জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, আহত ৪
প্রকাশিত:
২৭ আগস্ট ২০২৫ ১৭:৪৩
আপডেট:
২৭ আগস্ট ২০২৫ ১৮:২৬
রাজধানীর তোপখানা সড়কে জাতীয় প্রেস ক্লাবের পাশে পুলিশ বক্সের সামনে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। মারধরের শিকার সাংবাদিকরা হলেন- শিমুল পারভেজ, নোমান ও বাংলাভিশনের কেফায়েত শাকিল। এছাড়াও আহত হয়েছেন আলম শরীফ নামে এক কনটেন্ট ক্রিয়েটর। আহত শিমুল ও নোমান নিউনেশন পত্রিকায় অপরাধ বিভাগে কাজ করেন। তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার এ ঘটনা ঘটে।
হতাহতদের হাসপাতালে দেখতে যাওয়া সহকর্মী সাংবাদিক ইয়াসির তন্ময় জানান, নিউনেশনের শিমুল পারভেজ, নোমান মোশারফ মোটরসাইকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির দিকে আসছিল। এজন্য তারা জাতীয় প্রেসক্লাবের সড়ক ধরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে আসার সময় একটি মাইক্রোবাস এসে তাদের সামনে দাঁড়ায়।
এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা শিমুল পারভেজ সেই মাইক্রো চালককে গাড়ি একটু পিছিয়ে নিতে বলেন। কিন্তু গাড়ি না সরিয়ে উল্টো তার গাড়ির ভেতর চালক ও যাত্রীরা তাদের গালাগালি করতে থাকেন। একপর্যায়ে প্রাইভেটকারের চালক গাড়ি থেকেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে শিমুলকে আঘাত করার চেষ্টা করলে তিনি তার হাত দিয়ে ঠেকান। কিন্তু তবুও হাতে আঘাত লাগে এবং তার হাত কেটে গিয়ে রক্তাক্ত হয়।
পরে চালক ও মাইক্রোবাসে থাকা ব্যক্তিরা নেমে এসে সাংবাদিকদের বেধড়ক মারধর করতে থাকেন। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ চলতে থাকে। সেই দৃশ্য দেখে পাশে থাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের গেটের পাশে থাকা ডিউটিরত পুলিশ সদস্যরা দেখতে পান। এসময় জয়নাল নামে এক পুলিশ সদস্যের নেতৃত্বে অন্য পুলিশ সদস্যরা ছুটে যান। তারা গিয়ে অন্যদের ছত্রভঙ্গ করে দেন। কিন্তু পরে তারা তিন সাংবাদিকের ওপর চড়াও হন। পারভেজ, নোমান ও শাকিল তাদের সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর আরও বেশি করে মারধর করেন পুলিশ সদস্যরা। পরে তাদেরকে পুলিশ বক্সে নিয়ে আরও কয়েক দফা শারীরিক নির্যাতন করে।
আহত শিমুল পারভেজ জানান, মাইক্রো চালক তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এরপর মাইক্রোবাসের যাত্রীরা নেমেও আরেক দফা হামলা করে। কিন্তু সেই দৃশ্য পুলিশ কাছ থেকে দেখলেও সাহায্যে এগিয়ে না এসে উল্টো আমাদের মারধর করেছে। পরিচয় দেওয়ার পরও তারা দফায় দফায় পুলিশ বক্সে নিয়ে নির্যাতন করেছে।
এ ঘটনায় আহত কেফায়েত শাকিল বলেন, তাদের পুলিশ নির্যাতন করছিলেন। আমি তাদের বাঁচাতে গিয়ে আমার ওপরও হামলা করা হয়। আহত ইউটিউবার শরীফ আলম বলেন, পুলিশ যখন তাদের হাসপাতালে না নিয়ে মারধর করছিল এ দৃশ্য ধারণ করায় আমাকেও মারধর করেছে।
এ ঘটনায় ডিএমপির রমনার ডিসি মাসুদ আলমকে দফায় দফায় কল করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনার পর পুলিশ বক্সের দায়িত্বরত কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভেতরে ডেকে নেওয়া হয়। পরে তাদের ঊর্ধ্বতনরা আসেন। সাংবাদিকরা তাদের অপসারণ ও বহিস্কার দাবি করেছেন। তবে ডিসি আশ্বাস দিয়েছেন তাদের সেখান থেকে অপসারণ করা হবে।
এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সাংবাদিক শিমুল পারভেজকে কয়েকজন ধরে মারধর করছে। তাদের মধ্যে একজন গোলাপী রঙের শার্ট পরিহিত ও পরণে কালো প্যান্ট। পাশে এক বয়স্কও মারছে। এ দৃশ্য দেখে পুলিশ সদস্যরা ছুটে এলেন। তারা কিছু না বুঝে উল্টো আহত নোমানকে বেধড়ক মারধর করছে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: