জুলাই সনদ সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে গণভোট দাবি
প্রকাশিত:
২৩ আগস্ট ২০২৫ ২১:৪২
আপডেট:
২৪ আগস্ট ২০২৫ ০১:৪৭

জুলাই সনদকে সাংবিধানিক বৈধতা দিতে গণভোট আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ ও রাজনীতিবিদরা।
শনিবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সেন্টার ফর সিভিল সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজিত ‘গণভোট না অর্ডিনেন্স: প্রসঙ্গ জুলাই সনদ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ দাবি জানান।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এফ এম আব্দুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘এত প্রাণহানির বিনিময়ে হলেও জুলাই আন্দোলনকে বিপ্লবে রূপান্তরিত করা যায়নি, যা দুঃখজনক। জুলাই ঘোষণাপত্রে সব রাজনৈতিক দল স্বাক্ষর করলে সনদের কাজ শুরু করা সহজ হবে।’তিনি জুলাই সনদকে সংবিধানের চতুর্থ তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন।
কী-নোট স্পিকার ব্যারিস্টার এস এম শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকেই জনগণ প্রতারিত হয়ে আসছে। তাই জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি মজবুত না হলে ভবিষ্যতে আবারও প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
আলোচনায় জামায়াতে ইসলামীর নেতা অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘সরকারের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা থাকলে সনদকে শহীদ-আহত ও জনসাধারণের পক্ষ থেকে সাংবিধানিকভাবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।’
ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘জুলাই বিপ্লব মূলত ছাত্রদের আন্দোলনের ফসল। তাই ফ্যাসিবাদের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে সনদের পক্ষে গণভোট জরুরি।’
ব্যারিস্টার ইমরান আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, ‘সনদের আইনগত ভিত্তি, বৈধতা ও জনসমর্থন নিশ্চিত করতে হবে।’
গুমের শিকার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুল্লাহিল আমান আযমী মন্তব্য করেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি মানুষের আস্থা বারবার ভেঙেছে। তাই সনদের আইনি বৈধতা না থাকলে নির্বাচিত সরকার একে মূল্যায়ন নাও করতে পারে।’
আলোচনায় শরিফ ওসমান হাদী বলেন, ‘সনদ প্রণয়নের সময় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চায়ের আড্ডায় বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অথচ শহীদ ও আহতদের মতামত নেওয়া হয়নি।’
ব্যারিস্টার সাজ্জাদ আলী মিশর ও শ্রীলঙ্কার উদাহরণ টেনে বলেন, ‘গণতন্ত্রের নামে দলগুলো ক্ষমতায় গিয়ে রাজতন্ত্রের পথে হাঁটে। তাই জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি অপরিহার্য।’
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘৫ আগস্ট ঘোষিত দলিলটি জুলাই সনদ নয়, বরং ঘোষণাপত্র। সনদের যথাযথ রূপ দিতে হলে গণভোট আয়োজন করে তা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, ‘সম্মিলিত ঐক্যের মাধ্যমে সনদের গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে হবে।’
ব্যারিস্টার শারমিন জাহান মিলি ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত থাকলেই যথেষ্ট, অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমেও সনদকে বৈধতা দেওয়া সম্ভব।’
অন্যদিকে গণধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান জানান, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন মানুষ গণভোট বোঝে না। তার এ বক্তব্য থেকে গণভোট আয়োজনের অনীহা স্পষ্ট। তবে আমরা গুরুত্ব তুলে ধরে গণভোটের দাবি জোরালো করতে পারি।’
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: