পবিত্র কোরআনে কিছু মানুষকে গাধার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। এদের মধ্যে ইহুদি জাতিও রয়েছে। ইহুদিদের মধ্যে যারা তৎকালীন যুগে তাওরাত পড়েও সেই অনুসারে আমল করে না তাদের নিন্দা করে তাদের গাধার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন—
যাদের তাওরাত দেওয়া হয়েছিল কিন্তু তারা তা যথাযথভাবে বহন করেনি তাদের দৃষ্টান্ত হলো পুস্তক বহনকারী গাধার মতো, ওই সম্প্রদায়ের দৃষ্টান্ত কতই না নিকৃষ্ট যারা আল্লাহর নিদর্শন অস্বীকার করে।’ (সূরা জুমুআ, আয়াত: ৫)
কোরআনের এ আয়াতাংশের দুটি অর্থ। একটি সাধারণ অর্থ এবং অপরটি বিশেষ অর্থ। সাধারণ অর্থ হলো—
ইসলাম আগমনের আগে যাদের ওপর তাওরাতের জ্ঞান অর্জন, তদনুযায়ী আমল এবং তাওরাত অনুসারে দুনিয়াকে পথপ্রদর্শনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল, তারা তাদের এ দায়িত্ব বুঝেনি এবং তার হকও আদায় করেনি।
বিশেষ অর্থ হলো— ইসলাম আগমনের আগে তাওরাতের ধারক ও বাহক গোষ্ঠী হওয়ার কারণে যাদের কাজ ছিল সবার আগে অগ্রসর হয়ে সেই রাসূলকে সাহায্য-সহযোগিতা করা যার আগমনের সুসংবাদ তাওরাতে স্পষ্ট ভাষায় দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তারাই তার সবচেয়ে বেশী শক্রতা ও বিরোধিতা করেছে এবং তাওরাতের শিক্ষার দাবী পূরণ করেনি।
পার্থিব জাঁকজমক ও ধনৈশ্বর্য তাদেরকে তাওরাত থেকে বিমুখ করে রেখেছে। ফলে তারা তাওরাতের পণ্ডিত হওয়া সত্বেও তাওরাতের নির্দেশাবলী বাস্তবায়নের দিক দিয়ে সম্পূর্ণ মুর্খ ও অনভিক্তের পর্যায়ে চলে এসেছে।
আলোচ্য আয়াতে তাদের নিন্দা করে বলা হয়েছে যে, তাদের দৃষ্টান্ত হচ্ছে গর্দভ, যার পিঠে জ্ঞান-বিজ্ঞানের বৃহদাকার গ্রন্থ চাপিয়ে দেয়া হয়। এই গর্দভ সেই বোঝা বহন তো করে, কিন্তু তার বিষয়বস্তুর কোন খবর রাখে না এবং তাতে তার কোন উপকার হয় না। ইহুদিদের অবস্থাও এমন।
তারা পার্থিব সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য অর্জনের জন্যে তাওরাতকে বহন করে এবং এর মাধ্যমে জনগণের মধ্যে জাঁকজমক ও প্রতিপত্তি লাভ করতে চায়, কিন্তু এর দিকনির্দেশ দ্বারা কোন উপকার লাভ করে না।