37458

06/20/2025 আবারও হাসিনা মার্কা নির্বাচন হলে জনগণ প্রতিহত করবে: রফিকুল ইসলাম

আবারও হাসিনা মার্কা নির্বাচন হলে জনগণ প্রতিহত করবে: রফিকুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯ জুন ২০২৫ ১৮:৪৯

দুর্নীতি, চাঁদাবাজ, দখলবাজমুক্ত নেতৃত্বের জন্য দেশের মানুষ জামায়াতকে ক্ষমতায় দেখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।

তিনি বলেছেন, মানুষ এখন সৎ, যোগ্য, দুর্নীতিমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত নেতৃত্ব চায়। বাংলাদেশে আবারও হাসিনা মার্কা কোনো নির্বাচন হলে জনগণ সেটি প্রতিহত করবে।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ঢাকা-৮ আসনে কেন্দ্রভিত্তিক জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, জামায়াতে ইসলামী সেই সৎ, যোগ্য, দক্ষ, দুর্নীতিমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত নেতৃত্ব জাতিকে উপহার দিতে প্রস্তুত। জনগণ সুযোগ দিলে, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্রে রূপ দেবে। এমন একটি রাষ্ট্র জাতিকে উপহার দেওয়া হবে যেখানে কোনো দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখলবাজি থাকবে না। কোনো বৈষম্য থাকবে না। দলমত, জাতি-গোষ্ঠী, ধর্ম-বর্ণের কোনো বিভেদ থাকবে না। সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরুদের কোনো বৈষম্য থাকবে না। মানুষ হিসেবে সবাই দেশের সম্মানিত ও গর্বিত নাগরিক হবে। নতুন বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে দেশের প্রতিটি মানুষ সমানভাবে অংশগ্রহণ করতে পারবে।

তিনি বলেন, ২০০৮ সালের ৯ম সংসদ নির্বাচন ছিল ত্রিমুখী ষড়যন্ত্রের নির্বাচন। ওই নির্বাচনে ভারত-মঈন উদ্দিন-ফখরুদ্দিন যৌথ সমঝোতার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতার মসনদে বসিয়েছে। পরবর্তীতে সেই প্রতিদান হিসেবে আওয়ামী লীগ ভারতের সেবাদাস সরকারের ভূমিকা পালন করে। একই ধারাবাহিকতায় দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করেছে আওয়ামী লীগ। কখনো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, কখনো দিনের ভোটে রাতে আবার কখনো ডামি নির্বাচন দিয়ে তারা সরকার গঠন করেছে।

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, হাসিনা মার্কা কোনো নির্বাচন এ দেশে আবারও হলে জনগণ সেটি প্রতিহত করবে। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন কোনো সমঝোতার নির্বাচন হলে জনগণ সেটি মেনে নেবে না। ছাত্র-জনতার রক্তে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে আর কোনো নাটকীয় নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসররা চাচ্ছে যেনতেন একটি নির্বাচন দিয়ে তাদেরকে মদদ দেওয়া কোনো দলকে ক্ষমতায় বসিয়ে আবারো ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে। সেজন্য দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে। যে কোনো ধরনের অপশক্তি বা ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জামায়াতে ইসলামীর প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী শত প্রতিকূলতার মাঝেও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজপথে আন্দোলন চালিয়েছে। এক মুহূর্তের জন্যও জামায়াতে ইসলামী রাজপথ থেকে সরে যায়নি। শুধু আন্দোলন সংগ্রামই নয়, জামায়াতে ইসলামী জনগণের যে কোনো প্রয়োজনে দুর্যোগে দল মত, ধর্ম-বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সব মানুষের পাশে ছিল, আছে এবং থাকবে।

তিনি আরও বলেন, জামায়াতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম দেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছে। আদালত রায়ে উল্লেখ করেছে, এটিএম আজহারুল ইসলাম ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছিল। তাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এটিএম আজহারুল ইসলামকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। আদালতের এই রায়ে প্রমাণিত হয়েছে, জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিচারিক হত্যা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সাজানো সব অভিযোগ মিথ্যা।

তিনি দাবি করে বলেন, জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতা কিংবা একজন কর্মীও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেনি। বরং আওয়ামী লীগ দলগতভাবে পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। তারা শুধু জুলাই-আগস্টে গণহত্যা চালিয়েছে তা নয়, তারা ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিটি দিন গণহত্যা চালিয়েছে।

দলটির কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি, ঢাকা-৮ আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পরিচালক শামছুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব শাহীন আহমদ খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও শাহজাহানপুর পূর্ব থানা আমির শরীফুল ইসলাম।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]