পিত্তথলিতে পাথর হয় কেন, জানুন প্রতিরোধের উপায়
প্রকাশিত:
৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:৫৯
আপডেট:
৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:২০

শরীরের লিভারের নিচে থাকা ছোট্ট একটি থলিকে বলা হয় পিত্তথলি। লিভারের তৈরি রস জমা করে রাখে এটি। এই পিত্তরস হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। বিশেষ করে চর্বিযুক্ত খাবার হজম করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে এটি। কোনো কারণে যদি এই পিত্তরস জমে কঠিন আকার ধারণ করে তখন পাথর সৃষ্টি হয়। একে গলব্লাডারের স্টোন বা পিত্তথলির পাথর বলে।
পিত্তথলিতে পাথর হয় কেন?
পিত্তরসে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল হলে এটি জমে পাথর তৈরি করতে পারে। আবার যদি কোনো কারণে পিত্তরস ঠিকভাবে প্রবাহিত না হয়, তাহলে এটি জমেও পাথর হতে পারে।
লিভারের রক্তে থাকে বিলিরুবিন নামক পদার্থ। বিভিন্ন কারণে এটি বেড়ে গেলে পিত্তরসেও বিলিরুবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা পাথরের সৃষ্টি করতে পারে। যেসব খাবারে বেশি চর্বি থাকে, তা হজম করতে বেশি পরিমাণ পিত্তরসের প্রয়োজন হয়। তাই এই রস বেশি জমে পাথরের কারণ হতে পারে।
দৈনন্দিন কিছু অভ্যাস পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। নিয়মিত ব্যায়াম না করা, অতিরিক্ত ওজন এবং ফাস্টফুড খাওয়ার অভ্যাস এর মধ্যে অন্যতম।
পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ
তীব্র পেটে ব্যথা (বিশেষত ডান দিকের উপরিভাগে)
পেটে ফোলাভাব ও গ্যাস হওয়া
বমি ভাব কিংবা বমি হওয়া
পিঠে ব্যথা (বিশেষত ডান কাঁধের নিচে)
ত্বকে হলুদ ভাব
চোখের সাদা অংশে হলদেটে ভাব
পিত্তথলিতে পাথর হওয়া প্রতিরোধের উপায়
রোজকার জীবনযাপন আর খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনার মাধ্যমে পিত্তথলিতে পাথর হওয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব। চলুন এসম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই-
১. সুষম খাদ্যাভ্যাস:
পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমাতে চর্বিজাতীয় খাবার কম খাওয়ার চেষ্টা করুন। খাদ্যতালিকায় রাখুন ফল, সবজি ও আঁশযুক্ত খাবার। বিশেষ করে, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডযুক্ত খাবার খান। এমন খাবার খেলে পিত্তরস সহজে গলে।
২. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা:
অতিরিক্ত ওজন পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলুন।
৩. পর্যাপ্ত পানি পান:
দৈনিক পর্যাপ্ত পানি পান করুন। এতে শরীরের বিভিন্ন অংশের রসের প্রবাহ ঠিক থাকবে। ফলে পিত্তরস জমাট বাঁধবে না।
৪. সীমিত পরিমাণ খাবার:
একবারে অনেকবেশি খাবার না খেয়ে অল্প অল্প খাবার খান। এতে পিত্তরসের সঠিক প্রবাহ বজায় থাকবে। কমবে পাথর হওয়ার ঝুঁকি।
৫. নিয়মিত ব্যায়াম:
নিয়মিত শরীরচর্চা করলে শরীরের মেটাবলিজম বাড়ে। পিত্তথলির পাথর প্রতিরোধে নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
৬. মদ্যপান এবং ধূমপান পরিহার:
মদ্যপান ও ধূমপানের মতো অভ্যাসের কারণে পিত্তথলিতে পাথর তৈরি হতে পারে। তাই এসব অভ্যাস ছাড়ুন।
পিত্তথলিতে পাথরের চিকিৎসা পদ্ধতি:
পিত্তথলিতে পাথর ধরা পড়লে চিকিৎসকের পরামর্শে অস্ত্রোপচার বা ওষুধ প্রয়োগ এটি অপসারণ করা যায়। তবে প্রতিরোধের জন্য সচেতন হওয়া জরুরি।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: