিহত হন।