ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যে ‘সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতির’ জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে তুরস্ক। এছাড়া তুরস্ক ইরানের সঙ্গে সীমান্তের নিরাপত্তা বাড়িয়েছে দেশটি।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি গোপন সূত্রের বরাতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, ইতোমধ্যে তুরস্ক-ইরান সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ইরান থেকে তুরস্কে শরণার্থীদের ‘অস্বাভাবিক’ প্রবাহ দেখা যায়নি।
রয়টার্সকে একটি সূত্র জানিয়েছে, তুরস্ক স্থানীয়ভাবে বহুস্তর বিশিষ্ট উৎপাদিত রাডার ও অস্ত্রব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্য দিয়ে সমন্বিত বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তৈরি করছে দেশটি; যেন সম্ভাব্য যুদ্ধ প্রস্তুতি উচ্চ স্তরে রাখা।
সূত্র আরও জানায়, গত শুক্রবার ইরানে যখন ইসরায়েল আক্রমণ শুরু করে, তখন তুরস্কের ‘দ্রুত প্রতিক্রিয়াশীল’ বিমানগুলো আকাশে টহল দিয়েছিল। কারণ, যদি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান আকাশসীমা লঙ্ঘন করে, সঙ্গে সঙ্গে যেন জবাব দেওয়া যায়।
ইরান-ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর তুরস্ক এখন পর্যন্ত সরাসরি জড়ায়নি। তবে আঙ্কারা আগেই জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে যেকোনো যুদ্ধ তাদের নিরাপত্তা ও অর্থনীতিকে প্রভাবিত করতে পারে। এ কারণে সীমান্ত নজরদারি ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে।
ন্যাটো সদস্য তুরস্ক ইরানের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। দুই দেশের মধ্যে প্রায় ৫০০ কিলোমিটারের স্থল সীমান্ত রয়েছে। সিরিয়াসহ বিভিন্ন ইস্যুতে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই শক্তির মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকলেও তারা বাণিজ্যিক অংশীদার। বিশেষ করে ইরানের প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেলের উপর তুরস্ক নির্ভরশীল। এছাড়া উভয় দেশই ইসরাইলের কিছু নীতির বিরোধী এবং ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করে।
চলমান উত্তেজনায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন। এই যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির প্রতিনের সঙ্গে ফোনে আলোচনা করেছেন।
বুধবার (১৮ জুন) তিনি বলেন, ইসরাইলের অবৈধ হামলা থেকে ইরান নিজেদের রক্ষা করছে। ইরানে ইসরাইলের হামলাকে তিনি 'রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ' বলে উল্লেখ করেন।
পার্লামেন্টে ক্ষমতাসীন একে পার্টির সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে পরমাণু আলোচনা শেষ হওয়ার অপেক্ষা না করেই ইসরাইল তুরস্কের প্রতিবেশী ইরানে হামলা চালিয়েছে।
তুরস্ক কূটনৈতিকভাবে সংকটের সমাধান দেখতে চায় এবং আঙ্কারা গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে পারে বলেও জানান রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।